ধাপায় চিকিৎসা-বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট গড়বে পুরসভা
বর্তমান | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বিভিন্না হাসপাতাল, নার্সিংহোম মিলিয়ে প্রতিদিন শহরে টন টন চিকিৎসা-বর্জ্য তৈরি হয়। সেগুলির প্রক্রিয়াকরণের পর পুনর্ব্যবহারযোগ্য কোনও সামগ্রী তৈরি করা যেতে পারে। বর্তমানে শহরের বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে শুরু করে প্যাথলজিক্যাল ল্যাব বা মেডিক্যাল সেন্টারে যে চিকিৎসা বর্জ্য জড়ো হয়, সেগুলি সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াকরণের দায়িত্বে রয়েছে একটি বেসরকারি সংস্থা। পুরসভার হিসেব, শহরে বিভিন্ন হাসপাতাল মিলিয়ে অন্তত ৩৫ থেকে ৪০ হাজার শয্যা রয়েছে। এর বাইরেও বহু হেলথ সেন্টার, চোখ থেকে শুরু করে দাঁতের হাসপাতাল, প্যাথোলজি ল্যাব রয়েছে (নন-বেড)। সেখানেও প্রতিদিন অনেক বর্জ্য জমা হয়। এসব জায়গা থেকেও প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ চিকিৎসা-বর্জ্য সংগ্রহ করার সুযোগ আছে। এই অবস্থায় পুরসভা নিজেই চিকিৎসা বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণের জন্য নতুন ইউনিট তৈরি করতে চায়। ধাপার কাছে জমিও চিহ্নিত কার হয়ে গিয়েছে বলে সূত্রের খবর।
পুরসভার জঞ্জাল সাফাই এবং কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধাপার কাছে মহিষতলায় প্রায় তিন একর জমি রয়েছে। সেই জমিতে প্রক্রিয়াকরণ ইউনিটটি তৈরি করবে পুরসভা। জমিটি পুরসভার হলেও সেটি রাজ্য সরকারি একটি সংস্থাকে লিজে দেওয়া ছিল। পুজোর পর জমিটি পুরসভার হাতে আসবে। তারপরেই সেখানে চিকিৎসা-বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট তৈরি হবে পিপিপি মডেলে। ইতিমধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য পরামর্শদাতা সংস্থা নিয়োগ করা হয়েছে। জমি হাতে পেলে ইউনিট তৈরির জন্য টেন্ডার ডাকা হবে। কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, আপাতত হাসপাতালের ৩০ হাজার শয্যা (বেড) এবং বিভিন্ন হেলথ সেন্টার, প্যাথ ল্যাবের বর্জ্য আরও ১০ হাজার শয্যার সমান ধরে নিয়ে এগনো হবে। বিভাগীয় এক অফিসার বলেন, ‘হাসপাতালের ক্ষেত্রে এক-একটি বেড পিছু প্রতিদিন কত চিকিৎসা-বর্জ্য তৈরি হচ্ছে, সেই হিসেবে সাফাইয়ের টাকা নেওয়া হবে। কিন্তু যেসব মেডিক্যাল সেন্টারে বেড বা শয্যা নেই, অর্থাৎ প্যাথ ল্যাবের মতো জায়গা থেকে বেড হিসেবে টাকা নেওয়া সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে প্রতিদিন কত লোককে তারা পরিষেবা দিচ্ছে, সেই অনুসারে টাকা ঠিক করা হবে।’ জানা গিয়েছে, এখন যে বেসরকারি সংস্থা গোটা প্রক্রিয়া পরিচালনা করছে, তারা বেডপিছু আট টাকা করে ধার্য করে। তাদের মাধ্যমে চিকিৎসা-বর্জ্য সাফ করাতে মোটা টাকা গুনতে হয় সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলিকে। পুরসভা জানাচ্ছে, এই বিপুল পরিমাণ টাকা যাতে বেসরকারি হাতে পুরোটা না গিয়ে সরকারের হাতেও আসে, সেটাই লক্ষ্য। এর ফলে পুর-আয়ের নয়া উৎস তৈরি হবে।