• রাস্তা থেকে এবার জল সোজা ঢুকে পড়ল বাড়ির ভিতর, বন্ধ স্কুল-কলেজ-অফিস, রাজধানীতে বিপর্যস্ত জনজীবন...
    আজকাল | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ক্রমশ বন্যার আশঙ্কা তীব্র হচ্ছে দিল্লিতে। সেই আশঙ্কা আরও স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হয়েছে মঙ্গলবার। কারণ, ইতিমধ্যেই যমুনা নদী যমুনা বাজার এলাকায় জল ঢুকতে শুরু করেছে আশপাশের আবাসিক এলাকায়। এর ফলে আগামী সতর্কতা অবলম্বন করে বহু মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ত্রাণ শিবিরে। মঙ্গলবার সকাল ৬টা নাগাদ যমুনার জলস্তর রেকর্ড করা হয় ২০৫.৬৮ মিটার—যা বিপদসীমার ২০৫.৩৩ মিটারের উপরে। কর্মকর্তারা সতর্ক করে জানিয়েছেন, বিকেল ৫টার মধ্যে জলস্তর বেড়ে প্রায় ২০৬.৫০ মিটারে পৌঁছাতে পারে। জানা গিয়েছে, হরিয়ানার হাতনিকুণ্ড ব্যারেজ থেকে প্রতি ঘণ্টায় বিপুল পরিমাণ জল ছাড়া হচ্ছে, ফলে রাজধানীর অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকাগুলিতে বন্যার ঝুঁকি আরও বাড়ছে। বিপজ্জনক এলাকাগুলিতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

    শাহদরা জেলার জেলা শাসক জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে লোহা পুলে যানবাহন ও সাধারণ মানুষের চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। এদিকে, আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, মঙ্গলবার দিল্লির আকাশ মেঘলা থাকবে এবং মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকতে পারে ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি, আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকতে পারে প্রায় ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যদিকে, সোমবার গুরগাঁওয়ে টানা ভারী বৃষ্টিতে জল জমে কার্যত অচল হয়ে যায় শহরের জীবনযাত্রা। দুপুর ৩টা থেকে সন্ধে ৭টার মধ্যে গুরগাঁওয়ে ১০০ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়। এর পরেই প্রশাসন ২ সেপ্টেম্বরের জন্য ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনায় অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করে।

    হিরো হোন্ডা চক, পটেল নগর এবং সিগনেচার ব্রিজ-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় জল জমে যায়। দ্বারকা এক্সপ্রেসওয়ের সার্ভিস লেনে ব্যাপক জল জমে ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় রাস্তাটি বন্ধ রাখতে হয়। দিল্লির দ্বারকাকে কেরকি দৌলা ও গুরগাঁওয়ের একাধিক সেক্টরের সঙ্গে যুক্ত করা এই এক্সপ্রেসওয়েতে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ (DDMA) গুরগাঁওয়ের সব স্কুলকে অনলাইনে ক্লাস চালানোর নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি বেসরকারি অফিসগুলোকে কর্মীদের মঙ্গলবার বাড়ি থেকে কাজ করার অনুমতি দিতে বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, দিল্লির এই জলযন্ত্রণা নতুন কিছু নয়। সম্প্রতি, আচমকাই নয়ডায় ভরদুপুরে ভারী বৃষ্টি হয়। যান চলাচলে প্রবল ব্যাঘাত ঘটে। এই আচমকা বৃষ্টিতে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা চরম বিপর্যস্ত হয়েছে।

    দুপুর নাগাদ শুরু হওয়া এই ভারী বৃষ্টিতে রাস্তাঘাটে জল জমে যায় এবং যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। অনেক যাত্রীকে বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়া থেকে বাঁচতে আশ্রয়ের খোঁজ করতে দেখা যায়। ভারতের আবহাওয়া দপ্তর (IMD) পূর্বাভাসে জানিয়েছিল, দিল্লি-এনসিআর সংলগ্ন আশেপাশের বহু অঞ্চলে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত, বজ্রপাত ও বিদ্যুৎ চমকানোর সম্ভাবনা রয়েছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী দিল্লি-এনসিআরের পাশাপাশি হরিয়ানার কাইথাল, নারওয়ানা, রাজাউন্ড, আসান্ধ, সাফিদোন, বারওয়ালা, জিন্দ, পানিপত, গোহানা এবং উত্তরপ্রদেশের মুজাফফরনগর, বাগপত, খেকড়া অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাও ছিল। হরিয়ানার কুরুক্ষেত্র, কর্নাল, গন্নৌর, সোনিপত, রোহতক, খারখোদা, চারখি দাদরি, ঝাজ্জর, ফরুখনগর, নারনৌল এবং উত্তরপ্রদেশের দেওবন্দ, খতাউলি, বারাউট, খুরজা, হাতরাস, সদরাবাদ ও রাজস্থানের ঝুনঝুনু, নগর, লক্ষ্মণগড় ও রাজগড় অঞ্চলেও ভারী বৃষ্টি দেখা গিয়েছে।
  • Link to this news (আজকাল)