আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিধান ভবনে ভাঙচুর-কাণ্ডে এখনও অধরা বিজেপি নেতা রাকেশ সিং। অভিযুক্ত নেতাকে খুঁজে না পেয়ে অবশেষে তাঁর ছেলে শিভম সিংকে গ্রেপ্তার করল কলকাতা পুলিশ। ফলে রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা চরমে উঠেছে। দুই দিন আগে বিহারের একটি সভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর মাকে নিয়ে অশ্রাব্য মন্তব্যকে কেন্দ্র করে অশান্তি শুরু হয়। তার আঁচ এসে পড়ে কলকাতার মৌলালিতে অবস্থিত প্রদেশ কংগ্রেস অফিসে। অভিযোগ, রাকেশ সিংয়ের নেতৃত্বেই ওই দিন বিজেপির একটি দল অফিসে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। সনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীর ছবিতে কালি ছিটিয়ে দেওয়া হয়, পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হয়।
ঘটনার পর থেকেই কলকাতা পুলিশ রাকেশ সিংকে খুঁজছে। গোপন সূত্রে জানা যায়, তিনি একটি গাড়ি নিয়ে ঘোরাফেরা করছেন। তদন্তে উঠে আসে, যে গাড়িটি বিধান ভবন ভাঙচুরে ব্যবহৃত হয়েছিল, সেটি রাকেশ সিংয়ের ছেলে শিভম সিংয়ের নামে রেজিস্টার্ড। ৩১ আগস্ট রাতে এন্টালি থানার পুলিশ রাকেশ সিংয়ের বাড়িতে তল্লাশি চালায়। সেখানে রাকেশ সিংকে না পেলেও তাঁর ছেলে শিভমের কাছে গাড়ির চাবি পাওয়া যায়। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তিনি বাবার অবস্থান নিয়ে কোনও তথ্য দিতে পারেননি। উল্টে, তাঁর বক্তব্যে একাধিক অসঙ্গতি ধরা পড়ে।
আজ সকালে তদন্তে অসহযোগিতা ও হামলায় ব্যবহৃত গাড়ির মালিকানা শিভমের নামে থাকার কারণে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে এই গ্রেপ্তার নিয়ে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে। শিভমের বোন সিমরন সিংহ কলকাতা পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর দাবি, পুলিশ তাঁর ভাইকে আইনসম্মতভাবে গ্রেপ্তার করেনি, বরং “অপহরণ” করেছে। বিধান ভবন ভাঙচুর ও রাকেশ সিংয়ের পলায়ন ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপি গণতান্ত্রিক প্রতিবাদকে স্তব্ধ করতে হিংসার পথ বেছে নিয়েছে। অন্যদিকে বিজেপির দাবি, প্রশাসন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাঁদের কর্মীদের টার্গেট করছে।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, রাকেশ সিংকে গ্রেপ্তারের জন্য তল্লাশি জারি রয়েছে। একাধিক ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও যোগাযোগের সূত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে শিবমের গ্রেপ্তার তদন্তে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এখন দেখার, বিজেপি নেতাকে ধরতে কত দ্রুত পদক্ষেপ নিতে পারে পুলিশ।