• পুজোর মুখে বইয়ের বাজার, নন্দন চত্বরে ভিড় বাড়ছে শারদ বই পার্বণে...
    আজকাল | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: পুজোর আগে হাতে আর বেশি দিন নেই। ক্যালেন্ডার থেকে কাশফুল সে কথাই জানান দিচ্ছে। আর পুজো আসছে মানেই জোরকদমে চলছে পুজোর বাজার। তবে সেই বাজার শুধু জামাকাপড় কিংবা প্রসাধনী দ্রব্যেই আটকে থাকবে কেন? 

    পুজোর আগে বসেছে মেলা। মেলায় যাচ্ছেন বহু মানুষ। ব্যাগ ভর্তি করে সেখান থেকে ফিরছেন তাঁরা হাসিমুখে। কেউ বাস ধরছেন বেহালার, কেউ ফিরবেন বারাসতে। পুজোর আগে বাজার, তবে জামা-কাপড়-জুতোর বাজারের কথা হচ্ছে না।  কথা হচ্ছে অন্য এক বাজারের। গত কয়েকবছরে তা একেবারে জুড়ে গিয়েছে পুজোর বাজারের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিকভাবে। কথা হচ্ছে বই বাজারের। গত কয়েকবছরের মতোই এবারেও, শনিবার রবীন্দ্রসদন-নন্দন-বাংলা আকাদেমি প্রাঙ্গনে পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ড আয়োজন করেছে শারদ বই পার্বণের।  কারণ, বই-ই পারে, মানুষকে আলোর দিশা দেখাতে। সেই ভাবনা নিয়েই মুলত এই আয়োজন গিল্ডের।

    শনিবার, ৩০ আগস্ট শারদ বই পার্বণের উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাহিত্যিক প্রচেত গুপ্ত,  রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী, আকাদেমি সভাপতি ব্রাত্য বসু, পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক  সম্পাদক ত্রিদিব কুমার চট্টোপাধ্যায় এবং সভাপতি সুধাংশুশেখর দে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে  উপস্থিত ছিলেন আরও বহু বিশিষ্ট জন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দে'জ পাবলিশিং-এর শুভঙ্কর দে। শারদ বই পার্বণের ইতিহাস জানতে গেলে জানা যায়, আগে এই বই বাজার আয়োজিত হত বিশ্ব বই দিবস উপলক্ষে, পরে জনগণের এবং সময়ের দাবিতে তা হয়ে থাকে পুজোর প্রাক্কালে। এই মেলায় রয়েছে ৭০টি প্রকাশনার, মোট ৬৩টি স্টল। 

     কী বিশেষত্ব এই বই বাজারের? এই বইমেলা, বই পার্বণ যাই বলুন না কেন, বইপোকাদের কাছে যা বইবাজার নামেই পরিচিত। তার কারণও আছে। কারণ এই বই পার্বণ সাধারণ বইমেলার মতো নয়। বইয়ের বিষয় দেখেও দাম দেখে হতাশ হয়ে ফিরে যান না ক্রেতা। বইয়ের ওপর থাকে বিশেষ এবং বিশাল ছাড় । এখানেপ্রকাশক এবং পুস্তকবিক্রেতাদের ছাড়ের বিষয়ে কোনও নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয় না। ২০ থেকে ৮০, তারা নিজেদের মতো করে ঠিক করে নিতে পারেন, বই বাজারে কত শতাংশ ছাড় দেবেন বইয়ের ক্ষেত্রে। এতে খুশি ক্রেতারা। বিক্রি ভাল হওয়ায়, খুশি বিক্রেতারাও। 

    নন্দন চত্বরে, পুজোর মুখে বই পার্বণে এসে খুশি হয়েছিলেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেছিলেন, 'নন্দন চত্বর এখনকার বাঙালি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হয়ে উঠেছে । সেখানে বইমেলা আনন্দের। তাঁর মতে, বই বিকিকিনির হিসেব বড় কথা নয়, মানুষ বইমুখী হচ্ছে, তাই বড় আনন্দের। ব্রাত্য বসু বলেছিলেন এক বহু আলোচিত বিষয়ে। এই যে সাম্প্রতিক সময়ে মাঝে মাঝেই শোনা যায় গেল গেল রব। কী নিয়ে? না ইদানিং কালে টিভি-ফেসবুক-নেটপ্যাকের যুগে বই পাঠক নাকি কমে যাচ্ছে। ব্রাত্য বসু যদিও সাফ জানান, তিনি তেমনটা মোটেই মনে করেন না। তিনি মনে করেন, বইয়ের চাহিদা বাড়ছে দিনদিন। 

    গত দু' দিনের হিসেব কী? তথ্য, গত দু' দিন, অর্থাৎ শনি-রবি, দারুণ ভিড় হয়েছে বই পার্বণে। মানুষ এসেছেন, বই দেখেছেন। পুজোর আগে, বইয়ের বাজার করে ফিরে গিয়েছেন। সপ্তাহের শুরুর দিনে, অর্থাৎ মঙ্গলবারেও ভিড় জমেছে। 

     ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন দুপুর ২টো থেকে রাত্রি ৮টা পর্যন্ত চলবে এই বই পার্বণ।

     
  • Link to this news (আজকাল)