• ইন্টার্ন-দ্বন্দ্বের তদন্তে জাতীয় মহিলা কমিশন! মালদহ মেডিক্যাল কলেজে অভিযুক্ত এবং নিগৃহীতার সঙ্গে বৈঠক
    আনন্দবাজার | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ইন্টার্নদের দ্বন্দ্বের তদন্তে জাতীয় মহিলা কমিশন। সোমবার সকালে মেডিক্যাল কলেজে পৌঁছোন জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য অর্চনা মজুমদার। মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায়, সহ-অধ্যক্ষ প্রসেনজিৎ বর, মেডিক্যালের ইন্টার্ন এবং চিকিৎসকদের একাংশকে নিয়ে বৈঠকও করেন তিনি। পাশাপাশি তিনি কথা বলেছেন অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারিণীর বিরুদ্ধে।

    গত ২১ অগস্ট মেডিক্যালের বহির্বিভাগের সার্জিক্যাল বিভাগে ডিউটি নিয়ে এক মহিলা ইন্টার্নের সঙ্গে পুরুষ সহকর্মীর বচসা হয়। অভিযোগ, মহিলা ইন্টার্নকে হেনস্থা করেন ওই পুরুষ ইন্টার্ন। পাল্টা ওই অভিযুক্তকে মারধর করার অভিযোগ ওঠে মহিলা ইন্টার্নের এক বন্ধুর বিরুদ্ধে। এই ঘটনাকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়। ঘেরাও কর্মসূচিতে তেতে ওঠে মালদহ মেডিক্যাল কলেজচত্বর। মহিলা ইন্টার্ন ও তাঁর বন্ধু টিএমসিপি-ঘনিষ্ঠ বলে তাঁদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছেন না, এই অভিযোগে গত শুক্রবার রাতে মেডিক্যাল কলেজের প্রশাসনিক ভবনে ঘণ্টাপাঁচেক ঘেরাও করা হয়েছিল অধ্যক্ষকে। অধ্যক্ষের দফতরে অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে ব্যঙ্গচিত্র আঁকা হয়। চিকিৎসক-পড়ুয়াদের একাংশ দাবি করেন, আরজি কর কাণ্ডের পরে এক বছর কাটলেও চিকিৎসক-পড়ুয়াদের একাংশের তৃণমূল-ঘনিষ্ঠতার সুবাদে ‘হুমকি-প্রথা’ জিইয়ে রয়েছে মালদহ মেডিক্যালে।

    কমিটি গঠন করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। আসরে নামে বিজেপিও। এ বার তদন্ত শুরু করল জাতীয় মহিলা কমিশন। অর্চনা ওই নিগৃহীত মহিলা ইন্টার্নের সঙ্গে কথা বলেন। এখনও কাজে যোগ দেননি অভিযোগকারিণী। তবে ক্যাম্পাসে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘এত দিন যা যা ঘটেছে, তা জানতে চাওয়া হয় আমার কাছে। জাতীয় মহিলা কমিশনকে আমি সব কিছু বলেছি। আমি প্রমাণ দিয়েছি। উনি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। আমি আশা করছি, মেডিক্যাল কলেজের তদন্ত কমিটিও কার্যকরী পদক্ষেপ করবে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমার মানহানি হয়েছে। কলেজের সর্বত্র আমার নাম করে নোংরা পোস্টার সাঁটানো হয়েছিল।’’

    কমিশনের তরফে ডাকা হয়েছিল অভিযুক্ত ইন্টার্নকেও। তিনি বলেন, ‘‘কেন এমন ঘটনা হল, কী ভাবে হল এই সমস্ত তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে। কলেজকে আমি শো-কজ়ের জবাব দেব ৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে।’’ ওই ইন্টার্ন আরও বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। আমি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নই। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলি জড়িয়ে যাচ্ছে।’’

    মালদহ মেডিক্যাল কলেজ থেকে বেরিয়ে অর্চনা জানান, এত তাড়াতাড়ি বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত কথা বলতে পারবেন না। তবে যা ঘটেছে, তা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে জাতীয় মহিলা কমিশন। তিনি বলেন, ‘‘দুই ইন্টার্ন, যারা পরস্পরের সহকর্মী, তাদের লড়াই কী ভাবে এত বড় হয়ে গেল, সেটা ভাববার। কী ভাবে ভিক্টিমকে অধ্যক্ষের ঘরে আটকে রাখা হল, সেটা জানতে হবে। পুলিশের ভূমিকাও দেখা হচ্ছে। মহিলা ইন্টার্নের শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। এগুলো গুরুতর বিষয়। আমরা সকলের সঙ্গে কথা বলেছি।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)