সরকারি বাসভবন ছেড়ে দিচ্ছেন প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি, ধনখড়ের গন্তব্য ফার্মহাউস?...
আজকাল | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: উপরাষ্ট্রপতির পদ ছেড়েছেন আগেই। তাঁর সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশের রাজনীততে জোর জলঘোলা হয়েছিল। তাঁর পরবর্তীতে কে দেশের উপরাষ্ট্রপতি হবেন, তা নিয়ে জল্পনা ছিল। তার অবসানও ঘটেছে। এনডিএ, ইন্ডিয়া জোট, দু পক্ষই প্রার্থী নাম ঘোষণা করেছে। মাঝে বেশকিছু সময় আলোচনার বাইরেই ছিলেন ধনখড়। তবে সোম সন্ধেয় তিনি ফের চর্চায়। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, দীর্ঘ অপেক্ষার পর, দেশের প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় তাঁর সরকারি বাসভবন ছেড়ে দিচ্ছেন।
তাঁর পরবর্তী গন্তব্য? জানা গিয়েছে, আপাতত তিনি দক্ষিণ দিল্লির ছত্তরপুর এনক্লেভে অবস্থিত ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল লোকদল (আইএনএলডি) প্রধান অভয় সিং চৌতালার একটি ফার্মহাউসে তিনি থাকবেন। স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে ২১শে জুলাই সংসদের বর্ষাকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনেই ধনখড় উপরাষ্ট্রপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন তিনি। তারপর এক মাসের বেশি সময় কেটে গিয়েছে। তিনি উপরাষ্ট্রপতির বাসভবনেই ছিলেন মাঝের সময়কালে। সূত্রের খবর, প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে তাঁর একটি বাসভবন প্রাপ্য। এতদিন তিনি ওই বাসভবনের চাবির অপেক্ষাই করছিলেন। তা মেলেনি। আপাতত তাই গন্তব্য খামারবাড়ি।
সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, ধনখড়ের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, এই মাঝের সময়কালে তিনি তার পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন, টেবিল টেনিস খেলেছেন, যোগব্যায়াম করছেন। ধনখড় রাজস্থান বিধানসভা থেকে প্রাক্তন বিধায়ক হিসেবে তার পেনশন পুনরায় চালু করারও দাবি জানিয়েছেন বলেও খবর সূত্রের।
তথ্য, ৭৪ বছর বয়সী ধনখড় চিকিৎসা সেবা এবং ভ্রমণ ভাতার মতো সুযোগ-সুবিধা ছাড়াও প্রতি মাসে ৪২,০০০ টাকা পেনশন পাওয়ার যোগ্য। রাজ্য বিধানসভা থেকে প্রাপ্ত পেনশনের পাশাপাশি তিনি প্রাক্তন উপ-রাষ্ট্রপতি এবং প্রাক্তন সাংসদ হিসেবেও পেনশন পাবেন।
ধনখড়ের পর কে হবেন দেশের ভবিষ্যত উপরাষ্ট্রপতি? সেই নির্বাচন হবে ৯ সেপ্টেম্বর। উপরাষ্ট্রপতি পদের লড়াইতে সিপি রাধাকৃষ্ণণকে প্রার্থী করেছে এনডিএ। দক্ষিণী অস্মিতাকে উস্কে দেওয়া হয়েছে। জোটের ধর্ম মানতে গিয়ে কার্যত দ্বিধায় পড়েছিল ডিএমকে। এবার পাল্টা দক্ষিণী তাস কেলেছে বিরোধী 'ইন্ডিয়া' জোটও। তারা প্রার্থী করেছে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিবি সুদর্শন রেড্ডিকে। তিনি অবিভক্ত অন্ধপ্রদেশের ভূমিপুত্র। ফলে এখন বেকায়দায় এনডিএ শরিক তথা কেন্দ্রীয় সরকারের জিওনকাঠি চন্দ্রবাবু নাইডুর নেতৃত্বাধীন টিডিপি। জোটের ধর্ম মানবে নাকি অন্ধ্র অস্মিতাকে সমর্থন করবে অন্ধ্রের শাসক দল? এই প্রশ্নেই এখন জোর চর্চা।
বি সুদর্শন রেড্ডি অন্ধ্রপ্রদেশের রাঙ্গারেড্ডি জেলার বাসিন্দা এবং অতীতে আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৯৫ সালে তিনি অন্ধ্রপ্রদেশ হাইকোর্টের বিচারক নিযুক্ত হন এবং ২০০৫ সালে গৌহাটি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হন। ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিযুক্ত হন এবং ২০১১ সালের জুলাই মাসে অবসর গ্রহণ করেন। এরপর, তিনি গোয়ার প্রথম লোকায়ুক্ত হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
সংখ্যার দিক থেকে দেখলে, উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপি এগিয়ে আছে। উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করা হয় লোকসভা এবং রাজ্যসভার সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত একটি নির্বাচনী কলেজের মাধ্যমে। শূন্যপদ বাদে বর্তমান নির্বাচনী কলেজের ৭৮২ জন সদস্য রয়েছে। এর অর্থ হল বিজয়ী দলের কমপক্ষে ৩৯২ ভোট থাকা প্রয়োজন।
লোকসভায় এনডিএ-র ২৯৩টি এবং রাজ্যসভায় ১৩৩টি আসন রয়েছে। সংখ্যার দিক থেকে দেখলে, বিজেপি স্বাচ্ছন্দ্যে সিপি রাধাকৃষ্ণণকে উপরাষ্ট্রপতির কুর্সিতে বসাতে পারবে। তবে এনডিএ-র একদল সাংসদ বিদ্রোহ করে বিরোধী প্রার্থীর পক্ষে ভোট দিলে অবশ্য পরিস্থিতি বদলে যাবে।