তিন দশক পর… রক্তাক্ত অতীত পেরিয়ে কাশ্মীরে খুলল মা ভবানী মন্দিরের সিংহদ্বার
প্রতিদিন | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৯০-এর দশকের রক্তাক্ত সেই সময় অতীত। ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে জম্মু ও কাশ্মীর। এবার সেই ছবিই দেখা গেল কাশ্মীরের বুদগামে। দীর্ঘ ৩৫ বছর অপেক্ষার পর অবশেষে খোলা হল শারদা ভবানী মন্দির। রবিবার মন্দির উদ্বোধনের পর শুভ ‘মহুরত’ ও ‘প্রাণ প্রতিষ্ঠা’ অনুষ্ঠানে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষরাও যোগ দেন অনুষ্ঠানে।
৯০-এর দশকে কার্যত সন্ত্রাসীদের দখলে চলে গিয়েছিল কার্যত গোটা কাশ্মীর। গণহত্যার পাশাপাশি সেখান থেকে উৎখাত করা হয় হিন্দু পণ্ডিতদের। ভয়াবহ সেই ক্ষত ধীরে ধীরে মুছছে কাশ্মীর। ধীরে ধীরে হলেও ক্রমশ স্বাভাবিক হচ্ছে পরিস্থিতি। ৯০-এর দশকে ভিটে-মাটি ছাড়া হওয়ার পর এই মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে নিজের পূর্বপুরুষদের মাটিতে ফেরেন কাশ্মীরি পণ্ডিতদের একটি দল। এই মন্দির প্রতিষ্ঠা কমিটির সভাপতি সুনীল কুমার ভাট বলেন, “এই মন্দির পাকিস্তানের শারদা মাতা মন্দিরের একটি শাখা। আমরা অনেকদিন ধরেই মন্দিরটি পুনরায় চালু করতে চেয়েছিলাম। স্থানীয় মুসলিমরাও আমাদের সঙ্গ দিয়েছেন।”
ভাট আরও বলেন, “পণ্ডিত সম্প্রদায়ের উদ্যোগে ৩৫ বছর পর মন্দিরটি আবারও খুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি এই সমাবেশ বার্ষিক অনুষ্ঠানে পরিণত হবে। এবং মাতা রানির কাছে আমরা প্রার্থনা করব যাতে এখানকার পণ্ডিত সম্প্রদায়ের মানুষরা ফের কাশ্মীরে ফিরে আসেন।” জানা গিয়েছে, কাশ্মীরি পণ্ডিতদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দ সহায়তার মাধ্যমে মন্দিরটি পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। পুরনো মন্দিরটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ায় নতুন মন্দির নির্মাণে জেলা প্রশাসনেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
এই অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছে সম্প্রীতির ছবিও। মন্দিরের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গ্রামের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষরা। পণ্ডিতদের নিজের শিকড়ে ফিরে আসার জন্য তাদের স্বাগত জানিয়ে মুসলিম বৃদ্ধ বলেন, এনারা এই গ্রামের বাসিন্দা। পরিস্থিতি এতটা খারাপ হওয়ার আগে আমরা একসঙ্গে থাকতাম। একত্রে খাওয়াদাওয়া করতাম। যদি প্রয়োজন হয় আমরা ওদের সাহায্য করতে সর্বতভাবে প্রস্তুত। তিনি আরও বলেন, “এটা ভোলার নয় যে আমরা একসঙ্গে বেড়ে উঠেছি। সময় কাটিয়েছি। আমরা খুশি যে আজ ওরা এখানে ফিরে এসে প্রার্থনা করছেন। এটা ওদের বিশ্বাসের বিষয়।”