• বাংলা বলায় হেনস্থা, ফিরলেন বঙ্গ-শ্রমিক
    এই সময় | ৩১ আগস্ট ২০২৫
  • ফোনে স্ত্রীর সঙ্গে বাংলায় কথা বলছিলেন। অপরাধ ছিল সেটাই। তার পরেই কর্মস্থলে প্রবল হেনস্থা। বাধ্য হয়ে কাজ ছেড়ে নিজের গ্রামেই ফিরে এসেছেন বাংলার এক পরিযায়ী শ্রমিক।

    শুক্রবার কাশীপুরের বাড়িতে পৌঁছে এমনই জানিয়েছেন সোমনাথ ধীবর। বেশ কয়েক বছর ধরেই ভিন রাজ্যে কাজ করছেন তিনি। দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময়ে দুর্ঘটনায় বাবার মৃত্যুর পরে পরিবারের দায়িত্ব নিতে হয়েছিল তাঁকে। সোমনাথের কথায়, '২০১৭ সাল থেকে ভিন রাজ্যে কাজ করছি। কখনও এমন পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়নি। কিন্তু হায়দরাবাদে আমাকে যে অবস্থায় পড়তে হয়েছে, তা ভয় ধরিয়ে দেওয়ার মতো।'

    আগে সোমনাথ কাজ করতেন কনটিকে। সম্প্রতি এক পরিচিতর সূত্র ধরে তিনি হায়দরাবাদে কাজ করতে গিয়েছিলেন। সেখানে বেতনও বেশি। মনসা পুজো উপলক্ষে বাড়ি ফিরেছিলেন সোমনাথ, তার পরে ২১ অগস্ট রওনা হন হায়দরাবাদে, পৌঁছন ২৪ অগস্ট। নতুন একটি জায়গায় কাজে যোগ দেওয়ার কথা ছিল সোমনাথের। সেখানে নিজের জেলারই এক পরিচিতের সঙ্গে বাংলায় কথা বলছিলেন তিনি। পরে স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে বাংলায় কথা বলার পরে এক ব্যক্তি আচমকা এসে সোমনাথের জামার কলার চেপে ধরে হুমকি দিতে থাকে।

    সোমনাথের কথায়, 'আমি কোথা থেকে এসেছি জানার পরে প্রশ্ন করা হয়, কোন ভাষায় কথা বলছি। জবাব দিই, আমার বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলায়। তাই বাংলাতে কথা বলছি। এ-ও জানাই, আমার স্ত্রী হিন্দি জানেন। তার বাড়ি ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ জেলায়। কিন্তু ওরা কিছুই শুনতে চাইছিল না। আমার কাছে আধার কার্ডের ফোটোকপি ছিল। তা দেখালে সেটাও কেড়ে নেওয়া হয়। এর পরে ভয়ে সেখানে থাকতে পারিনি।'

    সঙ্গে টাকা না-থাকায় সোমনাথ তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক সৌমেন বেলথরিয়ার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন। তিনি এক হাজার টাকা পাঠানোর পরে তিনি টিকিট কেটে বাড়ি ফিরে আসেন। একন কী করবেন, জানা নেই সোমনাথের।

    সৌমেন বলেন, 'ওখানে কী ঘটেছিল, তা বলতে পারব না। তবে সোমনাথ যখন আমাকে ফোন করেছিল, খুব হাঁপাচ্ছিল। প্রশ্ন করায় জানতে পারি, বাংলায় কথা বলার জন্য ওকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। সোমনাথ বাড়ি ফিরে আসার অনুরোধ করে। আমাদের প্রশ্ন, দেশের নাগরিক তো যে কোনও রাজ্যে কাজ করতে পারেন, বাংলায় কথা বললে কেন এমন হুমকির শিকার হতে হবে?

  • Link to this news (এই সময়)