• অবিরাম বৃষ্টি ও ভূমিধস, ছয়দিন ধরে বন্ধ জম্মু-কাশ্মীর জাতীয় সড়ক, চরম দুর্ভোগে যাত্রীরা ...
    আজকাল | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় সড়ক টানা ছয়দিন ধরে বন্ধ। ঘটনার জেরে টানা ছয়দিন ধরে বন্ধ রয়েছে জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় সড়কে নতুন করে যান চলাচল। কারণ টানা বৃষ্টিপাত এবং নতুন করে ভূমিধস রাস্তাটি যান চলাচলের উপযোগী করে তোলার প্রচেষ্টায় বাধা সৃষ্টি করছে। খবর অনুযায়ী, রোববার সকালেও জম্মু বা শ্রীনগর থেকে সমস্ত যান চলাচল বন্ধ। কোনও নতুন যানবাহনকে জাতীয় সড়কে চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে ট্রাফিক বিভাগ।

    এই সড়কটি কাশ্মীর উপত্যকাকে দেশের বাকি অংশের সঙ্গে সংযুক্তকারী একমাত্র সর্ব-মৌসুমী রাস্তা হওয়ায় এর গুরুত্ব অপরিসীম। শনিবার আংশিকভাবে সড়কে যান চলাচল পুনরায় শুরু হলেও শুধুমাত্র আটকে থাকা যানবাহনগুলোকে পরিষ্কার করা হচ্ছিল। তবে থারাদ ব্রিজ থেকে বাল্লি নাল্লার কাছের পেট্রোল পাম্প পর্যন্ত রাস্তাটির উপরের অংশ ধ্বসের কারণে ডুবে যেতে শুরু করেছে।

    সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিস্থিতির অবনতির কারণে উভয় দিক থেকে ট্রাফিক চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। পুনরায় আপডেট না আসা পর্যন্ত তা বন্ধই থাকবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

    মানুষকে সতর্ক করে দিয়ে কর্তৃপক্ষ বলেছে, রাস্তাটি পুরোপুরি পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত কেউ যেন এই রুটে যাত্রা না করে এবং কোনওরকম গুজবে কান না দেয়।

    ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অব ইন্ডিয়া (এনএইচএআই) রামবান-এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক শুভম জানান, ভারী বৃষ্টিপাত রাস্তা পরিষ্কারের কাজকে চরম ব্যাঘাত ঘটিয়েছে।

    থারাদ এলাকায় চেনানি ও উদমপুরের মধ্যবর্তী স্থানে ১৫০ মিটার দীর্ঘ ভূমিধস একটি টানেল সম্পূর্ণভাবে অবরুদ্ধ করে ফেলেছে। এমনকী দ্বিতীয় টানেলকেও হুমকির মুখে ফেলেছে। আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতির জন্য অপেক্ষা করছে সংশ্লিষ্ট কর্মী ও যন্ত্রপাতি।

    এর পাশাপাশি জম্মু অঞ্চলের বিস্তৃত অংশে, বিশেষ করে উদমপুরে রবিবার সকাল থেকেই প্রবল বৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়েছে।

    জম্মু শহরের গুজ্জর নগর থেকে পাঞ্জতীর্থি হয়ে সিধড়া পর্যন্ত সংযোগকারী সার্কুলার রোড, যা 'ঠান্ডি সড়ক' নামেও পরিচিত। পাহাড়ি ঢাল থেকে পাথর পড়ার কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

    ট্রাফিক বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, একাধিক স্থানে ভূমিধস ও পাথর পড়ার কারণে এই রাস্তা বন্ধ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি যাত্রীদের তাঁদের গন্তব্যে পৌঁছাতে বিকল্প পথ বেছে নিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

    এদিকে মৌসম ভবন জানিয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীরে প্রবল বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। জারি রয়েছে সতর্কতাও। আগামী ৪০ ঘণ্টায় জম্মু বিভাগের জন্য ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। বর্তমানে বাসানতার, টাউই এবং চেনাব নদীর জল সতর্কতার স্তরে রয়েছে। ভারী বর্ষণ এবং চেনাব ও রবি নদীর জল বাড়তে থাকার কারণে ভারত ইতিমধ্যেই পাকিস্তানকে সম্ভাব্য বন্যা সম্পর্কে জানিয়েছে। 

    ভারী বর্ষণের ফলে জম্মু ও কাশ্মীরে ভূমিকম্প ও ভূমিধস ঘটেছে এবং সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভূমিধসের কারণে শ্রীনগর–জম্মু জাতীয় সড়ক বন্ধ রাখা হয়েছে। সোমবার কঠুয়া–পাঠানকোট জাতীয় সড়কের ওপর একটি বড় সেতু ভেঙে পড়ে। ফলে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। রবি নদী ও বিভিন্ন খালের জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় কাঠুয়া জেলাতেও বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বৃষ্টির জেরে জম্মু শহরের একাধিক এলাকা পুরোপুরি জলমগ্ন। 

    প্রসঙ্গত, চলতি মাসেই মেঘভাঙা বৃষ্টির পর মর্মান্তিক পরিণতি হয়েছে কিশ্তওয়াড়ে। মেঘ ভাঙা বৃষ্টি-বন্যায় প্রাণ গিয়েছে অন্তত ৬০ জনের। তার মাঝেই ফের ভয়াবহ পরিস্তিতি জম্মু ও কাশ্মীরের কাঠুয়ায়। মেঘ ভাঙা বৃষ্টি, বন্যায় এখনও পর্যন্ত ধসে চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে সাত জনের। আহত বহু। সাতজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং ছয়জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। প্রায় একই সময়ে কাঠুয়ার রাজবাগ এলাকার ঘাটি এবং আরও একাধিক গ্রামে প্রবল মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়। একটি গ্রাম সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।

     
  • Link to this news (আজকাল)