কেউ এলেন হুইলচেয়ারে, কারও ভরসা অন্যের কাঁধ, কারও হাতে আবার হাঁটার বিশেষ যন্ত্র—রবিবার সেই সমস্ত মুখেই ফুটল উচ্ছ্বাস। অশোকনগরের একটি পুজো কমিটি দুর্গাপুজোর আগে সাজিয়ে দিল এক অস্থায়ী ‘শপিংমল’। ছিল নতুন পোশাক আর শিক্ষা সামগ্রীর সম্ভার। হাবড়া ও অশোকনগরের শতাধিক শিশু-কিশোর ও প্রতিবন্ধী মানুষেরা নিজেদের পছন্দমতো কেনাকাটা করলেন সেখানে। তবে কোনও দাম দিতে হয়নি ওঁদের। সমস্ত বিল মিটিয়েছে পুজো কমিটি।
মোট ৬৮ জন প্রতিবন্ধী মানুষ, ৫১ জন দুঃস্থ ছাত্রছাত্রী এ দিন নিজেদের পছন্দমতো নতুন পোশাক ও প্রয়োজনীয় শিক্ষা সামগ্রী বেছে নেন এই শপিংমল থেকে। নানা বয়সের ছেলেমেয়েদের জন্য পোশাক এনে সাজানো হয়েছিল দোকানের তাক।
অশোকনগরের পুটিয়া গ্রামের বছর পঁইতাল্লিশের অঞ্জলি ঘোষ বলেন, “অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া ছেলের জন্য শিক্ষা সামগ্রী নিলাম। নিজের জন্যও একটা চুড়িদার বেছে নিলাম। খুব ভাল লাগছে।”
কিশোর সূর্য মণ্ডল, কিঞ্জন দাস, সোহাগ ঘোষেরা জানায়, এটাই এ বছরের পুজোয় তাদের প্রথম নতুন পোশাক। বছর বারোর দেবশঙ্কর ভট্টাচার্য বলে, “ক্লাব থেকে পড়াশোনার খরচ চালানো হয়। আজ নতুন পোশাকও পেলাম। খুব আনন্দ হচ্ছে।’’
ক্লাব সম্পাদক সুপ্রিয় দাস বলেন, “পুজোর আলো-আড়ম্বরের মধ্যেও অনেকের মুখে আনন্দ থাকে না, নতুন পোশাক জোটে না। তাঁদের মুখে হাসি ফোটাতেই আমাদের এই উদ্যোগ।” আয়োজকদের দাবি, সমাজের প্রত্যেকেই যদি এ ভাবে সহনাগরিকদের পাশে দাঁড়ান, তবেই উৎসবের আনন্দ ভাগ করে নেওয়া সম্ভব হবে।
শুধু কেনাকাটাই নয়, শপিংমলের সামনে আয়োজন করা হয়েছিল গান-বাজনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও। শিশু কিশোরদের হইহল্লায় জমে ওঠে উৎসবের আবহ।