রাজ্যের অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি) শংসাপত্র সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি সোমবার সুপ্রিম কোর্টে হওয়ার কথা থাকলেও, সময়ের অভাবে তা হয়নি। প্রধান বিচারপতি বিআর গবইয়ের বেঞ্চে ওই মামলার শুনানি নির্ধারিত থাকলেও, প্রথমার্ধে সময় না থাকায় এবং দ্বিতীয়ার্ধে অন্যান্য মামলার শুনানিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় ওবিসি মামলাটি তালিকাভুক্ত থাকলেও শুনানির সুযোগ আসেনি।
চলতি সপ্তাহেই ফের ওই মামলাটি শীর্ষ আদালতে শুনানির জন্য ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি, আগামী সপ্তাহে ওবিসি সংক্রান্ত মূল মামলারও শুনানি নির্ধারিত রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ২২ মে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এক ঐতিহাসিক রায়ে ২০১০ সালের পর পশ্চিমবঙ্গে দেওয়া সমস্ত ওবিসি শংসাপত্র বাতিল ঘোষণা করেন। হাইকোর্ট জানায়, ২০১০ সালের পরে যেসব জনগোষ্ঠীকে ওবিসি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল, সেই সংযোজন বৈধ সমীক্ষা ছাড়াই করা হয়েছিল বলে তা অগ্রহণযোগ্য।
হাইকোর্টের রায়ের ফলে রাজ্যজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় এবং এর প্রভাব পড়ে উচ্চশিক্ষা থেকে শুরু করে সরকারি চাকরির নিয়োগ পর্যন্ত। রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ফলপ্রকাশও বিলম্বিত হয়। যদিও সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে গত ২২ আগস্ট প্রকাশিত হয় জয়েন্টের ফল।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের আগে পর্যন্ত রাজ্যে মোট ৬৬টি জনগোষ্ঠীকে ওবিসি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া ছিল। ২০১০ সালে বাম সরকারের সময় আরও ৪২টি ও ২০১২ সালে তৃণমূল সরকারের আমলে আরও ৩৫টি জনগোষ্ঠীকে ওবিসি তালিকাভুক্ত করা হয়। কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে সেই তালিকাগুলিকে বাতিল করা হয়। নির্দেশ দেওয়া হয়, নতুন করে সামাজিক, আর্থিক ও পেশাগত সমীক্ষা চালিয়ে ওবিসি তালিকা প্রস্তুত করতে হবে।
হাইকোর্টের রায়ের পর রাজ্য সরকার একটি নতুন সমীক্ষা চালিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করলেও, তা নিয়েও ফের মামলা হয় এবং অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করে হাইকোর্ট। সেই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে গেলে, শীর্ষ আদালতও হাইকোর্টের রায়ের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয়।
সব মিলিয়ে, রাজ্যের ওবিসি শংসাপত্র ঘিরে তৈরি হওয়া জটিলতা এখনও কাটেনি। এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী শুনানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন আইনজীবী মহল। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর মামলাটির পরবর্তী শুনানি হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।