কবে চালু হচ্ছে ‘শ্রমশ্রী পোর্টাল’? ঘোষণা মন্ত্রীর, শ্রমিকদের স্বার্থে পদক্ষেপ
হিন্দুস্তান টাইমস | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজ সোমবার ১ সেপ্টেম্বর থেকে চালু হচ্ছে রাজ্যের বহু প্রতীক্ষিত ‘শ্রমশ্রী পোর্টাল’। নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে এদিন শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক আনুষ্ঠানিকভাবে এই পোর্টালের সূচনা ঘোষণা করেন। মূলত বিজেপি-শাসিত একাধিক রাজ্যে নির্যাতিত ও হেনস্থার শিকার হয়ে ঘরে ফেরা বিপুল সংখ্যক বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা মাথায় রেখেই এই উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন তিনি।
শ্রমমন্ত্রী জানান, গত ২১ অগস্ট থেকেই অফলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছিল। ইতিমধ্যেই প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক তাঁদের আবেদন জমা দিয়েছেন। এবার থেকে সেই সমস্ত আবেদন ধাপে ধাপে পোর্টালে আপলোড করা হবে। যাঁরা অফলাইনে আবেদন করেছেন, তাঁদের কোনও অসুবিধা হবে না। পোর্টালের মাধ্যমে শ্রমিকেরা এখন অনলাইনে নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন, আবেদন জমা দেওয়ার পাশাপাশি সহজেই ট্র্যাক করতে পারবেন তাঁদের আবেদনের অগ্রগতি। সরকারি সূত্রে খবর, বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলার শ্রমিকদের উপর নানা ধরনের চাপ, হামলা, ভয় দেখানো এবং পুলিশি হয়রানির ঘটনা বাড়ছিল। অসম, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, হরিয়ানা ও রাজস্থানে বহু শ্রমিককে শুধুমাত্র বাংলা ভাষায় কথা বলার কারণে বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। অনেকে আটক হয়েছেন, আবার অনেককে জোর করে পুশব্যাক করা হয়েছে। ফলে কাজ হারিয়ে বহু মানুষকে রাজ্যে ফিরতে হয়েছে। তাঁদের কর্মসংস্থান ও আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই ‘শ্রমশ্রী প্রকল্প’ চালু করেছে রাজ্য।
এই প্রকল্পে নথিভুক্ত পরিযায়ী শ্রমিকেরা আগামী এক বছর প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা পাবেন। শুধু তাই নয়, পোর্টাল চালুর ফলে শ্রমিকদের একটি একক ডাটাবেস তৈরি হবে। এর ভিত্তিতে তাঁদের জন্য স্বাস্থ্যসুরক্ষা, বিমা, শিক্ষা ও অন্যান্য কল্যাণমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা সহজ হবে। প্রতিটি জেলা, ব্লক ও গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা হচ্ছে যাতে শ্রমিকরা দ্রুত প্রয়োজনীয় নথি সহ নাম নথিভুক্ত করতে পারেন। রাজনৈতিক মহলের মতে, বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলার শ্রমিকদের নির্যাতনের প্রসঙ্গ তুলে তৃণমূল একদিকে শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াচ্ছে, অন্যদিকে বিজেপির বিরুদ্ধে সরাসরি রাজনৈতিক বার্তাও দিচ্ছে। সব মিলিয়ে, ‘শ্রমশ্রী পোর্টাল’ চালুর মধ্য দিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের আর্থিক সুরক্ষায় রাজ্য সরকারের বড় পদক্ষেপ কার্যকর হচ্ছে। আগামী দিনে লক্ষাধিক শ্রমিক এই প্রকল্পের আওতায় আসবেন বলে আশা করছে শ্রম দফতর।