• দত্তপুকুরের শিল্পীর তৈরি ফাইবারের প্রতিমা পুজো আমেরিকা-জাপান-কানাডা-দুবাইয়ে
    বর্তমান | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: বহু বছর ধরে বাংলার দুর্গাপুজোর বিশ্বজোড়া খ্যাতি। বাংলার মতো ভিন দেশেও দুর্গাপুজো হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভিনদেশে যায় বাংলার শিল্পীর তৈরি উমা। উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরেরর এক শিল্পী অন্য দেশে প্রতিমা পাঠান। তাঁর তৈরি দুর্গা এবার যাচ্ছে কানাডা, জাপান, লন্ডন ও আমেরিকায়। সবক’টিই ফাইবারের মূর্তি।

    দত্তপুকুরের ফাইবারের খ্যাতি জগৎজোড়া। বিভিন্ন শিল্পীর শিল্পকলা রাজ্য ছাড়িয়ে ভিনদেশে পৌঁছে সুনাম কুড়িয়েছে। প্রতি বছর দত্তপুকুর থেকে একাধিক দুর্গাপ্রতিমা অন্য রাজ্য বা দেশে যায়। পুজোর মাস চারেক আগে তৈরির বরাত আসে শিল্পীদের কাছে। তারপর তাঁরা মূর্তি বানান এবং পাঠিয়ে দেন। দত্তপুকুরে দীর্ঘদিন ধরে ফাইবারের প্রতিমা তৈরি করছেন অনিমেষ পাল। তাঁর নিজস্ব কারখানা রয়েছে। প্রতিবছর ভিনদেশে প্রতিমা পাঠান। এবার মূর্তি গিয়েছে জাপান, ইউকে, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, দুবাই ও আমেরিকায়। কানাডায় গিয়েছে সাত ফুট উচ্চতার দেবী। তা তৈরি করতে অনিমেষের ৬০ কেজি ফাইবার লেগেছে। ৫০ কেজি ওজনের অন্য একটি মূর্তি গিয়েছে আমেরিকায়। সেটির উচ্চতা সাড়ে পাঁচ ফুট। লন্ডনে গিয়েছে সাড়ে পাঁচ ফুট উচ্চতার প্রতিমা। আর জাপানে যাবে ৬০ কেজির মূর্তি। চলতি সপ্তাহেই সেগুলি রওনা দেবে। অনিমেষ জানান, মাটির প্রতিমার মতো প্রথমে খড় বেঁধে তাতে মাটির প্রলেপ দিয়ে কাঠামো তৈরি হয়। এরপর সেটিকে প্লাস্টারের ডাইস করা হয়। এবার সেটির আলাদা আলাদা টুকরো করে তৈরি হয় হাত, পা, দেহ, গলা, হাতের তালু ইত্যাদি। একটি মূর্তির ৭০ থেকে ৮০টি টুকরো তৈরি করতে হয়। ফাইবার তৈরির পর ঘষামাজা করে সেই টুকরোগুলিকে জুড়ে দিতে হয় প্রাইমার পুটিংয়ের মাধ্যমে। তারপর ফিনিশিং টাচ। এ মূর্তি রং করার নিয়ম অন্য। বাড়ির দেওয়ালে যে রং থাকে সেই ‘অয়েল কালার’ ব্যবহৃত হয় প্রতিমার কাঠামোয়। কারণ একটি মূর্তি তিন-চারবছর পুজো করেন বিদেশের অনেক উদ্যোক্তা। সে জন্য ভালোভাবে রং করার নিয়ম। এ মূর্তি সাজানোর ক্ষেত্রেও বিশেষ যত্ন নেন শিল্পীরা। 

    অনিমেষ বলেন, ‘বছরের প্রথমেই অর্ডার আসতে শুরু করে। প্রতিমা গড়া হয়ে গেলে জাহাজে করে তা পাড়ি দেয় ভিন দেশে। তবে এখন মূর্তি যাবে আকাশপথে। প্রায় তিন মাস ধরে কাজ চলছে। অন্য দেশের জন্য মূর্তি গড়তে ভালো লাগে। কারণ আমাদের তৈরি প্রতিমা বিদেশে পুজো পাচ্ছে, সত্যিই খুব ভাগ্যের ব্যপার। অর্ডার হয় অনলাইনে। ছ’ফুটের প্রতিমা বিক্রি হয়েছে দু’লক্ষ টাকায়। তার থেকে কম উচ্চতার প্রতিমা এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা দাম।’  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)