• গ্রাম ঘুরে ঘুরে নাগরিকত্ব যাচাইয়ের নামে তথ্য জোগাড়, ‘রহস্যময়’ এজেন্সির কর্মী ধৃত, তদন্ত
    বর্তমান | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: কয়েক দিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন বিভিন্ন এজেন্সি রাজ্যে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিস এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে এমনই এক রহস্যময় এজেন্সির খোঁজ পেয়েছে। ভাতার, মঙ্গলকোট, কাটোয়া সহ বিভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্রে গিয়ে এই এজেন্সি নাগরিকত্ব যাচাইয়ের তথ্য সংগ্রহ করছিল। আধার, ভোটারকার্ড দেখার পাশাপাশি তারা জন্ম সার্টিফিকেট দেখতে চাইছিল বলে অভিযোগ। পুলিস বিষয়টি জানতে পেরে শুক্রবার তাকে বর্ধমানের আলিশা বাসস্ট্যান্ড থেকে পাকড়াও করে। তার কাছে থেকে বেশ কিছু ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী পাওয়া গিয়েছে। ধৃত জেরায় জানিয়েছে, এজেন্সির নির্দেশে সে তথ্য সংগ্রহ করছিল। তবে তা কী কাজে ব্যবহার করা হতো সেটা সে পরিষ্কার করেনি। 

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতর বাড়ি বর্ধমান শহরেই। সে দীর্ঘদিন ধরেই একটি সংস্থার হয়ে কাজ করছে। তবে শুধু একা নয়, তার মতো আরও অনেকেই তথ্য সংগ্রহর কাজ করছে। তাদেরও পুলিস চিহ্নিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। 

    তৃণমূল নেতা দেবু টুডু বলেন, রাজ্যের বিরুদ্ধে অনেক দিন ধরেই ষড়যন্ত্র চলছে। বিজেপি ভোটারদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করছে। এসব করে ওরা কিছু করতে পারবে না। সরকারি প্রতিনিধি ছাড়া কাউকে যাতে কেউ তথ্য না দেন, সেই অনুরোধ করব। বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, সব কিছুতে বিজেপির ভূত দেখা উচিত নয়। কে কোন উদ্দেশ্যে তথ্য সংগ্রহ করছে, সেটা পুলিসের তদন্ত করা উচিত। 

    জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, প্রতারকরাও এভাবে তথ্য হাতিয়ে নানা অপরাধ করে। তারা আধার বা প্যানকার্ডের ছবি নিয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলছে। পরে সেই অ্যাকাউন্টে টাকা লেনদেন করছে। অনেকে ফোনের মাধ্যমেও তথ্য জোগাড়ের চেষ্টা চালাচ্ছে। তারাও নিজেদের বিভিন্ন সংস্থার কর্মী পরিচয় দিয়ে ফোন করছে। কখনও কখনও আবার গবেষণা করার নামে তথ্য হাতানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। অপরিচিত কাউকে তথ্য জোগাড় করা উচিত নয়। সেটা পুলিস প্রচার শুরু করছে। তারপরও অনেকেই তথ্য দিচ্ছে বলে অভিযোগ। 

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত হিমাদ্রি ঘোষ বিভিন্ন পরিচয় দিয়ে তথ্য জোগাড় করত। কখনও সে নিজেকে নির্বাচন কমিশনের কর্মী, আবার কখনও অন্য দপ্তরের লোক বলে পরিচয় দিত। ভুয়ো পরিচিয়পত্রও সে তৈরি করেছিল। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে এই এজেন্সির লোকজনরা কাজ করছে। ধৃত জেরায় কয়েকজনের নাম জানিয়েছে। পুলিস তাদের ধরার জন্য জাল বিছিয়েছে। ধৃত যুবকের পরিবারের লোকজন অবশ্য জানিয়েছে, সে একটি সমীক্ষক দলের হয়ে কাজ করে। তারা বিভিন্ন সময় নানা বিষয় নিয়ে সমীক্ষা করে। তাদের দেওয়া পরিচয়পত্র দেখিয়েই তারা এলাকায় ঘোরে। ভুয়ো পরিচয়পত্র তৈরির অভিযোগ ঠিক নয়। 

     ধৃত অভিযুক্ত।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)