• মদ খেয়ে স্কুলে: বিতর্কের জেরে পদত্যাগ প্রধানের
    বর্তমান | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, তেহট্ট: বিতর্কের জেরে পদত্যাগ করলেন তেহট্ট-২ ব্লকের বার্নিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। প্রধান তরুণ ঘোষ চৌধুরী বিডিওর কাছে তাঁর পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। বিডিও ধ্রুবাঙ্কুর ঠাকুর বলেন, প্রধানের পদত্যাগ পেয়েছি। পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 

    প্রসঙ্গত, বেশ কিছুদিন আগে মদ্যপ অবস্থায় বার্নিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছিল প্রধানের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার স্কুলের কিছু ছাত্রছাত্রী তেহট্টঘাট-দেবগ্রাম রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। ওইদিন সকাল সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ৩টে পর্যন্ত রাস্তা অবরোধ করে রাখে তারা। ফলে ওই রাস্তায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। পুলিস গিয়ে আবেদন জানিয়েও অবরোধ তুলতে পারেনি। অবশেষে স্কুলের প্রধান শিক্ষক পলাশীপাড়া থানায় ওই প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তারপর অবরোধ ওঠে। 

    যদিও বার্নিয়া পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, আমার কাছে খবর ছিল, ওই স্কুলে ঠিকমতো ক্লাস হচ্ছে না।  শিক্ষকরা নিয়মিত স্কুলে আসেন না। সেবিষয়ে জানতেই ওই স্কুলে গিয়েছিলাম। সেই সময় ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে উত্তেজিত হয়ে আমি শিক্ষকদের সঙ্গে  কথা বলেছি। সিপিএম এবং আইএসএফ চক্রান্ত করে এলাকার লোকজনকে ভুল বুঝিয়ে কয়েকজন ছাত্রছাত্রীকে রাস্তা অবরোধে সামিল করেছিল।

    প্রধান মদ খেয়ে স্কুলে শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ববহার করার বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, সেজন্যই রাজ্য নেতৃত্ব তাঁকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দেয়। যদিও এই বিষয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব কেউ মুখ খুলতে চাননি। তরুণবাবু বলেন, এই গ্রাম পঞ্চায়েতের আমাদের দলের ১৫ জন সদস্যের মধ্যে ১৩ জন আমার পক্ষে আছেন। তাই পদত্যাগের জন্য কেউ জোর  করেনি। শারীরিক সমস্যার কারণে আমাকে বেশ কিছুদিন বাইরে চিকিৎসার জন্য যেতে হবে। আমি না থাকলে পঞ্চায়েতে দৈনন্দিন কাজের অসুবিধা হবে। জনগণ ঠিকমতো পরিষেবা পাবে না। সেজন্যই আমি পদত্যাগ করেছি। আপাতত বিডিও ঠিক করবেন কী ভাবে পঞ্চায়েত চলবে। তবে প্রধান হিসাবে আমি এলাকার স্কুল, হাসপাতাল ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র নিয়মিত পরিদর্শন করতাম। রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে না পেরে চক্রান্ত করেছে বিরোধীরা।

    প্রধাননের এই বক্তব্যকে অভিভাবকদের একাংশও সমর্থন করেছে। স্কুলের নবম শ্রেণির এক ছাত্রের বাবা বিকাশ ঘোষ বলেন, প্রধানের সম্পর্কে যে কথা রটেছে, তার কোনও ভিত্তি নেই। স্কুলে ঠিকমতো লেখাপড়া হচ্ছে কি না ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা সঠিক সময়ে স্কুলে আসছেন কি না, তা দেখতে গিয়েছিলেন। ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে  পঞ্চায়েত প্রধান স্কুলে, এলাকার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে, হাসপাতালে পরিদর্শনে যেতেই পারেন। তা নিয়ে কারও আপত্তি থাকার কথা নয়। অযথা বিষয়টিকে নিয়ে জলঘোলা করা হচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)