কাটোয়ায় ব্যাঙ্ক এজেন্টের কাছে কিস্তি জমা দিলেও টাকা উধাও
বর্তমান | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, কাটোয়া: কাটোয়া-২ ব্লকে একাধিক স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ঋণ পরিশোধ নিয়ে বিতর্ক। গোষ্ঠীর মহিলাদের দাবি, তাঁরা ব্যাঙ্কের এজেন্ট মারফত ঋণের কিস্তি দিয়েছেন। কিন্তু ব্যাঙ্কে সেই টাকা নাকি জমাই পড়েনি। বিষয়টি নিয়ে গোষ্ঠীর সদস্যরা দুশ্চিন্তায়। তাঁরা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন।
বছর কয়েক আগে একাধিক স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলা ঋণ নিয়েছিলেন ব্যাঙ্ক থেকে। কোনও গোষ্ঠী দেড় লক্ষ টাকা ঋণ পেয়েছে। আবার কোনও গোষ্ঠী দু’ লক্ষ টাকা। মহিলাদের দাবি, করোনাকাল থেকেই তাঁরা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মেঝিয়ারি শাখার ঋণ আদায়কারী এজেন্টকে সময় মতো কিস্তির টাকা দিয়েছেন। অভিযোগ, ওই এজেন্ট নাকি ভয় দেখিয়ে মহিলাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কিস্তির টাকা সংগ্রহ করেছিল। বিনিময়ে মহিলাদের রসিদ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি গোষ্ঠীর সদস্যদের ব্যাঙ্ক থেকে জানানো হয়েছে, তাঁদের ঋণ পরিশোধের কিস্তি জমা হয়নি। লোক আদালতে গিয়ে সমস্যা মেটাতে হবে। এমনকী মহিলাদের ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট ‘লক’ করে দেওয়া হয়েছে। তাতে ওই মহিলারা সমস্যায় পড়েছেন। কারণ, ওই অ্যাকাউন্টেই তাঁদের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, গ্যাসের ভর্তুকির টাকা ঢোকে।
কড়ুই গ্রামের একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য মাধবী প্রামানিক, জোৎস্না গড়াই বলেন, আমরা ঠিক সময়েই এজেন্ট মারফত ঋণের কিস্তি দিয়েছি। আমাদের রসিদও দেওয়া হয়েছিল। এখন ব্যাঙ্ক বলছে ঋণের টাকা নাকি জমাই পড়েনি। বলছে রসিদগুলো জাল। এদিকে আমরা অ্যাকাউন্ট থেকে ভাতার টাকা তুলতে পারছি না। আরেক সদস্য রূপা সাহা বলেন, আমরা ঋণ নিয়েও টাকা পরিশোধ করেছিলাম। কিন্তু ব্যাঙ্ক তা মানতে চাইছে না। কাটোয়া-২ ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি পিন্টু মণ্ডল বলেন, ব্লকের কড়ুই, মেঝিয়ারি সহ বেশ কয়েকটি গ্রামে এরকম ঘটনা ঘটেছে। দু’-তিন বছর ধরে গোষ্ঠীর মহিলাদের অ্যাকাউন্ট বই ‘লক’ করে রেখে দিয়েছে ব্যাঙ্ক। ওরা এজেন্টের মারফত ঋণের টাকা পরিশোধ করেছিল। কারণ ব্যাঙ্কের এজেন্ট ওদের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করেছিল। সেই টাকা ওই এজেন্ট ব্যাঙ্কে জমা করেনি। এখন মহিলারা টাকা তুলতে পারছেন না। আমি মহকুমা শাসক, বিডিও সহ প্রশাসনের সবাইকে জানিয়েছি বিষয়টা। মহিলাদের প্রতারণা করা হয়েছে। যদিও ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের দাবি, মহিলারা ঋণের কিস্তির যে টাকা জমা করেছেন তা যথেষ্ট নয়। এখনও আমরা টাকা পাব। তাই মহিলাদের বলেছি, লোক আদালতে গিয়ে মিটিয়ে নিতে। বাকি বিষয়টা আমরাও খতিয়ে দেখছি।