ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: সোমবার দুপুরে ধুন্ধুমার ধর্মতলায়। মেয়ো রোডের একাংশ সেনার এলাকা এবং কিছুটা রেলের এলাকা। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের ভাষা আন্দোলনের মঞ্চ খুলে দিয়েছে সেনাবাহিনী। খবর পেয়েই দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। মঞ্চ খোলার পিছনে বিজেপি-র হাত থাকার অভিযোগ তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সেনার জায়গা থেকে আন্দোলনের মঞ্চ খুলে অন্য যায়গায় সরিয়ে নেওয়া হবে। বিকল্প জায়গা হিসেবে রানি রাসমণি রোডের কথা জানিয়েছেন তিনি। যদিও তিনি জানিয়েছেন, পুজোর ভিড় থাকায় মানুষের যাতে সমস্যা না হয় সেটা মাথায় রেখেই মঞ্চ বানানো হবে।
মেয়ো রোডে দাঁড়িয়ে মমতার তোপ, “নরেন্দ্র মোদির যায়গায় আন্দোলন মঞ্চ করব না।” রানি রাসমণি রোডে ভাষা আন্দোলনের মঞ্চ সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন তৃণমূল নেত্রী। রাজনৈতিক সৌজন্যের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “মোদিবাবুর অনুমতি নিয়ে আমায় প্রোগ্রাম করতে হবে না। মানুষের পারমিশন নিয়ে আমি চলি। বিজেপি যখন বাইরে থেকে এসে প্রোগ্রাম করে আমরা এমনিই জায়গা দিয়ে দি। এটা সৌজন্য।” সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্যে তাঁর বার্তা, “আপনারা মানুষের গর্ব। বিজেপির হাতের পুতুল হয়ে নোংরা খেলায় নামবেন না।”
বিজেপি-কে সরাসরি আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, “আমরা রানি রাসমণি রোডে করব। বিজেপি পার্টি এখানে যা খুশি করতে পারে। এটা আপনাদের অনৈতিক অগণতান্ত্রিক কাজ। যেখানে আমি পাঁচ মিনিট দূরে বসে আছি। আমায় বললেন না?” তিনি বলেন, ” সেনার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। তবে সেনা চাইলে পুলিশকে জানাতে পারত অথবা আমাদের জানাত, আমরা অন্য জায়গায় করতে পারতাম। কিন্তু সেটা না করে গান্ধীর মূর্তির নিচে এই স্টেজ খুলে দিতে এল।” তাঁর অভিযোগ, “আমি যখন এলাম তখন আর্মির লোকেরা পালালো।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “সেনাবাহিনীর দোষ নেই। তারা আমাদের বন্ধু। বিজেপির কথায় তারা এই কাজ করেছে। বিজেপি সেনাকে রাজনৈতিক উদ্দেশে ব্যবহার করছে।”
সোমবার আচমকা সেনাবাহিনীর জওয়ানরা মেয়ো রোডে পৌঁছয়। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের সভামঞ্চে খুলে ফেলে সেনা। ছুঁড়ে ফেলা হয় ত্রিপল। খবর পেয়েই সেখানে ছুটে যান তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও মঞ্চ খোলা নিয়ে সেনার তরফে বিবৃতি, “এখানে ৩ দিনের বেশি কর্মসূচি করতে হলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অনুমতি নিতে হয়। দু’দিনের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। ওই মঞ্চ এক মাস ধরে রেখে দেওয়া হয়। আয়োজকদের কাছে মঞ্চ খোলার আবেদন জানানো হলেও খোলা হয়নি। কলকাতা পুলিশকে জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে সেনার তরফে মঞ্চ খোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”