• SSC মামলায় সম্পত্তি, অ্যাকাউন্ট ফরেন্সিক নজরে?
    এই সময় | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সোমনাথ মণ্ডল

    শিক্ষায় নিয়োগ–দুর্নীতির তদন্তে এ বার ফরেন্সিক অ্যানালিসিস করতে চলেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। অফিসারদের বক্তব্য, এই তদন্তে যে অভিযুক্তরা গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাঁরা প্রায় সকলেই দাবি করেছেন যে, তাঁদের নামে যে সব স্থাবর–অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে, তা পারিবারিক এবং ব্যবসার টাকায় কেনা।

    এই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন মুর্শিদাবাদের বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। তিনিও নিজেকে ‘বনেদি ব্যবসায়ী’ বলে দাবি করেছেন। এ বিষয়ে ‘স্বচ্ছতা’ আনতে ফরেন্সিক অ্যানালেসিস করতে চান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী অফিসারেরা। তাঁদের দাবি, এই সব সম্পত্তি হিসেব–বহির্ভূত টাকায় বা বেআইনি পথে কেনা হয়েছিল কি না, ফরেন্সিক পরীক্ষার করলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে।

    এ প্রসঙ্গে ইডি–র অফিসারেরা ২০০৯–এ তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা সত্যমের প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার আর্থিক দুর্নীতির প্রসঙ্গ তুলছেন। শেয়ার দর বাড়াতে সংস্থার মুনাফা বাড়িয়ে দেখানো হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে সত্যমের বিরুদ্ধে।

    সে কারণে সত্যমের আয়–ব্যয়ের হিসেব খতিয়ে দেখতে ফরেন্সিক অ্যানালেসিস করে অডিট হয়েছিল। এর পরেই কী ভাবে আর্থিক তছরুপ হয়, তা সামনে আসে। এ বার স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সত্যমের মতোই অভিযুক্তদের অ্যাকাউন্টের ফরেন্সিক অ্যানালেসিস করাতে চলেছে ইডি।

    ইডি-র প্যানেলে থাকা এক আইনজীবীর বক্তব্য, ‘ইডি-র তদন্তের একটা নিজস্ব পদ্ধতি রয়েছে। পুলিশ বা সিবিআইয়ের মতো নয়। কোনও ব্যক্তি বা সংস্থার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে অনেক সময়েই ফরেন্সিক অ্যানালেসিসের প্রয়োজন হয়। আবার কিছু ক্ষেত্রে আদালতের অনুমতি নিয়ে পদক্ষেপ করতে হয়। এ সব করতে গিয়ে পেপারওয়ার্কের উপরে জোর দেন তদন্তকারীরা।’

    সূত্রের খবর, শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতে নবম-দশমের মামলায় জীবনকৃষ্ণকে ‘কি–পার্সন’ হিসেবে দেখিয়েছে ইডি। অভিযোগ, চাকরিপ্রার্থীদের থেকে নগদের পাশাপাশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেও টাকা নিয়েছেন জীবনকৃষ্ণ। আবার আত্মীদের থেকে পাওয়া ‘উপহার’ দেখিয়েও নিজের নামে সম্পত্তি বাড়িয়েছেন এই বিধায়ক।

    ইডি–র কাজকর্ম নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সরব তৃণমূল–সহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলি। সম্প্রতি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ফের মুখ খুলেছেন ইডি–র ভূমিকা নিয়ে। বিরোধীদের মূল বক্তব্য, রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে ইডি–কে ব্যবহার করছে কেন্দ্রীয় সরকার। শুধু রাজনৈতিক ক্ষেত্রই নয়, সুপ্রিম কোর্টও বিভিন্ন সময়ে ইডি–কে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।

    তাদের ‘সাকসেস রেট’ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে শীর্ষ আদালত। ক’টি মামলায় ক’জনের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা গিয়েছে, সে প্রশ্ন একাধিকবার উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে ইডি–র দাবি, বাংলায় শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে বছর দু’য়েকের মধ্যেই এসএসসি–র নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশের মামলায় প্রায় ২৩৮ কোটি টাকা সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে তারা।

  • Link to this news (এই সময়)