কৃষ্ণনগর কলেজছাত্রী হত্যায় গ্রেপ্তার মূল অভিযুক্ত দেশরাজ
দৈনিক স্টেটসম্যান | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
কৃষ্ণনগরের কলেজছাত্রী ঈশিতা মল্লিক খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত দেশরাজ সিংকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর রবিবার উত্তরপ্রদেশ-নেপাল সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে তাঁকে পাকড়াও করা হয়েছে। ট্রানজিট রিমান্ডে তাঁকে কৃষ্ণনগরের কোতোয়ালি থানায় আনা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, গত ২৫ আগস্ট কৃষ্ণনগরের বাড়িতে থাকার সময় মাথায় তিনটি গুলি করে খুন করা হয় ঈশিতাকে। ঘটনার পরপরই দেশরাজ তাঁর পৈতৃক বাড়ি উত্তরপ্রদেশের দেওরিয়ায় পালিয়ে যান বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হয়। তদন্তের অগ্রগতিতে পুলিশের একাধিক দল তল্লাশি চালালেও এত দিন তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে শেষপর্যন্ত তদন্তে গতি আসে তাঁর মামা কুলদীপ সিংহের গ্রেপ্তারের। গুজরাতের জামনগর থেকে কুলদীপকে ধরার পরেই ভাগ্নে দেশরাজের খোঁজ মেলে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খুনের পরে প্রথমে মামার সঙ্গেই যোগাযোগ করেছিলেন দেশরাজ। মামা তাঁকে পালাতে সাহায্য করেন বলেও অভিযোগ। উত্তর ২৪ পরগনার কাঁচরাপাড়ায় মা ও বোনের সঙ্গে ভাড়াবাড়িতে থাকতেন দেশরাজ। তাঁর বাবা বিএসএফ-এর জওয়ান। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, প্রেমে ব্যর্থ হয়ে খুনের সিদ্ধান্ত নেন দেশরাজ। অভিযোগ, ঈশিতা সম্পর্ক রাখতে না চাওয়ায় তাঁকে হুমকি দিতে শুরু করেন ওই যুবক। এমনকি, আত্মহত্যার ভিডিও পাঠিয়েও তরুণীর ওপর মানসিক চাপে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাতেও সাড়া না পেয়ে শেষমেশ খুনের পরিকল্পনা করেন বলে অনুমান তদন্তকারীদের।
পুলিশের দাবি, দেশরাজের পরিবার ও আত্মীয়দের বিরুদ্ধেও রয়েছে একাধিক গুরুতর অভিযোগ। জানা গেছে, তাঁর দুই আত্মীয় দঙ্গল সিং ও মঙ্গল সিংয়েরর বিরুদ্ধে খুন-সহ প্রায় ৪০টি মামলা রয়েছে। কয়েক দিন আগেই তাঁরা জেল থেকে ছাড়া পান। দেশরাজ তাঁদের কাছেও আশ্রয় নিতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়াও খুনের আগে গোরক্ষপুরে থাকা এক খুড়তুতো ভাই নিতিন প্রতাপ সিংহের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিলেন দেশরাজ। তদন্তকারীদের প্রশ্ন, খুনের পরিকল্পনায় ওই ভাইয়ের ভূমিকা কী? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেতে দেশরাজকে জিজ্ঞাসাবাদে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তদন্তকারীদের আশা, প্রধান অভিযুক্তের মুখ খুললেই প্রকাশ্যে আসতে পারে হত্যাকাণ্ড ঘিরে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য।