রাজ্যের প্রায় ৫ হাজার পাত্রীকে বিয়ের জন্য মোট ১২ কোটি টাকা
বর্তমান | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: উৎসবের মরশুমে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে চলেছে রাজ্যের চার হাজার ৮০০ পাত্রী। তাঁদের অ্যাকাউন্টে প্রায় ১২ কোটি টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। রূপশ্রী প্রকল্পে তাদের অ্যাকাউন্টে ২৫ হাজার করে টাকা দেওয়া হবে। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক সভার পর তাঁদের বেশ কয়েকজনের অ্যাকাউন্টে টাকা চলেও গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বর্ধমানের মঞ্চ থেকে কয়েকজন পাত্রীর হাতে শাড়ি সহ বেশ কিছু সামগ্রী তুলে দিয়েছেন। সম্প্রতি রূপশ্রী প্রকল্পের জন্য যাঁরা আবেদন করেছিলেন তাঁদের প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকটি জেলায় রূপশ্রী প্রকল্পে অনিয়ম ধরা পড়ে। গৃহবধূদের নামে কার্ড ছাপিয়ে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছিল। তারপর প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ নেয়। এই প্রকল্পের জন্য আবেদন করার পর আধিকারিকরা পাত্রীদের বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নিচ্ছেন। আদৌ তাঁদের বিয়ে হচ্ছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়ার পরই অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হচ্ছে। রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, আগে বাবা-মায়েরা মেয়ের বিয়ের জন্য চিন্তা করতেন। অনেকেই ধারদেনা করে বিয়ে দিতেন। কাউকে কাউকে সম্পত্তি বিক্রি করতে হতো। এখন সেই অবস্থা নয়। বিয়ের আগে রূপশ্রী প্রকল্পে মেয়েরা ২৫ হাজার টাকা পাচ্ছেন। এছাড়া কন্যাশ্রী কে টু প্রকল্পেও তাঁরা ২৫ হাজার টাকা পাচ্ছেন। এখন প্রতিটি বাবা-মা মেয়ের বিয়ে ধুমধাম করে দিচ্ছেন। কাউকে ধার করতে হচ্ছে না।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পে সুবিধা পাওয়ার জন্য বিয়ের কার্ড জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া পরিবারের আয়ের বিষয়টিও দেখা হয়। মঙ্গলবার বর্ধমানে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় এসেছিলেন বর্ধমান ১ ব্লকের বাসিন্দা অজয় চট্টোপাধ্যায় তিনি বলেন, রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী এবং রূপশ্রী প্রকল্প বহু বাবা-মাকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। পড়াশোনার খরচ কন্যাশ্রী প্রকল্প থেকে হয়ে যাচ্ছে। উচ্চশিক্ষার জন্য স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড রয়েছে। আবার বিয়ের বয়স হলে রূপশ্রী প্রকল্পে সুবিধা দেওয়া হয়। বৈশাখ মাসে আমার এক আত্মীয়র মেয়েও এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছে।
আধিকারিকদের দাবি, এই প্রকল্প চালু হওয়ায় নাবালিকাদের বিয়েও আটকানো গিয়েছে। ১৮ বছর না হলে এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়া যায় না। সেই কারণে বাবা-মায়েরা মেয়েদের ১৮ বছরের আগে বিয়ে দিচ্ছে না। তবে অনেক নাবালিকা নিজের সিদ্ধান্তে বিয়ের পিঁড়িতে বসছে। সেক্ষেত্রে বাবা মায়ের কিছু করার থাকছে না। তবে নাবালিকাদের বিয়ে আটকানোর জন্যও প্রশাসন একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে।