২০টি সিম ব্যবহার করে দেশ জুড়ে লক্ষ লক্ষ টাকার প্রতারণা! বর্ধমান থেকে ধৃত সেই সিমের বিক্রেতা
আনন্দবাজার | ৩১ আগস্ট ২০২৫
সাইবার অপরাধীদের সিম সরবরাহের অভিযোগে এক এজেন্টকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতের নাম সোনু পণ্ডিত। বর্ধমান শহরের লক্ষ্মীপুরমাঠ এলাকায় তাঁর বাড়ি। শনিবার দুপুরে বর্ধমান শহরের কলেজ মোড় এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে বর্ধমান সাইবার থানার পুলিশ। ধৃতকে বর্ধমান সিজেএম আদালতে হাজির করানো হয়। ঘটনার বিষয়ে বিশদে জানতে এবং সাইবার অপরাধ চক্রের হদিস পেতে ধৃতকে পাঁচ দিন নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানায় পুলিশ। ধৃতের চার দিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেন ভারপ্রাপ্ত সিজেএম।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত সোনু মোবাইলের সিমের বিক্রির এজেন্ট। বিভিন্ন জায়গায় তিনি সিম বিক্রি করেন। ঘটনায় জড়িত থাকার কথা ধৃত কবুল করেছেন বলে পুলিশের দাবি। সাইবার জালিয়াতি এবং অপরাধ নিয়ে ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম বিভাগে বহু রিপোর্ট জমা পড়েছে। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তার ভিত্তিতে বেশ কিছু মোবাইল নম্বর শনাক্ত হয়েছে। সে সব মোবাইল নম্বর সাইবার অপরাধীরা ব্যবহার করেছে বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, পূর্ব বর্ধমান জেলা থেকে ২০টি সিম সংগ্রহ করে প্রতারকেরা ব্যবহার করেছেন। সে সব মোবাইলের নম্বর ও সিম নম্বর দিয়ে জাতীয় সাইবার অপরাধ বিভাগ থেকে রাজ্যের সাইবার অপরাধ শাখাকে জানানো হয়। তার ভিত্তিতে সাইবার ক্রাইম উইং প্রাথমিক তদন্ত করে। তাতে জানা যায়, সিমগুলি ব্যবহার করে আর্থিক প্রতারণা ও অপরাধমূলক কাজ করা হয়েছে। ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম বিভাগের রিপোর্ট অনুযায়ী, সিমগুলি ব্যবহার করে দেশ জুড়ে ৩৯টি আর্থিক প্রতারণা করা হয়েছে। প্রায় ৪৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারকেরা।
বিভিন্ন ধরনের অপরাধ, এমনকি, বিভিন্ন দফতরের অফিসার সেজে প্রতারণার ঘটনাতেও সিমগুলি ব্যবহার করা হয়েছে বলে রাজ্য সাইবার ক্রাইম উইং থেকে রিপোর্ট মেলার পর স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়। তদন্তে সিমগুলি লক্ষ্মীপুরমাঠ, বাদামতলা, কালনা গেট প্রভৃতি এলাকা থেকে বিক্রি হয়েছে বলে জানা যায়। সিম সরবরাহে পয়েন্ট অব সেল এজেন্ট হিসাবে সোনুর নাম উঠে আসে। এর পরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, বিভিন্ন জায়গা থেকে সিম বিক্রি করেন সোনু। সিম দেওয়ার জন্য বিভিন্ন নথি তিনি ক্রেতার কাছ থেকে সংগ্রহ করেন। একটি ক্ষেত্রে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে থেকে তাড়াতাড়িতে সিম সংগ্রহ করেছিলেন রোগীর এক আত্মীয়। সিম জালিয়াতিতে তাঁর পরিচয়পত্র ব্যবহার করা হয়েছে।