• চেয়ারম্যানের বৈঠক এড়াচ্ছেন কাউন্সিলাররা, অনাস্থার ইঙ্গিত
    বর্তমান | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: ফের চেয়ারম্যানের ডাকা বৈঠকে গরহাজির কাউন্সিলাররা। গত ১৫ দিনে এনিয়ে পরপর চারবার চেয়ারম্যানের কর্মসূচি, বৈঠক এড়ালেন কাউন্সিলাররা। পুরুলিয়া পুরসভায় চেয়ারম্যান নব্যেন্দু মাহালির সঙ্গে যেভাবে অসহযোগিতা শুরু করেছেন কাউন্সিলাররা, তাতে উদ্বিগ্ন তৃণমূল নেতৃত্বও। এতে রাজনৈতিক মহলের অনেকেই অনাস্থার গন্ধ পাচ্ছেন। 

    উল্লেখ্য, বকেয়া বেতনের দাবিতে আজ সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন পুরসভার সাফাই কর্মীরা। তার আগে রবিবার জরুরি ভিত্তিতে কাউন্সিলারদের বৈঠকে ডাকেন চেয়ারম্যান। পুরসভা সূত্রের খবর, বৈঠকে উপস্থিত হননি কাউন্সিলাররা। চেয়ারম্যান মানছেন, বৈঠক ডেকেছিলাম, কিন্তু প্রদীপ ডাগা ছাড়া আর কোনও কাউন্সিলার আসেননি। কেন একের পর এক বৈঠক এড়াচ্ছেন কাউন্সিলাররা? উত্তরে চেয়ারম্যানের জবাব, যাঁরা বৈঠক এড়িয়ে যাচ্ছেন, এ ব্যাপারে তাঁরাই ভালো বলতে পারবেন। কাউন্সিলার সুনয় কবিরাজ বলেন, সাফাই কর্মীরা যে ধর্মঘট ডাকতে পারেন, সেই ইঙ্গিত এক সপ্তাহ আগে থেকেই পাওয়া যাচ্ছিল। চেয়ারম্যানের সদিচ্ছা থাকলে আগেই বৈঠক ডাকতে পারতেন। কাউন্সিলার বিভাসরঞ্জন দাস বলেন, আমি বাইরে আছি। তবে কাউন্সিলাররা কেন চেয়ারম্যানের সঙ্গে অসহযোগিতা করছেন, তা ভেবে দেখা দরকার। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি চেয়ারম্যানের উপর আস্থা রাখতে পারছেন না কাউন্সিলাররা? শহর সভাপতি প্রদীপ ডাগা বলেন, কাউন্সিলারদের এই বিষয়টি দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানাব। দল যা নির্দেশ দেবে, সেরকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

    গত ১৬ আগস্ট ‘খেলা হবে’ দিবস উপলক্ষ্যে জেলা পরিষদের সঙ্গে পুরুলিয়া পুরসভার একটি ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। তবে সেই ম্যাচে চেয়ারম্যান বাদ দিয়ে পুরসভার একজন কাউন্সিলারও উপস্থিত হননি। সেদিন চেয়ারম্যানের উপর ক্ষোভ উগরে দিয়ে কাউন্সিলারদের একাংশ জানিয়েছিলেন, আমন্ত্রণে ত্রুটি থাকায় তাঁরা ম্যাচ বয়কট করেছেন। এরপর গত সপ্তাহের সোমবার একটি বৈঠকের ডাক দেন চেয়ারম্যান। পুরসভা সূত্রের খবর, সম্প্রতি পঞ্চদশ অর্থ কমিশন সহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজের জন্য প্রচুর টাকা এসেছে পুরসভায়। সেই টাকা কোন কোন খাতে খরচ হবে, তার একটি রূপরেখা তৈরির জন্য ওই বৈঠক ডাকা হয়েছিল। ওইদিন সিংহভাগ কাউন্সিলারই পুরসভায় গিয়েছিলেন। যদিও তাঁরা কেউই বৈঠকে যোগ দেননি। চেয়ারম্যান ওইদিন জানিয়েছিলেন, তিনি মিটিং হলে কাউন্সিলারদের জন্য অপেক্ষা করেছিলেন দীর্ঘক্ষণ। অসুস্থ থাকার জন্য একটা সময় পর তিনি বেরিয়ে যান। বৈঠক অসম্পূর্ণই থেকে যায়। কিছুদিন আগে অম্রুত প্রকল্পের বিভিন্ন কাজকর্ম নিয়ে একটি বৈঠকও একইভাবে এড়িয়ে যান কাউন্সিলাররা। 

    এনিয়ে পুরসভার বিরোধী দলনেতা প্রদীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বে বাসিন্দাদের ভুগতে হচ্ছে। পুরসভায় টাকা এসেও পড়ে রয়েছে। খরচ হচ্ছে না। অবিলম্বে সেই টাকা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ছাড়তে হবে। সেইসঙ্গে সাফাই কর্মীদের বকেয়া বেতন মিটিয়ে দিতে হবে। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)