লুকোচুরি খেলা শেষ, অবশেষে গ্রেপ্তার কৃষ্ণনগরের কলেজছাত্রী খুনে মূল অভিযুক্ত দেশরাজ...
আজকাল | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: নদিয়ার কৃষ্ণনগরে ১৯ বছরের তরুণী ঈশিতা মল্লিক খুনের ঘটনায় অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়ল মূল অভিযুক্ত দেশরাজ সিংহ। রবিবার গভীর রাতে দেশরাজকে উত্তরপ্রদেশ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। ঘটনার পর থেকে প্রায় এক সপ্তাহ গা ঢাকা দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল সে।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত শনিবার গুজরাটের জামনগর থেকে গ্রেফতার করা হয় দেশরাজের মামা কুলদীপ সিংহকে। তাঁকে জেরা করে উঠে আসে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা যায়, ভাগ্নেকে পুলিশের হাত থেকে বাঁচাতে নানা পরিকল্পনা করেন কুলদীপ। দেশরাজ-কে গা ঢাকা দিতে সাহায্য করার পাশাপাশি, তাঁর জন্য নকল পরিচয়পত্র-সহ একাধিক জাল ডকুমেন্টও তৈরি করে দেন মামা কূলদীপ।
তবে শেষরক্ষা হল না, পুলিশের জালে ধরা পড়ল দেশরাজ। সূত্রের খবর, কুলদীপের ফোন ট্র্যাক করেই দেশরাজের অবস্থান চিহ্নিত করা যায়। এরপর রবিবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করে কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশের একটি বিশেষ দল।
উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট কৃষ্ণনগরের মানিকপাড়া এলাকায় দুলাল মল্লিকের বাড়িতে ঢুকে, আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে তাঁর কন্যা ঈশিতা মল্লিককে গুলি করে খুন করার অভিযোগ ওঠে দেশরাজ সিংহের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, প্রেমে ব্যর্থ হয়ে তিনি খুন করেন কৃষ্ণনগরের ওই কলেজছাত্রীকে খুন করেছেন। ঈশিতা কৃষ্ণনগর কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে আসে গোটা এলাকায়।
প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে, দেশরাজের সঙ্গে সম্পর্ক আর রাখতে চাননি তরুণী ঈশিতা। কিন্তু দেশরাজ সম্পর্ক রাখতে তরুণীর উপর জোর খাটান। তাঁকে হুমকি দিতে থাকেন বলে অভিযোগ। এমনকি, এক বার আত্মহত্যার চেষ্টা করছেন বলে ভিডিয়ো করে ঈশিতাকে পাঠিয়েছিলেন বলে খবর। যদিও তাতে মন গলেনি ওই তরুণীর। এরপরই প্রতিশোধের নেশা গ্রাস করে দেশরাজকে।
এই খুনের ঘটনার পর দেশরাজ উত্তরপ্রদেশের দেওরিয়ায় পৈতৃক বাড়িতে পালিয়ে যান বলে অনুমান করে পুলিশ। তারপরই সেই রাজ্যে গিয়ে দেশরাজের সন্ধানে তল্লাশি চালায় কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার একাধিক দল। পুলিশ জানিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনার কাঁচরাপাড়ায় ভাড়াবাড়িতে মা-বোনের সঙ্গে থাকত দেশরাজ। তাঁর বাবা বিএসএফ জওয়ান।
ঘটনার পরপরই দেশরাজ বেপাত্তা হয়ে যায়। পুলিশের তরফে দেশজুড়ে তল্লাশি শুরু হয়। অবশেষে উত্তরপ্রদেশ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ট্রানজিট রিমান্ডে দেশরাজকে কৃষ্ণনগরের কোতোয়ালি থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। অভিযুক্তকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে খুনের কিনারা করতে চাইছে পুলিশ।