'ওঁর গাড়িতে ছ' ঘণ্টা ছিলাম', মিনিট খানেকের রাস্তা পেরোতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা, প্রাণ ওষ্ঠাগত এই শহরে, আপনি কি এখন সেখানেই?
আজকাল | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: দেশের একাধিক শহরের অবস্থা কমবেশি এক, বিশেষকরে টানা বৃষ্টি-বাদল হলেই। টানা বর্ষণে একাধিক শহরে জলযন্ত্রণা, রাস্তায় জ্যাম। যদিও বেঙ্গালুরুর মতো শহরে, জল না জমলেও, বৃষ্টি না হলেও জ্যাম ঘণ্টার পর ঘণ্টা। তবে এবার গুরগাঁও যে ঘটনার সাক্ষী রইল, তাতে আঁতকে উঠছে দেশ। সোমবার সমাজমাধ্যমে একে একে ছড়িয়ে পড়ে গুরুগ্রামের যানজটের ছবি। জেলা কর্মকর্তাদের মতে, গুরুগাঁও বিকেল ৩টা থেকে সন্ধে ৭টার মধ্যে ১০০ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যার ফলে শহরের কিছু অংশে সাত কিলোমিটার পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
হিরো হোন্ডা চক, প্যাটেল নগর এবং সিগনেচার ব্রিজ সহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রুট তীব্রভাবে জলমগ্ন হয়ে পড়ে। জলাবদ্ধতা বৃদ্ধির ফলে দ্বারকা এক্সপ্রেসওয়ের সার্ভিস লেনও বন্ধ করে দেওয়া হয়। গুরুগ্রামের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ নিশ্চিত করে এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, 'আজ, বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে, গুরুগাঁওয়ে ১০০ মিলিমিটারেরও বেশি ভারী বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ ২ সেপ্টেম্বর ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের জন্য কমলা সতর্কতা জারি করেছে।'
জলযন্ত্রণার স্মগেই গুরুগাঁও সোমবার সাক্ষী থেকেছে যানজটযন্ত্রণার। সোশ্যাল মিডিয়ায় বহু মানুষ যানজটে নাজেহাল হওয়ার ছবি, অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। একজন সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, মিনিটখানেকের পথ পেরোতে তাঁর সময় লেগেছে ছ' ঘণ্টা। তিনি অ্যাপ ক্যাব বুক করেছিলেন গন্তব্যে যাওয়ার জন্য। ওই ক্যাব চালককে তিনি দন্যবাদ জানিয়ে পোস্ট করেছেন, কারণ, ওই ছ' ঘণ্টা সময় ক্যাব চালক একটুও বিরক্ত না হয়ে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করেছেন এবং তাঁকে গন্তব্যে পৌঁছে দিয়েছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লিখেছেন, 'হাই র্যাপিডোর বাইক অ্যাপ, আমি আপনার ড্রাইভার পার্টনার মিঃ সুরজ মৌর্যকে হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। গুরগাঁও ট্র্যাফিকের কারণে তিনি আমার সঙ্গে ছ' ঘণ্টার বেশি সময় ছিলেন। কিন্তু বিন্দুমাত্র অভিযোগ করেননি।' আরও লিখেছেন, বিনয়ের সঙ্গে চালক তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন এবং বিনয়ের সঙ্গে জানিয়েছেন, তিনি কিছু অতিরিক্ত টাকা দিতে চাইলে, তা তাঁর মর্জি। যতটুকু তিনি দিতে চান।
সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, ভারী বৃষ্টিপাত এবং আরও বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসের কারণে গুরগাঁও কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার স্কুল এবং কর্পোরেট অফিসগুলিকে অনলাইনে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে। গুরগাঁঅ-এর জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ নোটিস জারি করে জানিয়েছে, আবহাওয়া দপ্তরের সতর্কতার কথা। একইসঙ্গে জানানো হয়েছে, 'উপরোক্ত পূর্বাভাসের পরিপ্রেক্ষিতে, জেলার সমস্ত কর্পোরেট অফিস এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিকে তাদের কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।' মঙ্গলবার সেখানকার সমস্ত স্কুলকে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার কথা জানিয়েছে প্রশাসন।