গ্রামের তৈরি ‘গয়নাবড়ি’ই দুর্গার অলঙ্কার, রামমোহন সম্মিলনীর থিম উদ্বোধন কুণালের
প্রতিদিন | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
শ্রীকান্ত পাত্র: মহিষাসুর সংহারে দশভুজা দেবী দুর্গার হাতে থাকে দশ অস্ত্র। আবার ঘরের মেয়ে উমার বেশভূষায় থাকে নানা সাজসজ্জা। শারদীয়ায় দেবীর শাড়ি, অলঙ্কারে থাকে অভিনবত্ব। এবছর দুর্গাপ্রতিমার অলঙ্কার নিয়ে অভিনব ভাবনা ভেবেছে উত্তর কলকাতার রামমোহন সম্মিলনী। শোলা বা অন্য কিছু নয়, এই পুজোয় এবার উমা সেজে উঠবেন গ্রামবাংলার শিল্পীদের হাতে তৈরি বিখ্যাত গয়নাবড়িতে। রবিবার, তারই থিম উদ্বোধন হয়ে গেল পুজো কমিটির চেয়ারম্যান কুণাল ঘোষের হাত ধরে। গ্রাম-শহরের মেলবন্ধন আরও সুদৃঢ় করতে ঘাটালে গয়নাবড়ির জন্য বিখ্যাত রানিচক গ্রাম থেকেই উদ্বোধন করলেন কুণাল ঘোষ।
পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের দাসপুর ২ ব্লকের অন্তর্গত রানিচক গ্রাম গয়নাবড়ির জন্য বিখ্যাত। সেখানে রকমারি নকশার বড়ি তৈরি হয় ঘরে ঘরে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর উদ্যোগে এই কাজ এখন বাণিজ্যিক স্তরেও হচ্ছে। নামেই যেখানে ‘গয়না’, সেখানে না সাজালে হয়? তাই দশভুজার সাজের উপকরণেই এবার গয়নাবড়িকে বেছে নিল রামমোহন সম্মিলনী। দেবীর কণ্ঠহার, কানের দুল, বালা, নথ এমনকী চাঁদমালাও তৈরি হচ্ছে গ্রাম্য বধূদের হাতে তৈরি গয়নাবড়ির রকমারি নকশায়।
রবিবার রানিচক গ্রামে গিয়ে সেসব শিল্পীদের সঙ্গে দেখা করলেন পুজোর অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা কুণাল ঘোষ। তাঁর কথায়, ”মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে যেভাবে স্বনির্ভর গোষ্ঠী, ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প বাংলার শিল্পীদের মাধ্যমে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে দিচ্ছেন, তাতে আমাদের আশা, আগামিদিনে গয়নাবড়ি সেই তালিকায় থাকবে। বাংলার মা-বোনেরা যে কী কী পারেন, এটা তার প্রমাণ। রামমোহন সম্মিলনীর দুর্গাপ্রতিমা এই প্রথম এই ধরনের গয়নায় সেজে ওঠার পর আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছতে পারবে গয়নাবড়ি।” সামঞ্জস্য রেখে থিমের নাম দেওয়া হয়েছে, ‘দুর্গামায়ের অহংকার/গয়নাবড়ির অলঙ্কার।’
শহরকেন্দ্রিক হয়েও প্রতিবছর দুর্গাপুজোয় গ্রাম্য সংস্কৃতির ছোঁয়া পাওয়া যায় উত্তর কলকাতার রামমোহন সম্মিলনীর পুজোয়। যার অন্যতম মূল উদ্যোক্তা কুণাল ঘোষ। বিগত বছরগুলিতে জঙ্গলমহল, সাগরকন্যা, সম্পন্নর মতো থিমে নিজেদের পুজো সাজিয়েছে সুকিয়া স্ট্রিটের এই পুজোমণ্ডপ। সেসব বহুল প্রশংসিত হয়েছে। আর এবছর দেবী দুর্গার ‘গয়নাবড়ি’ অলঙ্কার যে দর্শকদের আকর্ষণের কেন্দ্রে, তা বলাই বাহুল্য।