কৃষ্ণনগর হত্যাকাণ্ডের একসপ্তাহ পর গ্রেপ্তার মূল অভিযুক্ত, উত্তরপ্রদেশ থেকে জালে দেশরাজ
প্রতিদিন | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
অর্ণব আইচ ও সঞ্জিত ঘোষ: সপ্তাহখানেক পর অবশেষে পুলিশের জালে কৃষ্ণনগরে ছাত্রী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত দেশরাজ সিং। সোমবার ভোরে উত্তরপ্রদেশের গোপন ডেরা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে রাজ্য পুলিশ। তাকে ট্রানজিট রিমান্ডে আনা হচ্ছে কলকাতায়। রবিবারই দেশরাজের মামা কুলদীপ সিংকে গুজরাটের জামনগর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।তাকে জেরা করেই দেশরাজের কথা জানতে পারেন তদন্তকারীরা। শেষমেশ যোগীরাজ্যে অভিযান চালিয়ে তাকে নাগালে আনল পুলিশ। বাংলায় হত্যার মতো অপরাধ সংঘটিত করে ভিনরাজ্যে গা ঢাকা দিয়ে যে বিশেষ লাভ হবে না, এই ঘটনাই তার প্রমাণ। দেশরাজের গ্রেপ্তারি রাজ্য পুলিশের বড় সাফল্য বলেই মনে করা হচ্ছে।
কৃষ্ণনগর হত্যাকাণ্ড গত সোমবারের। প্রেমের সম্পর্ক ভাঙতে চাওয়ায় প্রেমিকার বাড়িতে ঢুকে গুলি চালিয়ে নৃশংসভাবে খুনের অভিযোগ ওঠে দেশরাজ সিং নামে উত্তরপ্রদেশের যুবকের বিরুদ্ধে। অপরাধের পর সে গা ঢাকা দিয়েছিল। তদন্তকারীরা তার নাগাল পাচ্ছিল না এতদিন। সে উত্তরপ্রদেশে, নিজের ডেরায় কোথাও আত্মগোপন করতে পারে, এই সন্দেহে কৃষ্ণনগর পুলিশের আলাদা তিনটি দল সেখানে যায়। দেশরাজকে পাকড়াও করতে কার্যত চিরুনি তল্লাশি শুরু হয়।
জানা যায়, খুনের পর দেশরাজ গা ঢাকা দিতে নিজের আত্মীয়দেরই সাহায্য চেয়েছিল। এরপর রবিবার গুজরাটের জামনগর থেকে দেশরাজের মামা কুলদীপ সিংকে জালে আনেন তদন্তকারীরা। তাকে জেরা করে জানা যায়, খুন করে আসা ভাগ্নেকে তিনি নিরাপদ আশ্রয় পেতে সাহায্য করেছিল। কুলদীপকে জেরা করেই খোঁজ মেলে দেশরাজের। পুলিশ সূত্রে খবর, নেপালে পালানোর পরিকল্পনা করেছিল সে। তার আগেই রাজ্য পুলিশ গ্রেপ্তার করে দেশরাজকে নিজেদের হেফাজতে নিতে মরিয়া। সোমবার রানাঘাট আদালতে তাকে পেশ করার সম্ভাবনা।
কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার এসপি অমরনাথ কে সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, ”ভারত-নেপাল সীমান্তে গাড়ি করে যাওয়ার সময় দেশরাজকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে ধৃত মামার কাছ থেকেই ওর সম্পর্কে তথ্য পেয়েছিলাম আমরা। আমাদের টিম খুব ভালো কাজ করেছে। ঘটনার পর বড় মানসিক ধাক্কা থাকলেও ছাত্রীর পরিবার আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করেছে। বিভিন্ন তথ্য দিয়েছে। সেসব খতিয়ে দেখে আমরা তিন-চারঘণ্টার মধ্যেই লিড পেয়েছিলাম। তারপরই অ্যাকশনে নামে আমাদের টিম।” ভিনরাজ্য থেকে এই গ্রেপ্তারি রাজ্য পুলিশের যথেষ্ট বড় সাফল্য বলে দাবি।