• ‘…অভিজ্ঞতা খুবই খারাপ’! সৃজিতকে নিয়ে বিস্ফোরক বাংলাদেশের বাঁধন, ফাঁস করলেন তিক্ত অতীত
    আজকাল | ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ২০২১ সাল। মুক্তি পায় ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি।’ সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় প্রথম কলকাতায় কাজ করেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত অভিনেত্রী আজমেরি হক বাঁধন। সিরিজটি দর্শকমহলে বিশেষ প্রশংসিত না হলেও, মুসকান জুবেরি চরিত্রে ওপার বাংলার বাঁধনের লাস্য এবং আবেদন মনে ধরেছিল দর্শকের। কিন্তু যে কাজ করে এত প্রশংসা, পুরস্কার, তার অভিজ্ঞতা অভিনেত্রীর কাছে বিশেষ সুমধুর নয়। সম্প্রতি বাংলাদেশের এক সংবাদমাধ্যমকে তেমনই জানিয়েছেন তিনি।

    বাঁধন বলেন, “আমার সৃজিতের সঙ্গে কলকাতায় শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা প্রচণ্ড খারাপ। ওই ইউনিটের সঙ্গে আমার অভিজ্ঞতা খুবই খারাপ। কিন্তু সেখানে যদি এমন কেউ থেকে থাকেন, যাঁরা আমাকে সাপোর্ট করেছেন, তাঁরা হলেন সিরিজের সিনেম্যাটোগ্রাফার, কেশবিন্যাসশিল্পি এবং রাহুল বোস। ওঁরা আমার পাশে থেকেছেন। ওঁদের সেই সাপোর্ট আমি সারা জীবন মনে রাখব। কারণ ওই সময়টা তো আমার জীবনে কখনও আসবে না।”

    বাংলাদেশ থেকে উঠে আসা বাঁধন ‘রেহানা মরিয়ম নূর’-এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক স্তরে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন। অন্যদিকে সৃজিত তাঁর ধারালো কাহিনি বলা আর ব্যতিক্রমী চরিত্র নির্মাণের জন্য সমানভাবে সমাদৃত। তাঁদের একসঙ্গে কাজ যে নিঃসন্দেহে এক অনন্য সৃজনশীল মেলবন্ধন, তা নিয়ে নিশ্চিত ছিলেন দর্শক। কিন্তু বাঁধনের এই তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা ছিল আড়ালেই।

    বাঁধন বাংলাদেশের বিনোদন জগতের এক বহুমুখী প্রতিভা। অল্প বয়সেই তিনি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সকলের নজর কেড়েছিলেন। এরপর নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শক হৃদয়ে জায়গা করে নেন। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘চৈতা পাগলা’, ‘শুভ বিবাহ’, ‘চাঁদ ফুল অমাবস্যা’, ‘রং’ এবং ‘হিজিবিজি নাথিং’।

    অভিনয়ের পাশাপাশি বাঁধনের আরেকটি আগ্রহের জায়গা ডেন্টাল প্র্যাকটিস। তবে শিল্পীসত্তাই তাঁকে বেশি করে টেনে এনেছে পর্দার জগতে। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি মূলত টেলিভিশন নাটক নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও নিজের পায়ের তলার জমি শক্ত করেছেন। ২০২৩ সালে বাঁধন বলিউডে অভিষেক করেন বিশাল ভরদ্বাজ পরিচালিত খুফিয়া ছবির হাত ধরে। টাবু এবং আলি ফজলের মতো নামী অভিনেতাদের সঙ্গে সমানতালে অভিনয় করে পৌঁছে যান নতুন উচ্চতায়।

    অন্য দিকে, সৃজিত ব্যস্ত নতুন ছবির প্রস্তুতিতে। নাম ‘এম্পারার ভার্সেস শরৎচন্দ্র’। ‘এম্পারার ভার্সেস শরৎচন্দ্র’ ছবি প্রসঙ্গে আজকাল ডট ইন-কে পরিচালক জানালেন, আগামী বছর শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ উপন্যাস প্রকাশিত হওয়ার শতবর্ষ। ১৯২৬ সালের ৩১ অগাস্ট এই বই প্রকাশিত হয়েছিল। ইংরেজ সরকার বইটিকে নিষিদ্ধ করে দেয় ১৯২৭ সালের জানুয়ারি মাসে। ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠা, বই নিষিদ্ধ হওয়া এবং সমাজে তার প্রভাব, পুরোটা নিয়েই এই ছবি। পরিচালকের উদ্দেশ্যে প্রথম প্রশ্ন ছিল, কেন শরৎচন্দ্রকে তিনি বাছাই করলেন? কারণ ইংরেজরা তো বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মতো সাহিত্যসম্রাটের উপন্যাস, বই নিষিদ্ধ করেছিল। পরিচালকের অননুকরণীয় ভঙ্গিমায় জবাব, “সেই সময় শুধু বাংলার নয়, গোটা ভারবর্ষের সবথেকে জনপ্রিয় লেখক ছিলেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি। তাঁর লেখা থেকে মঞ্চসফল নাটক হচ্ছে, সিনেমা হচ্ছে, তাঁর লেখা নভোলে ইংরেজিতে অনুবাদ হয়ে বেরোচ্ছে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে...সেরকম সাফল্যের তূরীয় পর্যায়ে বসে সেই মানুষটি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে যেভাবে গর্জে উঠছেন, সেটা ভীষণ ইন্সপায়ারিং!”
  • Link to this news (আজকাল)