অয়ন ঘোষাল ও সন্দীপ প্রামাণিক: বুক-কাঁপানো আবহাওয়াখবর (Evening Weather Bulletin)। আর ২-৩ ঘন্টার মধ্যে ধেয়ে আসছে প্রবল বৃষ্টি! মাঝারি বজ্রপাত ও ঝোড়ো হাওয়া-সহ ভিজবে কলকাতা-হাওড়া। জানা যাচ্ছে, আজ, সোমবার রাত ১১ টা থেকে আগামীকাল, মঙ্গলসকাল পর্যন্ত বজ্রপাত (Thunderstorm) বাড়তে পারে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য, উত্তর ২৪ পরগনা, নদীয়া, কলকাতা, হাওড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, মুর্শিদাবাদ এবং পূর্ব বর্ধমান। আজ, সোমবার রাত ১১ টায় দক্ষিণবঙ্গের উপর সমান্তরাল ভাবে তৈরি হতে পারে স্কোয়াল ফ্রন্ট (squall front)। বিপরীতধর্মী দুই তাপমাত্রার জেরে ফ্রন্টজেনেসিস প্রক্রিয়ায় এই স্কোয়াল ফ্রন্ট তৈরি হতে পারে। বঙ্গোপসাগরের পূবালি উষ্ণ হওয়ার সঙ্গে দেশের পশ্চিম দিক থেকে আসা অপেক্ষাকৃত শীতল হাওয়ার সংঘাতে তৈরি হতে পারে বজ্রগর্ভ শক্তিশালী উল্লম্ব মেঘ অর্থাৎ কিউমুলোনিম্বাস (intense thunderstorms with damaging winds)।
উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর মায়ানমার সংলগ্ন এলাকায় একটি ঘূর্ণবর্ত রয়েছে,আগামী ২৪ ঘণ্টায় এটি নিম্নচাপে রূপান্তর হবে। এর প্রভাবে আগামী ৪৮ ঘণ্টা আমাদের দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত জেলাতেই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা। তার সঙ্গে ভারি থেকে অতি ভারী বৃষ্টি সম্ভাবনা দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও ভারী বৃষ্টি হবে উত্তর ২৪ পরগনা হাওড়া হুগলি দুই মেদিনীপুর জেলা এবং কলকাতা।
আগামীকালও দুই মেদিনীপুর ঝাড়গ্রাম দক্ষিণ ২৪ পরগনা দু এক জায়গায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এই বৃষ্টির সম্ভাবনা আজ এবং আগামীকাল পরশুদিন সকালে হালকা বৃষ্টি চলবে। তারপর থেকে বৃষ্টি পরিমাণ কমবে। এছাড়া বাদবাকি সমস্ত জেলাতেই বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। মৎস্যজীবীদের আজ থেকে আগামী তিনদিন সমুদ্র যেতে মানা করা হয়েছে।উত্তরবঙ্গে আগামী ২৪ ঘন্টায় বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রপাতসহ বৃষ্টি হবে মালদা জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার।
বাদবাকি জেলায় হালকা বৃষ্টি, শুধু আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়িতে দু এক জায়গায় ভারি বৃষ্টি হতে পারে। আগামী তিনদিন এরকম আবহাওয়া থাকবে,তিন দিন পরে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমবে। কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের আগামী দুদিন হালকা বৃষ্টি হবে।আজকের কলকাতা তাপমাত্রা ৩৪-এ আশেপাশে আগামীকাল তাপমাত্রা কমে ৩০ এর আশেপাশে নামবে।
স্কোয়াল ফ্রন্ট, উল্লম্ব মেঘ এবং দামিনী অ্যাপ
আজ, সোমবার রাত ১১ টায় দক্ষিণবঙ্গের উপর সমান্তরাল ভাবে তৈরি হতে পারে স্কোয়াল ফ্রন্ট। বিপরীতধর্মী দুই তাপমাত্রার জেরে ফ্রন্টজেনেসিস প্রক্রিয়ায় এই স্কোয়াল ফ্রন্ট তৈরি হতে পারে। বঙ্গোপসাগরের পূবালি উষ্ণ হওয়ার সঙ্গে দেশের পশ্চিম দিক থেকে আসা অপেক্ষাকৃত শীতল হাওয়ার সংঘাতে তৈরি হতে পারে বজ্রগর্ভ শক্তিশালী উল্লম্ব মেঘ অর্থাৎ কিউমুলোনিম্বাস। যে মেঘ থেকে আজ রাত ১১ টা থেকে আগামীকাল সকাল ৯টা পর্যন্ত বজ্রপাতের পরিমাণ এবং ঘনত্ব বাড়তে পারে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য, উত্তর ২৪ পরগনা, নদীয়া, কলকাতা, হাওড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, মুর্শিদাবাদ এবং পূর্ব বর্ধমান। বজ্রপাতের সময় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশিকা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। খোলা জায়গায়, বিদ্যুতের পোস্টের নীচে, ফাঁকা কৃষিজমিতে সেসময় কাজ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দামিনী অ্যাপ ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যে-অ্যাপের মাধ্যমে কোনো একটি এলাকায় পরবর্তী ২ ঘণ্টায় সম্ভাব্য বজ্রপাতের আগাম অ্যালার্ট পাওয়া যাবে। স্কোয়াল ফ্রন্টের জেরে ওড়িশায় চলে যাওয়া মৌসুমী অক্ষরেখা আজ ফের বাংলায় ফিরতে পারে। ফলে গতকাল রবিবার এবং আজ সোমবার সারাদিন বৃষ্টি তেমন না হলেও আজ রাতের পর বৃষ্টি বাড়তে পারে দক্ষিণবঙ্গে।
মঙ্গলে অমঙ্গল
রবি ও সোমবার সারাদিন কার্যত বৃষ্টিবিহীন থাকার পর আগামীকাল মঙ্গলবার বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হবে। বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে। কলকাতা হাওড়া হুগলি উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা নদীয়া পূর্ব বর্ধমান পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি। সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝোড়ো বাতাস হইবে।
হাওয়াবদল
বুধবারেও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকবে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। বেশি সম্ভাবনা পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর ঝাড়গ্রাম এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাতে। সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝড়ো বাতাস বইবে। বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কমবে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা মাঝারি বৃষ্টি বিক্ষিপ্তভাবে দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায়। বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি থাকায় আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি থাকবে।
উত্তরবঙ্গে
উত্তরবঙ্গে আজ সোমবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কমবে। দুই একটি জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বিক্ষিপ্তভাবে হালকা বৃষ্টি চলবে। দার্জিলিং কালিম্পং আলিপুরদুয়ার কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি জেলায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি। এবং বৃষ্টি না হলেও আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি থাকবে। মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ আরও কমবে উত্তরে। উপরের পাঁচ জেলার দু এক জায়গায় বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি। শুক্রবার পর্যন্ত এই পরিস্থিতি থাকবে। তবে জলীয় বাষ্প বেশি থাকায় আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি হতে পারে।
কলকাতায়
কলকাতায় সারাদিন কার্যত খটখটে শুকনো আর্দ্র আবহাওয়া। রাতের দিকে বৃষ্টির পূর্বাভাস। সঙ্গে বজ্রপাতের সতর্কতা। আগামীকাল থেকে বৃষ্টি বাড়বে কলকাতায়। তার আগে, আজ সারাদিন সকাল থেকে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তিই বহাল। বেলা যত বাড়বে, অস্বস্তি তত বাড়বে। মূলত পরিষ্কার আকাশ, কখনো আংশিক মেঘলা আকাশ। রাতের দিকে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা।