• কাফা নেশনস কাপে ইরানের কাছে ৩ গোলে হার ভারতের, তবু লড়াই করে সমীহ আদায় খালিদের দলের
    আনন্দবাজার | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ১১২ ধাপ উপরে থাকা ইরানের বিরুদ্ধে কাফা নেশনস কাপে নেমেছিল ভারত। লক্ষ্য ছিল এশিয়ার সেরা ফুটবলখেলিয়ে দেশের বিরুদ্ধে লড়াই করে সমীহ আদায় করা। তবে শেষ কয়েক মিনিটে রক্ষণের একাধিক ভুলে পুরোপুরি সমীহ আদায় করতে পারলেন না সন্দেশ জিঙ্ঘনেরা। ইরান জিতল ৩-০ গোলে। গোল করলেন আমিরহোসেন, আলিপোরঘার এবং তারেমি।

    কমজোরি প্রতিপক্ষ হওয়ায় ভারতের বিরুদ্ধে আগ্রাসী খেলার ছক নিয়েই নেমেছিল ইরান। তৃতীয় মিনিটে ইরানের বক্সে বল নিয়ে আশিক কুরুনিয়ন ঢুকে গিয়েছিলেন। সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। এর পর শুধুই ইরানের দাপট। ছ’মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে চেশমির শট বাঁচান গুরপ্রীত সিংহ সান্ধু। ধীরে ধীরে চাপ বাড়াতে থাকে ইরান। পর পর তিনটি কর্নার পায় তারা। প্রতিটি কর্নারের ক্ষেত্রেই গোল হওয়ার সুযোগ ছিল। ইরান কাজে লাগাতে পারেনি।

    ১৭ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে শট নিয়েছিলেন ইরানের ওমিদ নোর আফকান। পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে বল বেরিয়ে যায়। সাত মিনিটে ভারতও একটি সুযোগ নষ্ট করে। সুরেশের কর্নার ইরান ক্লিয়ার করলেও ফিরতি বলে শট নিয়েছিলেন নিখিল প্রভু। সেটি ইরানের এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে আবার কর্নার হয়ে যায়। ২৯ মিনিটের মাথায় ওমিদের শট বাঁচান গুরপ্রীত।

    জলপানের বিরতি কিছুটা স্বস্তি বয়ে আনে ভারতীয় দলে। তারা ধীরে ধীরে ইরানের আগ্রাসন কিছুটা কমিয়ে দেয়। বলের নিয়ন্ত্রণ ইরানের কাছে থাকলেও, ভারতের রক্ষণকে মজবুত লাগছিল। খেলার গতি কমিয়ে দিতে থাকে তারা। দু’-একটি সুযোগও তৈরি করে। বিরতির তিন মিনিট আগে আরও একটি গোলের সুযোগ পেয়েছিল ইরান। নাদেরির ক্রস ইরানের এক ফুটবলার হেড করেছিলেন। তা লক্ষ্যে ছিল না। ফিরতি বলে ইরানের আর এক ফুটবলার শট নিলেও তা ক্লিয়ার করে দেয় ভারতের রক্ষণ।

    ইরানের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ভারতের অস্ত্র ছিল রক্ষণ। ভারত চাইছিল মাঝমাঠ এবং রক্ষণে লোক বাড়িয়ে বিপক্ষের গতি থামিয়ে দেওয়ার। দ্বিতীয়ার্ধে সেই কাজই করতে থাকে তারা। খালিদ জামিল দলকে সাজিয়েছিলেন ৪-৩-৩ ছকে। দরকার সেটাই বদলে ৪-৫-১ হয়ে যাচ্ছিল। তবু ইরানের গোল আটকাতে পারেনি ভারত। বাঁ দিক থেকে ক্রস তুলেছিলেন জ়াদেগান। রাহুল ভেকে সেই ক্রস ক্লিয়ার করতে পারেননি। গোল করেন আমিরহোসেন এসফান্দিয়ার। প্রায় এক ঘণ্টায় প্রয়াসে গোলের মুখ খোলে ইরান।

    ৭৩ মিনিটে দলের দুই তারকা ফুটবলার আলিরেজা জাহানবখশ এবং মেহদি তারেমিকে নামিয়ে দেন ইরানের কোচ। তাদের আক্রমণও বাড়তে থাকে। আক্রমণ বাড়াতে জিতিন এমএস-কে নামিয়ে দেন খালিদ। আশিকের জায়গায় আনেন লালিয়ানজুয়ালা ছাংতেকে। মাঠে নামার পরেই মাঝমাঠ থেকে একটি বল নিয়ে উঠে নাওরেম মহেশকে পাস বাড়িয়েছিলেন। তবে মহেশ বল রিসিভ করার আগেই বিপক্ষ গোলকিপার তা বিপন্মুক্ত করেন।

    নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার এক মিনিট আগে দ্বিতীয় গোল করে ইরান। তারেমি বল বাড়িয়েছিলেন জাহানবখশকে। তাঁর শট বাঁচিয়ে দেন গুরপ্রীত। ফিরতি বলে ইরানের আর এক ফুটবলারের শট পোস্টে লাগে। সেখান থেকে নিখুঁত শটে গোল করেন আলি আলপোরঘারা।

    এর পর হঠাৎই আক্রমণের ঝাঁজ বাড়িয়ে দেয় ইরান। একের পর এক ভুল করতে থাকে ভারত। ম্যাচের বেশির ভাগ সময় ধরে রক্ষণ মজবুত রাখলেও শেষ দিকে এসে তা ভেঙে পড়ে। সুযোগ কাজে লাগাতে ছাড়েনি ইরান। সংযুক্তি সময়ের শেষ মিনিটে তৃতীয় গোল করে তারা। মাঝমাঠ থেকে তারেমিকে বল সাজিয়ে দিয়েছিলেন জাহানবখশ। সেই বল থেকে হালকা টোকায় গুরপ্রীতকে পরাস্ত করে বল জালে জড়ান তারেমি।

    গ্রুপের শীর্ষে শেষ করে ইরানের ফাইনালে যাওয়া কার্যত নিশ্চিত। ভারতের লক্ষ্য দ্বিতীয় স্থানে শেষ করা, যাতে তৃতীয় স্থান নির্ণায়ক ম্যাচে খেলতে পারেন। ভারতের শেষ ম্যাচ আফগানিস্তানের সঙ্গে, ৪ সেপ্টেম্বর। সেই ম্যাচে বড় ব্যবধানে জিততে পারলে গ্রুপে দ্বিতীয় স্থানে শেষ করার সম্ভাবনা বাড়বে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)