• দু’দিনের অনুমতি চেয়ে একমাস ধরে মঞ্চ: বলল সেনা! মমতার জবাব: মোদীবাবুর অনুমতি নিতে পারব না কর্মসূচির জন্য
    আনন্দবাজার | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ধর্মতলায় গান্ধীমূর্তির পাদদেশে তৃণমূলের মঞ্চ কেন খুলে ফেলা হল, তার ব্যাখ্যা দিল ভারতীয় সেনা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন ধর্মতলার ভাঙা মঞ্চে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন, তখন সেনার তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়, গান্ধীমূর্তির পাদদেশে অনুষ্ঠান করার জন্য তৃণমূলকে দু’দিনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও প্রায় এক মাস ধরে সেখানে মঞ্চ বাঁধা ছিল। তাই খোলা হয়েছে। তবে সেনার বক্তব্য মানতে নারাজ মমতা।

    বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার এবং বাংলা ভাষার অপমানের প্রতিবাদে গান্ধীমূর্তির সামনে নানা কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছিল তৃণমূল। সেই মতো মঞ্চও বেঁধেছিল বাংলার শাসকদল। সোমবার দুপুরের পর তৃণমূলের সেই প্রতিবাদ মঞ্চ খুলে দেওয়া শুরু করেন জওয়ানেরা। সেনার তরফে জানানো হয়, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ময়দান এলাকায় দু’দিনের অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তারা আরও জানিয়েছে, ওই এলাকায় তিন বা তার বেশি দিনের অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অনুমতি নিতে হয়। সেনার এই বক্তব্যে আপত্তি জানান মমতা। তাঁর স্পষ্ট দাবি, ‘‘মোদীবাবুর (প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী) থেকে অনুমতি নিয়ে আমাকে কর্মসূচি করতে হবে না। আমি মানুষের থেকে অনুমতি নিয়ে কর্মসূচি করব।’’

    সেনা দাবি করেছে, দু’দিনের অনুমতি থাকলেও ময়দান এলাকায় মঞ্চটি প্রায় এক মাস ধরে বাঁধা ছিল। অস্থায়ী ওই কাঠামো সরিয়ে দেওয়ার জন্য আয়োজকদের বেশ কয়েক বার জানানো হয়েছে। কিন্তু তার পরও তা সরানো হয়নি। কলকাতা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। তার পরেই ভারতীয় সেনা মঞ্চ সরানোর কাজ শুরু করেছে। তবে মমতার দাবি, মঞ্চ সরানোর ব্যাপারে কারও সঙ্গে কথা বলা হয়নি। তৃণমূলনেত্রীর কথায়, ‘‘এ সব বাজে কথা।’’

    প্রতি শনি এবং রবিবার ধর্মতলায় গান্ধীমূর্তির সামনে প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করছে বাংলার শাসকদল। সেই মঞ্চ ভেঙে দেওয়ার খবর পেয়েই সোজা গান্ধীমূর্তির সামনে পৌঁছে যান মমতা। ভাঙা মঞ্চ থেকে তিনি এই ঘটনার প্রতিবাদ করেন। তবে সরাসরি সেনাকে আক্রমণ করেননি মমতা। বরং সেনার কথা বলার সময় তাঁর ভাষা এবং সুর ছিল অনেকটাই সংযত। তিনি বলেন, ‘‘আমার আর্মির বিরুদ্ধে কোনও ক্ষোভ নেই। কারণ, আমরা সেনাকে নিয়ে গর্বিত।’’ মমতার মতে, সেনার এই মঞ্চ খোলার নেপথ্যে রয়েছে বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ‘‘সেনাকে যখন বিজেপির কথায় চলতে হয়, তখন দেশটা কোথায় যায়, তা নিয়ে সন্দেহ জাগে!” মমতার দাবি, যদি মঞ্চ খোলার ব্যাপারে তাঁকে বা তাঁর দলকে জানানো হত, তবে এক মিনিটের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হত। তার পরেই তৃণমূলনেত্রীর আক্রমণ, ‘‘সরি টু সে, এটা আর্মি নয়, পিছে মে ক্যায়া হ্যায়? ছুপা রুস্তম বিজেপি হ্যায়।” রাজনৈতিক স্বার্থে সেনাকে ব্যবহারের চেষ্টা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)