ভিতরে চলছিল জন্মদিনের পার্টি, দরজার বাইরে গড়িয়ে এল চাপ রক্ত, দিল্লিতে 'বার্থডে-গিফট' নিয়ে যা ঘটে গেল
আজকাল | ৩১ আগস্ট ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: ছেলের জন্মদিনের উপহার। পছন্দ হয়নি বাবার। তা নিয়েই তুমুল বাক-বিতণ্ডা। পরিণতি হল ভয়াবহ। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রের খবর, ছেলের জন্মদিনের উপহার নিয়ে বাক-বিতণ্ডা এতটাই বাড়ে, স্ত্রী এবং শাশুড়িকে খুন করেছেন দিল্লির রোহিণীর এক ব্যক্তি।
জানা গিয়েছে, দুই মৃতার নাম কুসুম সিংহ এবং প্রিয়া সেহগল। কুসুমের বয়স ৬৩। প্রিয়ার বয়স ৩৪। প্রয়ার ছেলের জন্মদিন উপলক্ষেই মেয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন কুসুম। এতদূর পর্যন্ত সব ঠিক ছিল। ওই জন্মদিনের অনুষ্ঠানেই উপহার নিয়ে বিবাদ হয় প্রিয়া এবং তাঁর স্বামী যোগেশের। পরিস্থিতি সামাল দিতেই সেখানে থেকে গিয়েছিলেন কুসুমও। তবে কুসুমের ছেলে মেঘ, বয়স ৩০, জানিয়েছেন, জন্মদিন পর্ব মিটে যাওয়ার পর, তিনি মা'কে ফোন করলেও, ফোনে পাননি। তারপরেই হাজিন হন দিদির বাড়িতে। দেখেন, বাড়ি বাইরে থেকে তালাবন্ধ। দরজার বাইরে গড়িয়ে এসেছে রক্তের দাগ।
জানা গিয়েছে, মেঘের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ইতিমধ্যেই যোগেশকে গ্রেপ্তার করেছে। খুনে ব্যবহৃত কাঁচিও উদ্ধার করেছে বলে খবর সূত্রের। পুলিশ সূত্রে খবর, মেঘ, কুসুমের ছেলে, পুলিশকে জানিয়েছেন, ২৮ আগস্ট প্রিয়ার ছেলের জন্মদিন উপলক্ষে কুসুম প্রিয়ার বাড়ি গিয়েছিলেন। মেয়ে-জামাইয়ের বিবাদের কারণে তিনি রয়ে গিয়েছিলেন সেখানেই। ৩০ আগস্ট মেঘ বার বার কুসুমকে ফোন করেও পাননি এমনকি ওই পরিবারের কারও সঙ্গেই যোগাযোগ করতে চাননি।
পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে তিনি তৎক্ষণাৎ হাজির হন প্রিয়ার বাড়ির সামনে। পুলিশকে ওই যুবক জানিয়েছেন, সেখানে পৌঁছে দেখেন, দরজা বাইরে থেকে বন্ধ। দরজার বাইরে গড়াচ্ছে রক্ত। তিনি তৎক্ষণাৎ ফোন করেন পুলিশে। পরিবারের অন্যান্যদের খবর দেন। ঘরের দরজা ভেঙে দেখেন, ঘরের ভিতর, মেঝেতে রক্তের মধ্যে ভাসছেন প্রিয়া এবং কুসুম। মেঘের অভিযোগ, যোগেশ, প্রয়ার স্বামী, বর্তমানে যিনি বেকার ছিলেন, তিনিই দু' জনকে খুন করে, ছেলে সঙ্গে নিয়ে অন্যত্র পালিয়েছেন।
যোগেশকে কেএনকে মার্গ পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে এবং ঘটনাস্থল থেকে তার রক্তমাখা পোশাক এবং অপরাধে ব্যবহৃত এক জোড়া কাঁচি উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের মতে, পারিবারিক বিরোধের কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে। ক্রাইম টিম এবং ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির (এফএসএল) দলকে ঘটনাস্থলে ডাকা হয়েছে। আরও তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রিয়ার ভাই হিমালয় সর্বভারতীয় সংবাদসংস্থায় ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, 'আমার মা একদিন আগে আমার বোনের বাড়িতে গিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন যে তিনি পরের দিন ফিরে আসবেন। আমরা যখন তাঁকে ফোন করি, তখন তিনি বলেন যে আমার বোন এবং তাঁর স্বামীর মধ্যে ঝগড়া চলছে এবং তিনি বিষয়টি সমাধানে সাহায্য করবেন এবং তারপর ফিরে আসবেন। কিন্তু তিনি আর ফিরে আসেননি। আমরা পরের দিন সকাল ১১:০০ টা, ১১:৩০ টা এবং আবার ১২ টায় তাকে ফোন করতে থাকি, কিন্তু তিনি বা আমার বোন কেউই ফোন ধরেননি। আমরা ভেবেছিলাম হয়তো ঘুমোচ্ছেন বলে ফোন ধরতে পারেননি কোনও কারণে। আমরা ঠিক করি, বিকেলে আমরা সেখানে যাব। বিকেলে বাড়ির কাছে পোঁছতেই আমরা রক্তের দাগ দেখতে পাই।'
তিনি আরও জানান, 'আমরা বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তাঁদের বাড়িতে গিয়েছিলাম।' যোগেশ এবং প্রিয়ার ১৭ বছরের দাম্পত্য জীবন বলেও জানা গিয়েছে।