• পরীক্ষায় বসতে পারবে না তালিকার বাইরে থাকা অযোগ্যরাও, এসএসসিকে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
    বর্তমান | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: প্রকাশিত তালিকার বাইরেও যদি অযোগ্যদের নাম থাকে, তাহলে তারা যেন কোনওভাবেই নতুন নিয়োগ পরীক্ষায় বসতে না পারে। সোমবার পশ্চিমঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনকে তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। শনিবার অযোগ্যদের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে কমিশন। নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশের  ১৮০৬ জন অযোগ্য সহকারী শিক্ষকের নাম প্রকাশ হয়েছে। কিন্তু এই তালিকা যথেষ্ট নয় বলেই সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন জনৈক উত্তম মজুমদার সহ কয়েকজন। একইসঙ্গে যোগ্যতামানকে চ্যালেঞ্জ করেও মামলা দায়ের হয়েছে। 

    সোমবার বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার বেঞ্চে তার শুনানি ছিল। আবেদনকারীদের অভিযোগ, স্কুল সার্ভিস কমিশন যে তালিকা প্রকাশ করেছে, তা সম্পূর্ণ নয়। অনেক অযোগ্যর নাম কমিশন আড়াল করছে। সিবিআই আরও অনেক বেশি নাম দিয়েছিল। আবেদনকারীর আইনজীবী এম আর সামশেদ বলেন, ২০১৬ সালের নিয়োগের সময় যে যোগ্যতামান ছিল, এখন তা পরিবর্তন করা হয়েছে। 

    কমিশনের আইনজীবী প্রীতিকা দ্বিবেদীর মন্তব্য, সিবিআই অনেক বেশি নাম দিয়েছিল ঠিকই। তবে আমরা সেইসব নামই প্রকাশ করেছি, যারা নিযুক্ত হয়েছিল। প্যানেলে নাম থাকলেই নিযুক্ত হয়নি। ফলে কোনও অযোগ্যকেই পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হচ্ছে না। বিচারপতি সঞ্জয় কুমার তখনই বলেন, একজনও অযোগ্য যেন পরীক্ষায় বসতে না পারে। সেটা কিন্তু নিশ্চিত করতে হবে। আগামী ২৮ অক্টোবর এই মামলার পরবর্তী শুনানি। তার আগে কমিশনকে জবাবদিহির নোটিসও দেওয়া হল। বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দিল, যোগ্যতামান নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট কিছু বলবে না। এটা কমিশন যা ঠিক করবে, সেটাই হবে। 

    উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টে এসএসসি’র প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-অশিক্ষকের চাকরিহারার মূল মামলায় সব মিলিয়ে ৬ হাজার ২৭৬ জনকে বেআইনি নিয়োগ করা হয়েছিল বলেই জানিয়েছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। এও বলা হয়েছিল, প্যানেলের বাইরে ১,৪৯৬ জন নিয়োগ হয়েছে। র‌্যাঙ্ক জাম্প করিয়ে চাকরি দেওয়া হয়েছিল ৯২৬ জনকে। ৪,০৯১ জনের ওএমআর মিসম্যাচ হয়েছে। স্কুল সার্ভিস কমিশনের সুপারিশ ছাড়াই পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ ২,৩৫৫ জনকে নিয়োগপত্র দিয়েছিল। 

    এসএসসির তরফে বলা হয়, মোট ১৪০০ জন দাগি পুনরায় পরীক্ষা দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু ঘুরপথে চাকরি পাওয়ার অভিযোগে তাদের অ্যাডমিটও বাতিল করেছে এসএসসি। এরপরই প্রায় ৩৫০ চিহ্নিত দাগি শিক্ষক হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। অভিযোগ, ডিভিশন বেঞ্চ তাদের দাগি হিসাবে চিহ্নিত করেনি। কিন্তু এসএসসি দাগি তালিকায় রেখেছে। বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যর সিঙ্গল বেঞ্চে বিষয়টি উত্থাপন করেন আইনজীবী অনিন্দ্য লাহিড়ী। আজ মঙ্গলবার থেকে মামলার শুনানি শুরু। এদিন আবার চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ এসএসসি ভবন অভিযান করেন। তা নিয়ে উত্তপ্ত হয় করুণাময়ী ও সংলগ্ন চত্ত্বর। প্রার্থীদের অনেকের দাবি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও দু’টি পরীক্ষায় আবেদন করতে দেয়নি এসএসসি।
  • Link to this news (বর্তমান)