• অর্থনীতিতে মার্কিন শুল্কবাণের প্রভাব সীমিত, দাবি মোদির মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টার
    প্রতিদিন | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতীয় রপ্তানি পণ্যের ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডেনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপকে ঘিরে অর্থনৈতিক মহলে উদ্বেগ ছড়ালেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ভি আনন্দ নাগেশ্বরন দাবি করেছেন, অর্থনীতিতে এর প্রভাব সীমিত থাকবে। তাঁর মতে, আমেরিকা-মুখী রপ্তানি-নির্ভর শিল্পই প্রধানত এই আঘাত সামলাবে, তবে দেশজুড়ে বড় মাপের কর্মসংস্থান ক্ষতির আশঙ্কা নেই। সংবাদ সংস্থার খবর, তিনি বলেছেন, “যেসব রপ্তানি-কেন্দ্রিক শিল্পের মার্কিন বাজারে বড়সড় নির্ভরতা রয়েছে, কেবল সেখানেই চাকরি হারানোর সম্ভাবনা তৈরি হবে। তবে সেই ক্ষতিও খুব সীমিত থাকবে। পাশাপাশি এর প্রতিপূরণ অন্য দিক থেকেও হতে পারে। অনেক প্রতিষ্ঠান বিকল্প বাজার খুঁজে পেতে পারে, আবার কেউ কেউ দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েও এগোতে পারে, যাতে অস্থায়ী অনিশ্চয়তার কারণে শ্রমিক ছাঁটাই না করে কর্মীদের ধরে রাখে।”

    নাগেশ্বরনের বক্তব্য অনুযায়ী, মার্কিন শুল্ক বাড়ানোর ধাক্কা সামাল দিতে ভারতীয় অর্থনীতির সবচেয়ে বড় ভরসা গ্রামীণ চাহিদা। তিনি জানান, এ বছর ভাল বর্ষার কারণে কৃষি উৎপাদন বেড়েছে এবং গ্রামীণ ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে দেশীয় ভোগ চাহিদা বৃদ্ধি পাবে, যা বহিরাগত চাপের অভিঘাত অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে। তাঁর কথায়, “এমন নয় যে চাকরি হারালে তা ব্যাপক আকার নেবে। গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা থাকায় দেশীয় চাহিদা রপ্তানি ক্ষতির ভারসাম্য রক্ষা করবে।” এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের ওপর প্রথমে ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপান। পরে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি অব্যাহত রাখায় অতিরিক্ত আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। পাশাপাশি সতর্কবার্তা দিয়ে ওয়াশিংটন জানিয়েছে, মস্কোর সঙ্গে তেল বাণিজ্য চালালে ভারতের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দফার নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে।

    হোয়াইট হাউসের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পিটার নাভারো প্রকাশ্যে মন্তব্য করেন, “ইউক্রেনে শান্তির রাস্তা দিল্লি দিয়েই যায়।” এই বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ভারতকে কূটনৈতিকভাবে চাপে রাখতেই যুক্তরাষ্ট্র একের পর এক বাণিজ্যিক চাপ প্রয়োগ করছে। তবে ভারত জানিয়েছে, এই শুল্ক আরোপ অন্যায্য এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিধির পরিপন্থী। সরকারি মহলের আশা, দেশীয় বাজারের ভরসায় এবং কৌশলগত বিকল্প খুঁজে নিয়েই ভারত অর্থনীতির ওপর চাপ কমিয়ে আনতে সক্ষম হবে।
  • Link to this news (প্রতিদিন)