কল্যাণের নিশানায় এ বার শতাব্দী-সহ তৃণমূলের মহিলা সাংসদেরা! দাবি, সব কথা মমতা এবং অভিষেক পর্যন্ত পৌঁছোয় না
আনন্দবাজার | ৩১ আগস্ট ২০২৫
সহকর্মী মহুয়া মৈত্রের সঙ্গে সংঘাতের পর কিছু দিন চুপ ছিলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার আবার দলের একাংশকে নিশানা করলেন তিনি। তাঁর দাবি, তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে দলীয় নেতাদের সম্পর্কে সমস্ত তথ্য যায় না। ছাঁকনি হয়ে যায়। কল্যাণের কথায়, ‘‘দিদি-অভিষেকের কাছে ফিল্টার হয়ে অনেক কথা যায়।’’ তার পরেই দলের মহিলা সাংসদদের সংসদে চুপ করে থাকা নিয়ে অভিযোগ করলেন তিনি। নাম করে নিশানা করলেন শতাব্দী রায়কেও।
কিছু দিন হল লোকসভায় তৃণমূলের মুখ্য সচেতকের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন কল্যাণ। ওই পদ সামলাচ্ছেন কাকলি ঘোষ দস্তিদার। অন্য দিকে, লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা হয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং উপদলনেত্রী শতাব্দী রায়। এখন কল্যাণের তির তাঁদের দিকেই। শ্রীরামপুরের সাংসদ বলেন, ‘‘রমেশ বিধুড়ী (প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ) মহুয়া সম্পর্কে যে বাজে বাজে কথা বলেছেন, সেগুলো গ্রহণযোগ্য না। এগুলো গ্রহণযোগ্যতার মধ্যে পড়েও না। কিন্তু ঠিক একই সময়ে সংসদে দাঁড়িয়ে রাজীব প্রতাপ রুডি মহুয়াকে সমর্থন করতে গিয়ে আমাকে থ্রেট করেছিলেন। সেখানে শতাব্দী রায় ‘ডেপুটি লিডার’ উপস্থিত ছিলেন।’’ কল্যাণের অভিমান, ‘‘সে দিন ডেপুটি লিডারও (শতাব্দী) রাজীব প্রতাপ রুডিকে কিছু বলেননি।’’ কল্যাণের অভিযোগ, দলের সাংসদকে আক্রমণ করা হচ্ছে দেখেও তৃণমূল মহিলা সাংসদেরা চুপ করে থাকেন সংসদে। তাঁর কথায়, ‘‘আমাকে যখন অ্যাটাক (আক্রমণ) করা হচ্ছে, তখন তৃণমূলের মহিলামহল সব চুপ করে বসে থাকে। বিজেপি আক্রমণ করছে। কিন্তু তখন মহিলা এমপি-রা (সাংসদ) চুপ করে বসে থাকে। তখন দলের এমপিকে যে সমর্থন করতে হয়, সেটা তারা করে না। সে দিন এসপি-র লোকগুলো (সমাজবাদী পার্টির সাংসদেরা) আমাকে সমর্থন করেছিল।’’
এর পরেই কল্যাণ আর একটি দাবি করেছেন। তিনি জানান, এই সমস্ত তথ্য মমতা কিংবা অভিষেক পান না। বলা ভাল, তাঁদের কাছে যেতে দেওয়া হয় না। তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ বলেন, ‘‘দিদি আর অভিষেকের কাছে তো ফিল্টার হয়ে অনেক কথা যায়। সব কথা তো আর যায় না। এক জন ডেপুটি লিডার কী করে দাঁড়িয়ে দেখল যে তার দলের এক জন এমপি-কে রাজীব প্রতাপ রুডি ‘থ্রেট’ করছে?” কল্যাণের সংযোজন, ‘‘আমি যখন চিফ হুইপ (মুখ্য সচেতক) ছিলাম তখন বিষ্ণুপদ রায় আমাদের এক জন এমপি-কে কী বলতে এসেছিল। আমি বলেছিলাম, ‘‘জিভ ছিঁড়ে নেব একদম।’’