• বক্সায় ফের হাতির মৃত্যু, কীভাবে জানলে চমকে যাবেন 
    আজকাল | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক:‌ ফের হাতি মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। বক্সা এলাকায়। জানা গেছে, বক্সা টাইগার রিজার্ভের জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় বেআইনি বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে হাতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে বন দপ্তর। আলিপুরদুয়ার জেলার কালচিনি ব্লকের বিজয়পুর এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে এক পূর্ণবয়স্ক হাতির। সুপারি বাগান বাঁচানোর জন্য তার চারপাশে টানা বৈদ্যুতিক বেড়ায় ঘিরে রাখা হয়েছিল। সেই বেড়ায় জড়িয়ে হাতিটি প্রাণ হারায় বলে জানতে পেরেছে বন দপ্তর।

    স্থানীয় সূত্রে খবর, বন্যপ্রাণীর হাত থেকে সুপারি বাগান রক্ষার জন্য বিদ্যুতের তার জড়িয়ে বেড়া বসান এক ব্যক্তি। অভিযোগ উঠেছে, অবৈধভাবে বিদ্যুতের তার টেনে বেড়া বসিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। আর সেই তারে জড়িয়েই হাতিটির মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে নিশ্চিত করেছে বন দপ্তর। খবর পেয়ে বনকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃত হাতিটির দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যান। বেআইনিভাবে বৈদ্যুতিন বেড়া লাগানোর অভিযোগে, বাগান মালিকের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে বন দপ্তর।

    প্রসঙ্গত, আলিপুরদুয়ার সহ ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকায় চা ও সুপারি বাগানের ফসল রক্ষার জন্য বৈদ্যুতিক বেড়া ব্যবহারের প্রবণতা নতুন নয়। এর ফলে প্রায়ই হাতি এবং অন্যান্য বন্যপ্রাণীর মৃত্যু হচ্ছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফের একবার সামনে চলে এসেছে মানুষের সঙ্গে বন্যপ্রাণীর সংঘাতের চিত্র। স্থানীয়দের দাবি, ফসল রক্ষার বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ভবিষ্যতে এধরনের মর্মান্তিক দুর্ঘটনা আরও বাড়তে পারে। এটা ঘটনা, এর আগেও এই অঞ্চলে বিদ্যুতের শক লেগে বন্যপ্রাণীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বন দপ্তর থেকে বারবার স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও সমস্যার সমাধান হয়নি এখনও।

    প্রসঙ্গত, এই অভিযোগও রয়েছে যে আলিপুরদুয়ারের বনাঞ্চল সংলগ্ন এলাকাগুলিতে একের পর এক হাতির হানায় প্রাণ হারাচ্ছেন মানুষ। তবে মৃত্যুর পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করতে গিয়ে এবার নতুন একটি তথ্য উঠে এসেছে বন দপ্তরের হাতে। তথ্য অনুযায়ী, যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের একটি বড় অংশ সেই সময় নেশাগ্রস্ত ছিলেন।গত তিন মাসে জেলার বিভিন্ন এলাকায় হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে বা হানায় অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বন দপ্তরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, মৃতদের মধ্যে প্রায় ৩৪ শতাংশ ব্যক্তি ঘটনার সময় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিলেন। এই তথ্য উঠে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে বন দপ্তর। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন গ্রামগুলোতে এখন রাত হলেই হাতির আতঙ্ক তৈরি হচ্ছে। প্রায়ই দেখা যাচ্ছে, ছোট•ছোট দলে ভাগ হয়ে হাতির দল ঢুকে পড়ছে গ্রামে। তারপরেই খাবারের খোঁজে বাড়িতে বাড়িতে হামলা দিচ্ছে দাঁতালের দল। আর তাতে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে।

    বনকর্তারা জানাচ্ছেন, অনেকেই সন্ধের পর চোলাই বা দেশি মদ খেয়ে বাড়ির বাইরে বসে থাকেন। আবার কেউ কেউ নিজের বাড়িতেই ওই ধরনের পানীয় মজুত রাখেন। এগুলি হাতিদের আকৃষ্ট করতে পারে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। বন বিভাগ সূত্রের খবর, পরিস্থিতি সামাল দিতে এখন মোট ২৮টি বিশেষ টহলদারি দল নামানো হয়েছে। তাছাড়া, মাইকে করে প্রচার করে বারবার সচেতন করে বলা হচ্ছে, ‘হাতি ঢুকে পড়লেই ঘরের মধ্যে থাকুন। বন বিভাগকে খবর দিন। বাইরে বেরোবেন না।’

     
  • Link to this news (আজকাল)