ঈশিতা খুনে গুজরাতে গ্রেফতার দেশরাজের মামা, ‘ব্যর্থ প্রেমিক’ ও ‘খুনি’ ভাগ্নেকে এখনও খুঁজে পায়নি কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশ
আনন্দবাজার | ৩১ আগস্ট ২০২৫
কৃষ্ণনগরে কলেজছাত্রী ঈশিতা মল্লিকের খুনে প্রথম গ্রেফতার! কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেন অভিযুক্ত দেশরাজ সিংহের মামা কুলদীপ সিংহ। পুলিশ সূত্রে খবর, গুজরাতের জামনগর থেকে তাঁকে ধরা হয়েছে। ‘প্রেমিকা’কে খুনের পর প্রথমে মামার সঙ্গেই যোগাযোগ করেছিলেন উত্তরপ্রদেশের যুবক দেশরাজ। মামা তাঁকে সাহায্যও করেন বলে খবর।
গত ২৫ অগস্ট দুপুরে কৃষ্ণনগরের বাড়িতে মাথায় তিনটি গুলি করে ঈশিতাকে খুন করা হয়। ওই ঘটনার পরে দেশরাজ উত্তরপ্রদেশের দেওরিয়ায় পৈতৃক বাড়িতে পালিয়ে যান বলে পুলিশের অনুমান। কিন্তু কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার একাধিক দল গত কয়েক দিন ধরে তল্লাশি চালিয়েও ওই যুবককে ধরতে পারেনি।
উত্তর ২৪ পরগনার কাঁচরাপাড়ায় ভাড়াবাড়িতে মা-বোনের সঙ্গে থাকতেন দেশরাজ। বাবা বিএসএফ জওয়ান। অভিযোগ, প্রেমে ব্যর্থ হয়ে তিনি খুন করেন কৃষ্ণনগরের কলেজছাত্রীকে। তাঁর খোঁজে উত্তরপ্রদেশেও গিয়েছে কৃষ্ণনগরের পুলিশ। দেওরিয়া শহরের কাছে একটি জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়। কিন্তু দেশরাজকে এখনও পাওয়া যায়নি।
এখন গুজরাত থেকে কুলদীপকে গ্রেফতার করার পরে ভাগ্নে সম্পর্ক খোঁজ পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। রবিবারই ট্রানজিট রিমান্ডে ধৃতকে কৃষ্ণনগর আনা হচ্ছে বলে খবর।
কৃষ্ণনগরে ছাত্রী খুনের নেপথ্যে প্রণয়ঘটিত কারণ রয়েছে বলেই মনে করছে পুলিশ। জানা যাচ্ছে, দেশরাজের সঙ্গে আর সম্পর্ক রাখতে চাননি ওই তরুণী। কিন্তু দেশরাজ সম্পর্ক রাখতে তরুণীর উপর জোর খাটান। তাঁকে হুমকি দিতে থাকেন বলে অভিযোগ। এমনকি, এক বার আত্মহত্যার চেষ্টা করছেন বলে ভিডিয়ো করে ‘প্রেমিকা’কে পাঠিয়েছিলেন। তাতেও ঈশিতার মন না-গলায় তাঁকে খুনের ছক কষেন বলে অনুমান।
২৫ অগস্ট দুপুরে কৃষ্ণনগরের বাড়িতে মাথায় তিনটি গুলি করে ঈশিতাকে খুন করা হয়েছিল। ওই ঘটনার পরে দেশরাজ পালিয়ে উত্তরপ্রদেশের দেওরিয়ায় দেশের বাড়িতে যান বলে পুলিশের অনুমান। কিন্তু কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার ১৫ জনের চারটি দল গত কয়েক দিন তল্লাশি চালিয়েও তাঁকে ধরতে পারেনি।
উত্তরপ্রদেশের ওই যুবক সম্পর্কে নানা তথ্য পেয়েছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, দেশরাজের দুই আত্মীয় দঙ্গল সিংহ ও মঙ্গল সিংহের বিরুদ্ধে খুন-সহ প্রায় ৪০টি অভিযোগ রয়েছে। কয়েক দিন আগেই তাঁরা জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। দেশরাজ তাঁদের কাছেও আশ্রয় নিতে পারেন বলে পুলিশের অনুমান। দেশরাজের দাদু (মায়ের বাবা) সরযূপ্রসাদ সিংহ আবার এলাকার দাপুটে ‘মুখিয়া’। তা ছাড়াও গোরক্ষপুরে দেশরাজের এক খুড়তুতো ভাই থাকেন। তাঁর নাম নিতিন প্রতাপ সিংহ। তাঁর সঙ্গে খুনের আগে যোগাযোগ করেছিলেন দেশরাজ। দু’জন মিলে কৃষ্ণনগরের তরুণীকে খুনের পরিকল্পনা করেন কি না, সে নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।