শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: সংস্কারের কাজ শেষ। পুজো এবং পর্যটনের কথা মাথায় রেখে রবিবার থেকেই খুলে গেল তিস্তার উপরে গজলডোবা সেতু। গত ২৭ এপ্রিল শিলিগুড়ির সঙ্গে ডুয়ার্সের যোগাযোগের অন্যতম তিস্তার গজলডোবা সেতু বন্ধ করে সংস্কার কাজ শুরু করা হয়। সংস্কারের জন্য বরাদ্দ করা হয় ১ কোটি ২৪ লক্ষ টাকা। সময় বেঁধে দেওয়া হয় ১৪০ দিন।
জলপাইগুড়ি জেলায় তিস্তা নদীর উপর যোগাযোগের জন্য তিনটি সেতু রয়েছে। এরমধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গজলডোবা ব্যারেজের উপর এই সেতুটি। সেতুতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চাপ বাড়ে তিস্তার উপর অন্য দুটি ব্রিজ জলপাইগুড়ি ও সেবক সেতুর উপর। এতেই সমস্যায় পড়তে হয় পর্যটক এবং সাধারন মানুষকে। ঘুর পথে যাতায়াত করতে হয় তাদের। ক্ষতিগ্রস্ত হন স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও।
এদিকে পুজো আসছে। সব দিক চিন্তা করে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই রবিবার দুপুর থেকে খুলে দেওয়া হলো গজলডোবা সেতুপথ। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক এবং গজলডোবা উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান খগেশ্বর রায়। গজলডোবা সেতুর রাস্তা চালু হওয়ায় খুশি পর্যটক,ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে এলাকার বাসিন্দারা। তবে আপাতত ২৫ টন পর্যন্ত ওজনের গাড়ি চলাচল করতে পারবে এই সেতুর উপর দিয়ে। তার বেশি ওজন নিয়ে কোনও গাড়ি আপাতত চলাচল করতে পারবে না বলেই জানানো হয়েছে।
গত এপ্রিল মাসে জরুরি ভিত্তিতে উত্তরবঙ্গের গজলডোবায় তিস্তা ব্যারেজের সেতু বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন। তিস্তা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন। বৈঠক শেষে রাস্তা বন্ধ রাখার খবর জানানো হয় এপ্রিল মাসে। জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি কৃষ্ণা রায় বর্মন ২৭ এপ্রিল থেকে কাজ শুরুর কথা জানান। আশপাশের মানুষজনকে আগাম এই খবর জানাতে সংশ্লিষ্ট বিডিও এবং পঞ্চায়েত প্রধানদের প্রয়োজন পদক্ষেপ করতে বলা হয়।
নব্বইয়ের দশকে তিস্তা নদীর উপর গজলডোবা ব্যারেজ তৈরি হয়। বর্ষায় পাহাড়ের অতিরিক্ত জল ধরে রেখে বন্যা প্রতিরোধ এবং শীতের সময় সেচ খালের মাধ্যমে কৃষকদের জল সরবরাহ করাই এই প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য ছিল। সময়ের প্রয়োজনে তিস্তা নদীর ব্যারেজের উপরের সেতু পথ হয়ে উঠেছে শিলিগুড়ি এবং ডুয়ার্সের ওদলাবাড়ি ও সংলগ্ন এলাকার সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম পথ। এদিকে যানবাহনের চাপে দুর্বল হয়ে পড়েছে ব্যারেজের রাস্তা। তার উপর ২০২৩ সালে সিকিমের পাহাড়ে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের চাপও সহ্য করতে হয়েছে এই ব্যারেজকে। তাতে ব্যারেজের বেশ কিছু অংশে বর্ষার আগেই সংস্কার প্রয়োজন বলে সেই সময়ে জানানো হয়।