পনিরের তরকারিতে লটপট করছে ওটা কী! যোগী রাজ্যের যে ঘটনা সামনে এল, দেখে গা গুলিয়ে উঠছে নেটিজেনদের...
আজকাল | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: এই প্রথম নয়। এর আগেও এই ঘটনা ঘটেছে বারে বারে। পছন্দের রেস্তোরাঁ থেকে খাবার অর্ডার করে তার মধ্যে ইঁদুর, আরশোলার উপস্থিতির অভিযোগ করেছেন বহু ক্রেতা। এবার ফের, একই অভিযোগ। এবার ঘটনাস্থল উত্তরপ্রদেশ।
জানা গিয়েছে, যোগী রাজ্যের এক ধাবায় খেতে গিয়েছিলেন দুই যুবক। খাবার অর্ডার করেন নিজেদের পছন্দের, পনিরের রেসিপি। কিন্তু বিপত্তি বাধে খাবার দেওয়ার পর। ওই দু' জনের অভিযোগ, রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ খাবার দেওয়ার পরে, তাঁরা খেতেও শুরু করেছিলেন। আচমকা আবিষ্কার করেন, খাবারের মধ্যে লুটোপুটি খাচ্ছে মরা ইঁদুর। তাঁরা একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন ওই ঘটনার। তাতে দেখা গিয়েছে, পনিরের ওই খাবারের মধ্যে তেজপাতা, আর তা সরাতেই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে একটি মরা ইঁদুর। যদিও ওই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি আজকাল ডট ইন। তবে অভিযোগ, ওই খাবারই তাঁদের দিয়েছিল রেস্তোরাঁ থেকে।
বিলসি শহরের বাসিন্দা নিশান্ত মহেশ্বরী জানিয়েছেন যে, তিনি তাঁর বন্ধু পুনীতকে নিয়ে বিলসির আনমোল ধাবায় খেতে গিয়েছিলেন। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ধাবা কর্তৃপক্ষের কাছে এই বিষয়ে অভিযোগ করেন এবং জানান, তিনি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করবেন। বিলসির সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট (এসডিএম) প্রেম পাল সিং বলেছেন যে তিনিও ভিডিওটি দেখেছেন কিন্তু এখনও কোনও লিখিত অভিযোগ পাননি। এসডিএম জানিয়েছেন, ভিডিওটি পরীক্ষা করা হচ্ছে, এবং অন্যান্য হোটেল ও রেস্তোরাঁর অন্যান্য খাবারও পরীক্ষা করা হবে।
এই ঘটনা প্রথম নয়, প্রথম নয় এই অভিযোগ। জুলাই মাসে পুনের অন্যতম প্রাচীন এবং জনপ্রিয় খাদ্য প্রতিষ্ঠান ক্যাফে গুডলাক-এর বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ সামনে আসে। ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ক্যাফেতে পরিবেশিত একটি খাবারের ভেতরে কাঁচের টুকরো বের করেছেন ক্যাফেটিতে খেতে যাওয়া কয়েকজন। ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই নেটিজেনদের মন্তব্যের ঝড় ওঠে সেই সময়ে৷
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, এক দম্পতি ক্যাফেতে খেতে গিয়েছিল। তাঁরা নিত্যদিনের মত খাবার অর্ডার দেন। এরপর খাবার আসতেই তাঁদের চোখ কপালে৷ অর্ডার দেওয়া খাবারের মধ্যে থেকে একটি কাঁচের টুকরো বার করেন। এহেন অবস্থায় তাঁরা ক্যাফেতে বসেই গোটা ঘটনাটি ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন। মুহূর্তের মধ্যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে পড়ে। ফলস্বরূপ সমাজমাধ্যমে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
ঘটনার প্রেক্ষিতে মহারাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FDA) বিষয়টি লক্ষ্য করে। ঘটনার জেরে দ্রুত ক্যাফেটিতে তদন্ত চালায় তারা। এফডিএ-এর যুগ্ম কমিশনার সুরেশ অন্নাপুরে ঘটনাপ্রসঙ্গে জানিয়েছিলেন, 'একটি তদন্ত পরিচালনা করা হয়েছিল। এই অভিযান চলাকালীক আমরা কিছু অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতির সন্ধান পেয়েছি।' তিনি আরও বলেন, 'ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে ক্যাফের লাইসেন্স সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এটি বন্ধ থাকবে। ক্যাফে কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি ও নিয়ম মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।'
আগস্ট মাসেই উত্তর প্রদেশের কানপুরের জিটি রোড এলাকার একটি ধাবার বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ ওঠে। এলাকার একটি স্থানীয় ধাবা থেকে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। ভিডিওটিতে দেখা যায়, তন্দুরি রুটির মধ্যে সম্পূর্ণ একটি বাচ্চা গেছো টিকটিকি রান্না হয়ে মিশে গিয়েছে। এই ঘটনার ভিডিও দেখে নেটিজেনদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে৷ ভিডিওতে দেখা যায়, এক গ্রাহক রুটি মোড়ানো অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল খুলে দেখাচ্ছেন। তিনি দেখাচ্ছেন যে রুটির মধ্যে একটি মরা টিকটিকির মাথা বেরিয়ে আছে। তিনি রুটি ধরে ক্যামেরার সামনে দেখিয়ে বলেন, 'ছিপকলী কা পুরা বাচ্চা হ্যায়। ছোটি-মোটি চিজ নহি হ্যায় জো দিখাই না পড়ি হো, বহুত বড়ি চিজ হ্যায় ইয়ে।' তিনি আরও বলেন, এই দূষিত রুটি খেয়ে তাঁর পরিবারের সদস্যরা বমি করেছেন।
ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পরপরই, এটি নেটপাড়ায় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে। ঘটনার জেরে অনেকে ধাবাটির বিরুদ্ধে কড়া সমালোচনা করেন। পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। একজন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'এটা খুবই নিন্দনীয় এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ।' আরেকজন মন্তব্য করে বলেন, 'এই ধরনের রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে দেওয়া উচিৎ।' কেউ কেউ বলেন, 'ধাবাটির বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই এফআইআর করা উচিৎ।' একজন বিদ্রুপ করে লেখেন, 'এই ধাবাকে এখুনি বয়কট করুন।'