‘কেন আমরা দাগি?’ প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টে গেলেন ‘দাগি অযোগ্য’ প্রার্থীরা
দৈনিক স্টেটসম্যান | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) প্রকাশিত ‘দাগি অযোগ্য’ তালিকা নিয়ে ফের বিতর্ক। ওই তালিকাভুক্ত একাধিক প্রার্থী এবার প্রশ্ন তুলেছেন, কে তাঁদের ‘দাগি’ বলে চিহ্নিত করল, কীসের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত? এমনকি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তালিকা প্রকাশের পরও তাঁরা চাইলেন ফের পরীক্ষায় বসার সুযোগ। সেই দাবি নিয়েই সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে হাজির হয়েছেন ১৮০৬ জন ‘দাগি অযোগ্য’-র একাংশ।
সোমবার বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে মামলাটির বিষয়ে। মঙ্গলবার হতে পারে শুনানি। গত ২৯ আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, নির্ধারিত সময়েই এসএসসি-কে পরীক্ষা নিতে হবে এবং কোনও ‘দাগি অযোগ্য’ প্রার্থী যাতে তাতে না-অংশ নেয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। সেই অনুযায়ী সাত দিনের মধ্যে কমিশন শনিবার ‘দাগি’ প্রার্থীদের নাম প্রকাশ করে, সংখ্যাটি ছিল ১৮০৪। পরে রবিবার আরও দু’জনের নাম যুক্ত হওয়ায় তালিকায় বর্তমানে মোট নাম ১৮০৬টি।
লিস্টে নাম থাকা প্রার্থীদের বক্তব্য, তাঁদের ‘দাগি’ বলা হচ্ছে কোন প্রমাণে? তাঁদের যুক্তি, কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ আগে ‘যোগ্য’ ও ‘অযোগ্য’দের নাম আলাদা করে প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছিল। তাহলে কেন শুধুমাত্র ‘দাগি অযোগ্য’দের তালিকাই প্রকাশ করা হল? আর ‘যোগ্য’দের তালিকা কেন প্রকাশ করা হল না? এছাড়া মামলাকারীদের আইনজীবী আদালতে তুলে ধরেন, কয়েক দিন আগে পর্যন্ত এই ১৮০৬ জন পরীক্ষার ফর্ম জমা দিতে পেরেছিলেন। তখন কেন তাঁদের আটকানো হয়নি? প্রশ্ন তোলা হয়েছে, পরীক্ষা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলাকালীন যদি তাঁরা অংশ নিতে না পারেন, তবে সেটি কীভাবে ন্যায়সঙ্গত হয়?
প্রসঙ্গত, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই বহু প্রামাণ্য নথি, ওএমআর শিট সংগ্রহ করে। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই বহু প্রার্থীকে ‘দাগি’ বলে চিহ্নিত করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২৬ হাজার নিয়োগ বাতিল করে জানানো হয়, এই ‘দাগি’ প্রার্থীরা নতুন পরীক্ষাতেও বসতে পারবেন না এবং অতীতে পাওয়া বেতনও ফেরত দিতে হবে। তবে সেই রায়ের পরও আদালতের দ্বারস্থ হয়ে নিজেদের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন প্রার্থীরা। তাঁদের বক্তব্য, এই ‘চিহ্নিতকরণ প্রক্রিয়া’ যথেষ্ট স্বচ্ছ নয়। সত্যিই, কে ‘দাগি’? কে ‘অযোগ্য’? – সেই উত্তরই এখন খুঁজছে আদালত।