একটানা বৃষ্টি। রোদের দেখাই নেই। প্রায় সব সময়ে ফুল গাছের গোড়া স্যাঁতসেঁতে হয়ে আছে। ফলে অনেক ফুল গাছই মরে গিয়েছে। ফের নতুন করে গাছ লাগিয়ে পুজোর আগে সেই গাছে ফুল ফোটানো কতটা সম্ভব,এই নিয়ে রীতিমতো চিন্তিত ফুলচাষিরা। অনেকের প্রশ্ন, পুজোয় যত ফুল লাগে, সেই পরিমাণ ফুল আসবে কোথা থেকে?
মল্লিকঘাট ফুল বাজারের বিক্রেতাদের অনেকেই জানাচ্ছেন, টানা প্রবল বৃষ্টির কারণে রাজ্যের ফুলচাষের প্রধান জেলা হিসাবে পরিচিত পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়ার আনাজ ও ফুলচাষক্ষতিগ্রস্ত। জবা, গাঁদা, দোপাটি, অপরাজিতা-সহ বিভিন্ন ফুল ও বাহারি গাছের বাগানের মাটি নিরবচ্ছিন্নভাবে স্যাঁতসেঁতে থাকায় অর্ধেকেরও বেশি ফুল ও বাহারি গাছ নষ্টহয়ে গিয়েছে। টানা বৃষ্টি চলতে থাকায় ফুলের পাপড়িতে বৃষ্টির জল ঢুকে ফুলের গুণমান নষ্ট করছে। এর ফলে এখনই মল্লিকঘাট ফুলের বাজারে জোগান কম। এখন ফুলের তেমন চাহিদা না থাকায় সামলে দেওয়া যাচ্ছে। কিন্তু উৎসবের মরসুমে কী হবে, তা নিয়ে চিন্তায় ফুলচাষিরা।
তাঁরা জানাচ্ছেন, বর্ষাকালে বৃষ্টি হবে, সেটা তো স্বাভাবিক। কিন্তু, গত প্রায় এক মাস ধরে যত বৃষ্টিহচ্ছে, তেমনটা অন্য বার সাধারণত হয় না। ‘সারা বাংলা ফুলচাষি ওফুল ব্যবসায়ী সমিতি এবং কৃষক সংগ্রাম পরিষদ’-এর সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র নায়েক বলেন, ‘‘সাধারণত বর্ষায় দেখা যায়, কয়েক দিন বৃষ্টি হলে তার পরে টানা কয়েক দিন রোদ থাকে। ফলে ফুল গাছের মাটি শুকোনোর সময় পায়। কিন্তু এ বার গাছের গোড়া ভিজে নরম হয়েই থাকছে।ফলে বন্যায় যেমন ক্ষতি হয়েছে চাষের, তেমনই গাছের গোড়া টানা ভেজা থাকায় আনাজ গাছ, ফুল গাছ পচে যাচ্ছে।’’
মল্লিকঘাট ফুল বাজারে বহু দিনের ব্যবসা অরুণ গোস্বামীর। অরুণ বলেন, ‘‘পুজোর বাকি এক মাসেরও কম। এমন বৃষ্টি হতে থাকলে দুর্গাপুজোর অন্যতম ফুল পদ্মের জোগানেও টান পড়বে। যে সব জলাশয়ে পদ্মের চাষ হয়, সেগুলি প্লাবিত হলে চাষের ক্ষতি হবেই।’’ তিনি জানান, উৎসবের মরসুম নেই, তাতেই টানা বৃষ্টিতে ফুলের দাম বেড়েছে। ঝুরো গাঁদা ২৫০ টাকা কেজি, অপরাজিতা ২৫০ টাকা কেজি, দোপাটি ২০০ টাকা কেজি। সংগঠনের তরফে নারায়ণের দাবি, ‘‘অবিলম্বে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে দাঁড়াক। তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক। তা না হলে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের জীবনধারণ কষ্টকর হবে।’’