• পুরীর জগন্নাথ-বলরাম-শুভদ্রার রথের চাকা এবার সংসদে! অনুমোদন অধ্যক্ষের ...
    আজকাল | ৩১ আগস্ট ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রভু জগন্নাথ, বলরাম এবং শুভদ্রার রথের তিনটি পবিত্র চাকা শীঘ্রই নয়াদিল্লির নতুন সংসদ ভবনে স্থান পেতে চলেছে। শ্রী জগন্নাথ মন্দির প্রশাসনের (এসজিটিএ) প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা। সংসদ সূত্রে খবর, নন্দিঘোষ (ভগবান জগন্নাথের রথ), দেবদলন (দেবী সুভদ্রার রথ) এবং দর্পদলন (ভগবান বলভদ্রের রথ) থেকে একটি করে চাকা সংসদ প্রাঙ্গণের ভিতরে স্থাপন করা হবে।

    ওড়িশার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের স্থায়ী প্রতীক হিসাবে রথের চাকাগুলি সংসদে স্থাপন করা হবে বলে জানা গিয়েছে।

    সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ শ্রী জগন্নাথ মন্দির প্রশাসনের (এসজিটিএ) প্রধান প্রশাসক অরবিন্দ পাধী এই উদ্যোগকে সমর্থন করার জন্য স্পিকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। পাধী লিখেছেন, 'এটি ওড়িশার জগন্নাথ ঐতিহ্য এবং দেশের সর্বোচ্চ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সাংস্কৃতিক সংযোগকে শক্তিশালী করবে'

    ওড়িশা সরকারের একজন ঊর্ধ্বতন আধিকারিক বলেছেন, "অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত যা সাংস্কৃতিক গর্ব এবং জাতীয় পরিচয় উভয়কেই তুলে ধরে।" 

    ওড়িশা বিধানসভা প্রাঙ্গণ এবং ভুবনেশ্বরের রাজ্য অতিথি ভবনে জগন্নাথ ও তাঁর বাকি দুই ভাই-বোনের রথের চাকা স্থাপন করা হয়েছে।

    এই সিদ্ধান্তে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সেবায়েতদের কাছ থেকে উৎসাহী প্রতিক্রিয়া এসেছে। এটিকে গর্বের বিষয় বলে অভিহিত করে, প্রবীণ পরিচারক বিনায়ক দাস মহাপাত্র বলেন, "সংসদ প্রাঙ্গণে মহাপ্রভুর রথের চাকা থাকায়, জগন্নাথ সংস্কৃতি আরও ব্যাপক স্বীকৃতি পাবে। সংসদ এমনিতেই একটি পবিত্র স্থান, সেখানে ঠাঁই হচ্ছে ওড়িশার জীবন্ত ঐতিহ্যের প্রতীক।"

    আরেকজন সেবায়েত অনাথ দাস মহাপাত্র জানান, পূর্বে ওড়িশা জুড়ে মন্দির এবং মঠগুলিতে বিস্তৃত আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রথের চাকা স্থাপন করা হয়েছে। তিনি বলেন, "যেহেতু চাকাগুলিকে স্বয়ং ভগবানের অংশ হিসাবে বিবেচনা করা হয়, তাই সেগুলি যেখানেই রাখা হোক না কেন, একই পবিত্রতার সঙ্গে আচরণ করা উচিত। সংসদেও সেই ঐতিহ্য পালন করা উচিত।"

    চাকার পবিত্রতা এই বিশ্বাস থেকে উদ্ভূত যে, নয় দিনের রথযাত্রার সময় ভগবান জগন্নাথ স্বয়ং তাদের উপর চড়েন। ভক্তরা প্রায়শই তাদের বাড়িতে রথ কাঠের ছোট ছোট টুকরো রাখেন, বিশ্বাস করেন যে ওই কাঠে ঐশ্বরিক আশীর্বাদ রয়েছে, যা পারিবারিক সমৃদ্ধি বয়ে আনবে।

    প্রতি বছর, রথযাত্রার জন্য তিনটি বিশাল কাঠের রথ নতুন করে তৈরি করা হয়। ১৬ চাকা বিশিষ্ট নন্দিঘোষ, ১৪ চাকা বিশিষ্ট তালধ্বজ এবং ১২ চাকা বিশিষ্ট দেবদলন। প্রতিটি রথ সাত ফুট উঁচু। পুরীর রথ খালায় (রথের কারখানা) বিশ্বকর্মা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী মহারাণা ছুতোররা রথের কাজ করেন। তিনটি রথ নির্মাণের জন্য, বার্ষিক প্রায় ৮৬৫ টন কাঠ ব্যবহার করা হয়। এই কাঠ- খুরদা, নয়াগড়, দাসপল্লা, ভঞ্জনগর এবং ঝুমুসরের বন থেকে সংগ্রহ করা হয়। রথ তৈরিতে ধৌরা, আসন, ফাসি এবং সিমিলির মতো কাঠ সাধারণত ব্যবহার করা হয়।

    ঐতিহ্য অনুসারে, উৎসব শেষ হওয়ার পরে, পুরানো রথগুলি ভেঙে ফেলা হয়। তবে রথের কাঠের কিছু অংশ ভক্তদের কাছে বিক্রি করা হয়, বাকি অংশ মন্দিরের রান্নাঘরে জ্বালানি হিসেবে মহাপ্রসাদ রান্না করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
  • Link to this news (আজকাল)