দু’টি মৌলবাদী সংগঠনের চাপে নতি স্বীকার করে রাজ্য উর্দু অ্যাকাডেমি একটি অনুষ্ঠান স্থগিত রাখায় রাজ্যে নানা মহলে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। 'হিন্দি ছবিতে উর্দু'-শীর্ষক অনুষ্ঠানটি ৩১ অগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর হওয়ার কথা ছিল। কবি, গীতিকার জাভেদ আখতার, চিত্রপরিচালক মুজফফর আলি তাতে আমন্ত্রিত ছিলেন। জাভেদ আখতার নিজেকে নাস্তিক পরিচয় দেন বলে তাঁর উপস্থিতিতে বাদ সাধেন কিছু মৌলবাদী সংগঠনের প্রতিনিধি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উর্দু অ্যাকাডেমির চেয়ারপার্সন। অ্যাকাডেমির সচিবের একটি বিবৃতিতে ‘অনিবার্য কারণে অনুষ্ঠান স্থগিত’ রাখার কথা বলা হয়েছে।
ঘটনাটি এপিডিআর-এর তরফে রাজ্যের গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শের বিরোধী বলে মন্তব্য করা হয়। কলকাতার উর্দুপ্রেমীদের একটি মঞ্চ থেকেও তীব্র প্রতিবাদের সুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লেখা হয়। মুদার পাথেরিয়া, তাইয়াব আহমেদ, স্পন্দন রায় বিশ্বাস, মালবিকা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ লেখেন,“মৌলবাদী স্বার্থের সঙ্গে উর্দু অ্যাকাডেমির কিসের সম্পর্ক? এই ধরনের সিদ্ধান্তের জন্যই কেউ কেউধর্মনিরপেক্ষতাকে তোষণ বলে অপব্যাখ্যা করেন!” সম্প্রীতির প্রসারের‘মঞ্চ নো ইয়র নেবার’-এর আহ্বায়কসাবির আহমেদ বলেন, “ভারতবৈচিত্রের দেশ। বিভিন্ন মত শুনতেহবে। এই ধরনের সিদ্ধান্তের সঙ্গে মুসলিম স্বার্থরক্ষার সম্পর্ক নেই। এতেমেরুকরণের রাজনীতিরই পথ খুলবে।”
কোনও একটি ভিডিয়োয় এক ব্যক্তিকে জাভেদ আখতারের সঙ্গে সলমন রুশদি, তসলিমা নাসরিনদের তুলনা করতে দেখা গিয়েছে। তা খুব একটা সাড়াও ফেলেনি। এর জেরে অনুষ্ঠান স্থগিত রাখার পরিকল্পনার মধ্যে অনেকেই ‘অতি সতর্কতা’ দেখছেন। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকাতথা উর্দু অ্যাকাডেমির সদস্যা গাজ়ালাইয়াসমিন শুধু বলেন, “উর্দু বিচ্ছিন্ন কট্টরপন্থীদের ভাষা নয়। হিন্দু, মুসলিমসবার আদরের ভারতীয় ভাষা। আমিআশাবাদী, কলকাতায় এই অনুষ্ঠান আমরা পরে ঠিক করব।” যে বিষয়নিয়ে জাভেদের বক্তৃতা বন্ধ হয়েছে,সেই বিষয় নিয়েই তাঁকে দিল্লিতে বক্তৃতার আমন্ত্রণ জানাল এসএফআই-সহ বাম ছাত্র সংগঠনগুলো।