• শূন্য বা এক জন শিক্ষক রাজ্যের ২২১৫ প্রাথমিকে
    আনন্দবাজার | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • রাজ্যের প্রাথমিক স্কুলগুলি শিক্ষকের অভাবে ধুঁকছে নিয়মিত নিয়োগ না হওয়ায়। এমন অভিযোগ উঠছে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই। এ বার বিকাশ ভবনেরই একটি পরিসংখ্যান থেকে প্রাথমিক স্কুলগুলির বেহাল দশা আরও স্পষ্ট হল। বিকাশ ভবন একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, এক জনও শিক্ষক নেই অথবা এক জন মাত্র শিক্ষক রয়েছেন, এমন প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা রাজ্যে ২২১৫টি। বিকাশ ভবন প্রাথমিক শিক্ষা দফতরকে নির্দেশ দিয়েছে, এই স্কুলগুলিতে শিক্ষকের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনে একই জেলার ভিতরে শিক্ষকদের বদলি করে প্রাথমিক স্কুলের হাল ফেরাতে হবে।

    শিক্ষার অধিকার আইন, ২০০৯ অনুযায়ী ৬০ জন পড়ুয়ার জন্য কমপক্ষে দু’জন শিক্ষক রাখতেই হবে। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি যে কতটা আলাদা, তা ওই পরিসংখ্যান থেকেই দেখা যাচ্ছে। সব থেকে খারাপ অবস্থা পুরুলিয়ায়। সেখানে ৩০৬৭টি প্রাথমিক স্কুলের মধ্যে শিক্ষক নেই বা এক জন শিক্ষক আছেন, এমন স্কুলের সংখ্যা ৩৭২টি। বাঁকুড়া জেলায় ৩৫৬৮টি প্রাথমিক স্কুলের মধ্যে এমন স্কুলের সংখ্যা ৩৭১টি। পশ্চিম মেদিনীপুরে ৩৪৮৭টি প্রাথমিক স্কুলের ২২৭টি স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যা এক বা শূন্য। কলকাতার ১১৩৮টি স্কুলের মধ্যে এমন স্কুলের সংখ্যা ১৮টি। সব মিলিয়ে ২২টি জেলায় ৪৯৩৬৮টি প্রাথমিক স্কুলের মধ্যে এই রকম স্কুল রয়েছে ২২১৫টি।

    অনেকেই মনে করছেন, প্রাথমিকে টেটের মাধ্যমে নিয়মিত নিয়োগ না হওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রাথমিক টেট হয়ে ফল বেরিয়েছে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে। তার পর থেকে ইন্টারভিউ নিয়ে নিয়োগের জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছেন টেট পাশ চাকরিপ্রার্থীরা। ২০২৩ সালে ফের প্রাথমিক টেট হয়েছে। তার ফল এখনও বেরোয়নি। ২০২৪ এবং ২০২৫ সালে আর টেট হয়নি। ২০২২ সালের টেট-উত্তীর্ণ এক প্রার্থী বিদেশ গাজি বলেন, ‘‘অবিলম্বে ৫০ হাজার শূন্যপদে নিয়োগের দাবি করে আন্দোলন করছি গত দুই বছর ধরে। নিয়োগ যদি ঠিক সময়ে হত, এই অবস্থা হত না।’’ শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ-র সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, ‘‘দ্রুত নিয়োগই এর সমাধান।’’ বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হান্ডার মতে, ‘‘নিয়োগ তো হয়ইনি, আবার যে টুকু শিক্ষক বদলি হয়েছে, সেখানেও অনিয়ম হয়েছে।’’ এই পরিসংখ্যান তাঁদের নজরে এসেছে বলে জানালেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল। তিনি বলেন, ‘‘কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।’’

    শিক্ষকহীন বা এক জন শিক্ষক কত স্কুলে
    পুরুলিয়া- ৩৭২
    বাঁকুড়া- ৩৭১
    পশ্চিম মেদিনীপুর- ২২৭
    পূর্ব বর্ধমান- ১৭৮
    বীরভূম- ১৫৬
    (যে পাঁচ জেলায় এমন স্কুল সবচেয়ে বেশি)
  • Link to this news (আনন্দবাজার)