• আরও শীতল ভারত-মার্কিন সম্পর্ক, কোয়াড বৈঠকে ভারতে আসতে নারাজ ট্রাম্প...
    আজকাল | ৩১ আগস্ট ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: আরও শীতলতার দিকে এগোচ্ছে ভারত- মার্কিন সম্পর্ক। তেমনই ইঙ্গিত মিলল মার্কিন সংবাদমাধ্যম সূত্রে৷ চলতি বছরে কোয়াড বৈঠকে ভারতে আসতে নারাজ ট্রাম্প। জুন মাসে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁকে ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। সেই সময় তিনি বলেন সেই আমন্ত্রণ রক্ষা করতে আসবেন ভারতে। কিন্তু শুল্কযুদ্ধের মধ্যে অনেকটাই জটিল হয়েছে ভারত-মার্কিন কূটনৈতিক সম্পর্ক। আর সেই কারণেই সিদ্ধান্ত পূনর্বিবেচনা করছেন ট্রাম্প। 

    প্রসঙ্গত, কোয়াড চারটি দেশের একটি জোট। এতে ভারত ছাড়াও রয়েছে জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ভূ-রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে এই জোট প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং এই জোট দুর্বল হলে বাড়তে পারে চিনের রমরমা৷ মোদির চিন সফর এবং ট্রাম্পের ভারতে না আসা- দুটি ঘটনা মিলিয়ে অনেকেই দুইয়ে দুইয়ে চার করছেন। 

    মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। কারণ তাঁর অভিযোগ, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কিনে ইউক্রেনের যুদ্ধে অর্থ জোগান দিচ্ছে। এর আগে ভারতের উপর ২৫ শতাংশ পারস্পরিক শুল্ক আরোপ করেছিলেন ট্রাম্প। পরে তা আরও ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়।

    ট্রাম্প ৩১ জুলাই মন্তব্য করেছিলেন, 'ভারত রাশিয়ার সঙ্গে কী করবে তাতে আমার কিছু যায় আসে না। তারা তাদের মৃত অর্থনীতিকে এক সঙ্গে ধ্বংস করুক।'

    ১০ আগস্ট মোদি ট্রাম্পের ‘মৃত অর্থনীতি’ মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে বলেন যে ভারত বিশ্বের শীর্ষ তিনটি অর্থনীতির একটি হয়ে ওঠার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। FAZ মোদির এই মনোভাবকে ‘ক্ষুব্ধ’ বলে বর্ণনা করেছে। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি সাধারণত তাঁকে মার্কিন বাজারের উপর অন্যান্য দেশের নির্ভরতাকে পুঁজি করার সুযোগ করে দিয়েছিল। কিন্তু মোদি ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ‘এটি প্রতিরোধ করেছিলেন’, ভারতের অর্থনৈতিক স্বার্থের সঙ্গে আপস না করে ট্রাম্পের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন। 

    কিন্তু FAZ উল্লেখ করেছে যে এই পরিস্থিতির আশ্চর্যজনক উপাদান হল ট্রাম্পের বারবার মোদীকে রাজি করানোর প্রচেষ্টা। জার্মান সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “মোদিএখনও কথা বলতে রাজি না হওয়ার মাধ্যমে তাঁর ক্রোধের গভীরতা, পাশাপাশি তার সতর্কতাও প্রমাণিত হয়।”

    FAZ আরও উল্লেখ করেছে যে ভারতে ট্রাম্পের নির্মাণ প্রকল্পগুলিও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। দিল্লির কাছে, ট্রাম্প পরিবারের কোম্পানিটি তার নামে বিলাসবহুল টাওয়ার তৈরি করেছিল। FAZ জানিয়েছে, মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে বারো মিলিয়ন ইউরো মূল্যের ৩০০টি অ্যাপার্টমেন্ট একদিনেই বিক্রি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান সামরিক সংঘাতে ট্রাম্প যখন দাবি করলেন যে তিনি একাই যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করেছেন, তখন ভারতীয়দের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়।

    রিপোর্টে বলা হয়েছে, 'ট্রাম্প পাকিস্তানের সাথে তেলের মজুদ তৈরির ঘোষণা দেওয়ার পরেও পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি।' রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, 'ট্রাম্প ওভাল অফিসে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান অসীম মুনিরকে এক নৈশভোজে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়টিও ভারতে উস্কানিমূলক বলে মনে করেছে।' FAZ উল্লেখ করেছে যে নয়াদিল্লিতে পুরনো উত্তেজনা কমে আসছে। গত বছর শি'র সঙ্গে দেখা করার পর থেকে মোদি বলেছেন যে তিনি সর্বোপরি ‘সম্মান’ অনুভব করছেন।

    তিনি তিয়ানজিনে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন, যেখানে ট্রাম্প ভারতকে চিনের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।

    ভারতের বিদেশ মন্ত্রক (MEA) অনুসারে, রাষ্ট্রপতির অনুরোধে মোদি ১৭ জুন ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেন। কানাডায় G7 শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে তাদের দু’জনের দেখা হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু ট্রাম্প নির্ধারিত সময়ের আগেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসেন।

     
  • Link to this news (আজকাল)