• রিয়েল লাইফ ‘জব উই মেট’! নির্দিষ্ট সময়ে বয়ফ্রেন্ড না আসায় চলন্ত ট্রেনেই ইলেকট্রিশিয়ানের সঙ্গে 'ওইটা' করে ফেললেন তরুণী! ...
    আজকাল | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: বলিউডের জব উই মেট ছবির কাহিনির সঙ্গে মিলে যাচ্ছে এক বাস্তব ঘটনা। ইন্দোরের এক ফাইনাল ইয়ার বিএবিএ ছাত্রী শ্রদ্ধা তিওয়ারি নিখোঁজ হওয়ার সাত দিন পর বাড়ি ফিরে এসে দাবি করলেন, তিনি এক ইলেকট্রিশিয়ানকে বিয়ে করেছেন—যার সঙ্গে তাঁর দেখা হয়েছিল ট্রেনে! নিখোঁজ থেকে রহস্যময় ‘বিবাহ’ মধ্যবর্তীকালীন সময়ে জানা যাচ্ছে গত ২৩ আগস্ট রাত দু’টোর সময় সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, শ্রদ্ধা মোবাইল ছাড়া বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন। এরপর এক সপ্তাহ ধরে তাঁর কোনও  খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরিবার ও পুলিশ সব চেষ্টা করেও সাফল্য পায়নি। অবশেষে সাত দিন পর শ্রদ্ধা নিজেই থানায় হাজির হন।

    পুলিশকে তিনি জানান, মূলত প্রেমিক সার্থকের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে সার্থক হাজির না হওয়ায় তিনি একাই রতলামগামী ট্রেনে ওঠেন। আশ্চর্যজনকভাবে সেই ট্রেনেই উঠে পড়েন করণদীপ নামে এক ইলেকট্রিশিয়ান, যিনি ইন্দোরের একটি কলেজে কাজ করেন এবং পূর্বপরিচিত ছিলেন। ট্রেনযাত্রার মাঝেই তাঁদের মধ্যে কথা হয় এবং তাঁরা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন।

    এরপরে তারা মান্দসৌর থেকে মহেশ্বরে মন্দিরে গিয়ে বিয়েও করেন বলে জানা গেছে। শ্রদ্ধার দাবি, রতলামে না নেমে তাঁরা মান্দসৌরে নামেন এবং সেখান থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরে মহেশ্বর যান। সেখানকার এক মন্দিরে তাঁদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। এরপর তাঁরা সান্বরিয়া সেঠ দর্শন করে ইন্দোরে ফিরে আসেন এবং সরাসরি থানায় গিয়ে পুরো ঘটনা জানান।

    এই ঘটনায়  স্বভাবিকভাবেই পরিবারের অস্বীকৃতি রয়েছে  ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়েও  প্রশ্ন উঠেছে। শ্রদ্ধার বাবা অনিল তিওয়ারি এই বিয়েকে মানতে নারাজ। তাঁর বক্তব্য, “মেয়েকে আমি টাকা পাঠিয়েছিলাম যাতে বাড়ি ফিরে আসে। কিন্তু সে করণদীপের সঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি এই বিয়ে মেনে নিচ্ছি না।” তিনি আরও দাবি করেন, করণদীপ নিজেই বলেছেন যে, শ্রদ্ধা নাকি আত্মহত্যা করতে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি তাঁকে বাঁচান। অনিল তিওয়ারির কথায়, “আমার মেয়ে মানসিকভাবে স্থিতিশীল নয়।”

    মেয়েকে ফেরাতে অদ্ভুত কুসংস্কারের  আশ্রয় নেয় পরিবার। মেয়ের খোঁজ না পাওয়ায় পরিবার কুসংস্কারে ভরসা করে তাঁর ছবি উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখে। তাঁদের বিশ্বাস, এর ফলেই শ্রদ্ধা বাড়ি ফিরে এসেছে। এমনকি পরিবার ঘোষণা করেছিল, যে কেউ মেয়ের খোঁজ দিতে পারবে তাকে ৫১ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।

    পুলিশের সংশয় রয়েছে গোটা ঘটনায়। পুলিশের কাছে শ্রদ্ধার বয়ান পুরোপুরি বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না। তাঁদের বক্তব্য, যদি বিয়ে হয়ে থাকে, তবে তার প্রমাণপত্র বা বিবাহের সার্টিফিকেট  জমা দিতে হবে। পাশাপাশি, প্রেমিক সার্থকও জানিয়েছেন, কয়েকদিন ধরে তাঁর সঙ্গে শ্রদ্ধার কোনও  যোগাযোগ ছিল না।

    এই পরিস্থিতিতে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে শ্রদ্ধার ভবিষ্যৎ। সবশেষে শ্রদ্ধার বাবা বলেন, “মেয়েটি প্রাপ্তবয়স্ক। যদি একা থাকতে চায় বা নিজের মতো সিদ্ধান্ত নেয়, আমাদের সেটা মেনে নিতে হবে।” তবে পরিবারের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। সারকথা, নিখোঁজ থেকে হঠাৎ ‘বিবাহ’—এই রহস্যময় ঘটনার জট এখনও কাটেনি। পুলিশি তদন্তে পরিষ্কার হবে, সিনেমার মতো প্রেমকাহিনি সত্যি, নাকি আরও বড় রহস্য লুকিয়ে আছে।
  • Link to this news (আজকাল)