জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: নাবালিকাকে যৌন নির্যাতন ও খুনের ঘটনায় ঘটনায় প্রেমিককে দোষী সাব্যস্ত করল মালদা জেলা আদালত। ১৩ জনের সাক্ষী ভিত্তিতে প্রেমিকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১ লক্ষ টাকা জরিমানার নির্দেশ দিলেন মালদা জেলা আদালতের পকসো কোর্টের বিচারক রাজীব সাহা।
দুই বছর ধরে বিচারের পর আজ রায় ঘোষনা হয়। আইনজীবী অসিত বরণ বোস জানান, নাবালিকাকে যৌন নির্যাতন করে খুনের ঘটনায় বাবা ও ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছিল মালদা থানায়।
ওই নাবালিকার সঙ্গে শামিম আখতার নামে এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। প্রেমের সম্পর্ক থেকে তাদের মধ্যে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক হয়। ঘটনার রাতে সামিম ওই নাবালিকাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। যৌনাঙ্গে নির্যাতন চালায়। পরে ওই নাবালিকাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে সামিম। প্রমাণ লোপাটে মৃতদেহে ইট বেঁধে পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছিল।
এই ঘটনায় ১৩ জনের সাক্ষীর ভিত্তিতে আজ মালদা জেলা আদালত শামিম আখতারকে দোষী সাব্যস্ত করে। তবে তার বাবাকে বেকসুর খালাস করে আদালত। পকসো কোর্টের বিচারক রাজীব সাহা দোষীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১ লক্ষ টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন। ওই টাকা নাবালিকার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য চার দিন নিখোঁজ থাকার পর পুরাতন মালদায় যাত্রাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের হালনা মহম্মদপুরে একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী আসরেফা খাতুনের (১৬)অর্ধনগ্ন পচা গলা দেহ উদ্ধার হয় স্থানীয় পুকুর থেকে ২১জুন ২০২২ সালে। পুলিশের তদন্তে ছাত্রীর প্রেমিক শামিম আখতারের খোঁজ পাওয়া যায়। শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। তাতেই উদ্ধার হয় খুনের মোটিভ।
মূলতঃ মৃত ছাত্রীর সঙ্গে একাধিক যুবকের সাথে সম্পর্ক ছিল- এমন সন্দেহের কারণেই প্রতিশোধ নিতেই খুন করেছে অভিযুক্ত যুবক। পুলিসের রিপোর্টে এমন তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। ছাত্রী কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না। গ্রামের একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে রক্তের দাগ দেখতে পান জনৈক কিছু মানুষ। এরপরই গ্রামজুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুরাতন মালদা থানার পুলিস।
তারপর ওই পরিত্যক্ত বাড়ি এবং বাড়িসংলগ্ন পুকুরে দিনভর অভিযান চালিয়ে অবশেষে নিখোঁজ ওই ছাত্রীর দেহ উদ্ধার করে। পাওয়া যায় ছাত্রীর অন্তর্বাস। পাশাপাশি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে কয়েকটি প্রেমের নিবেদন করা চিঠিও পাওয়া যায়- যা দেখে পুলিসের সন্দেহ হয়। শুরু হয় তদন্ত।
ছাত্রীর মাকে জেরা করে জানতে পারে আসরেফাকে ১৮ জুন ২০২২ তাদের প্রতিবেশী যুবক শামিম আখতার ফোন করে ডাকে। তাদের সঙ্গে যুবকের পরিবারের ভালো যোগাযোগ ছিল। ফলে সন্দেহ হয় নি। রাতে বাড়ি না ফেরায় সন্দেহ হয়। এরপর পুলিসের দ্বারস্থ হয় ছাত্রীর পরিবার। ছাত্রীর মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত যুবক এবং তার বাবা ইসলাম আলিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তবে এই রায়ে খুশি নয় মৃত ছাত্রীর পরিবার।