একরত্তি পুত্রসন্তান খুন করে আত্মঘাতী মা! ঘনীভূত রহস্য
প্রতিদিন | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: ঘরের ভিতর উদ্ধার হল মা এবং সাড়ে তিন বছরের ছেলের দেহ। একই সিলিং ফ্যানের সঙ্গে মা ও ছেলেকে ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলতে দেখা যায়। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়গ্রামের বেলিয়াবেড়া এলাকায়। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। শিশুকে ‘খুন’ করে মা আত্মঘাতী হয়েছেন? সেই প্রশ্ন উঠেছে।
বেলিয়াবেড়া থানার তপসিয়া অঞ্চলের পাইকআম্বী গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন বছর ২৫-এর শিবানী দেহুরী। স্বামী মৃত্যুঞ্জয় দেহুরী অনলাইন প্রোডাক্ট ডেলিভারির কাজ করেন। একই বাড়িতে থাকেন মৃত্যুঞ্জয়ের ছোট ভাই, তাঁর স্ত্রী ও বাবা-মা। কাজে গিয়েছিলেন মৃত্যুঞ্জয় ও তাঁর ভাই। শিবানীর শ্বশুর, শ্বাশুড়ি জমিতে চাষের কাজে গিয়েছিলেন। বাড়িতে ছিলেন ছোট বউ। অন্যান্য দিনের মতো এদিনও শিবানী বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ তাঁর সন্তানকে নিয়ে নিজেদের ঘরের দরজা বন্ধ করেছিলেন। ছেলেকে ঘরে ঘুম পাড়ানো হয় বলে কেউ কোনও সন্দেহ করেননি।
কিন্তু দুপুর হয়ে গেলেও ওই ঘরের দরজা খোলা হয়নি বলে খবর। বাইরে থেকে পরিবারের অন্যান্যরা কাজ সেরে বাড়ি ফিরে এসে ওই ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ পান! অনেক ডাকাডাকি করেও ঘরের ভিতর থেকে কোনও সাড়া মেলেনি! এরপরই ওই ঘরের দরজা ভেঙে ফেলা হয়। দেখা যায় ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় মা ও একরত্তি ঝুলছে। পুলিশে খবর দেওয়া হয়। বেলিয়াবেড়া থানার পুলিশ দুটি দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। যদিও চিকিৎসকরা তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। ওই পরিবারের কোনও আর্থিক সমস্যা ছিল না বলেই খবর। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কি কোনও বিষয়ে মনোমালিন্য চলছিল? সেই প্রশ্ন উঠেছে।
ওই একরত্তি দুরন্ত ছিল। ঘুমনোর সময় প্রতিদিন সে দুষ্টুমি করত বলে পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে। তাহলে কি এদিন দুষ্টুমির সময় মা কোনওভাবে ছেলেকে আঘাত করে! সেই আঘাতে শিশুর মৃত্যু হয়? এরপর ছেলেকে নিয়েই মা গলায় ফাঁস লাগিয়ে ‘আত্মঘাতী’ হন? একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। ঝাড়গ্রামের ডিএসপি(সদর) সমীর অধিকারী বলেন, “একই জায়গা থেকে মা ও সন্তানের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। কী কারণে এই ঘটনা ঘটেছে পুলিশ তদন্ত করছে।” ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।