• চারধাম ও হেমকুণ্ড যাত্রা সাময়িকভাবে বন্ধ! প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্রমে বিপর্যস্ত উত্তরাখণ্ড, জারি লাল সতর্কতা ...
    আজকাল | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  •  

    আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তরাখণ্ডের চারধাম যাত্রা ও হেমকুণ্ড সাহিব যাত্রা ৫ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করেছে রাজ্য সরকার। প্রবল বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস এবং আবহাওয়া দপ্তরের জারি করা রেড ও অরেঞ্জ অ্যালার্টের কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামির সচিব এবং গঢ়ওয়াল বিভাগের কমিশনার বিনয় শংকর পাণ্ডে জানিয়েছেন যে, আগামী কয়েকদিনে প্রচণ্ড ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কায় এটি একটি সতর্কতামূলক পদক্ষেপ।

    সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ভূমিধস এবং ধ্বংসস্তূপের কারণে সড়ক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। প্রশাসন প্রাধান্য ভিত্তিতে রাস্তা খোলার কাজ করছে, তবে যাত্রীদের নিরাপত্তা এবং সুবিধার কথা মাথায় রেখে চারধাম ও হেমকুণ্ড সাহিব যাত্রা সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। খবর মারফত, যাত্রীদের অনুরোধ করা হয়েছে এই সময়ে যাত্রা পথে না বেরোতে এবং প্রশাসনের জারি করা নির্দেশিকা মেনে চলতে।

    আবহাওয়া দপ্তর ইতিমধ্যেই সোমবার দেরাদুন, টেহরি, পৌরি এবং হরিদ্বার জেলায় রেড অ্যালার্ট জারি করেছে এবং আগামীকাল ২রা সেপ্টেম্বর দেরাদুন, উত্তরকাশী, রুদ্রপ্রয়াগ, চামোলি ও বাগেশ্বরের জন্য অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে দেরাদুন, টেহরি, পৌরি এবং চম্পাওয়াত সহ বেশ কয়েকটি জেলায় স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

    মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি রবিবার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বলেন যে, সামনের দিনগুলো চ্যালেঞ্জিং হতে চলেছে এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও পুনর্বাসন সচিব বিনোদ কুমার সুমনকে রাজ্য ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার (SEOC) থেকে পরিস্থিতি মনিটর করার নির্দেশ দিয়েছেন। ভূমিধস ও জলাবদ্ধতার আশঙ্কায় সব ধরনের প্রস্তুতি রাখতে বলা হয়েছে।

    ধামি আরও জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগে যাদের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের জন্য অবিলম্বে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে এবং তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ত্রাণ শিবিরে সমস্ত প্রাথমিক প্রয়োজনীয়তা নিশ্চিত করার জন্য কাজ চলছে। একই সঙ্গে বন্ধ রাস্তা খোলার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

    গত কয়েক দিনে জম্মু ও কাশ্মীর, হিমাচল প্রদেশ, পাঞ্জাব এবং উত্তরাখণ্ডে মেঘভাঙা বৃষ্টি, ভূমিধস এবং হঠাৎ বন্যার কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি পরিস্থিতি মূল্যায়নের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ইন্টার-মিনিস্টেরিয়াল সেন্ট্রাল টিম (IMCT) গঠন করেছে।

    ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তরের মহাপরিচালক মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানিয়েছেন, উত্তরাখণ্ডে অনেক নদীর উৎপত্তিস্থল হওয়ায় প্রবল বৃষ্টিপাত মানে নদীগুলোতে জলস্তর বেড়ে যাবে, যা নিম্নপ্রবাহের শহর ও গ্রামে প্রভাব ফেলবে।

    অন্যদিকে, রবিবার উত্তরাখণ্ডের পিথোরাগড় জেলায় ধৌলিগঙ্গা বিদ্যুৎ প্রকল্পে ভূমিধসের কারণে ন্যাশনাল হাইড্রোইলেকট্রিক পাওয়ার কর্পোরেশন (NHPC)-এর ১৯ জন কর্মচারী কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎকেন্দ্রে আটকে পড়েন। ভূমিধসের কারণে প্রকল্পের সাধারণ ও জরুরি সুড়ঙ্গ বন্ধ হয়ে যায়। তবে প্রশাসনের প্রচেষ্টায় সন্ধ্যার মধ্যে সবাইকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়।

    এহেন পরিস্থিতিতে প্রশাসন এবং সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে আগামী কয়েকদিনের জন্য পাহাড়ি অঞ্চলে যেকোনও ধরনের ভ্রমণ এড়িয়ে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে।
  • Link to this news (আজকাল)