দু’হাজারের বেশি শিক্ষকহীন প্রাথমিক স্কুল, বদলির নির্দেশ
দৈনিক স্টেটসম্যান | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিয়মিত স্কুল খুলছে। পড়ুয়ারা আসছে। অথচ বাচ্চাদের পড়ানোর জন্য স্কুলে কোনও শিক্ষকই নেই! কোথাও এলাকার শুভানুধ্যায়ীরা নিজস্ব উদ্যোগে স্কুল চালাচ্ছেন, কোথাও প্রায় বন্ধের মুখে স্কুলগুলো। এমনই করুণ অবস্থায় রয়েছে জেলাগুলোর আংশিক প্রাথমিক স্কুলগুলো। আবার কোনও স্কুলে মাত্র ১ জন শিক্ষককে দিয়ে পঠনপাঠন চালাতে বাধ্য হচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। রাজ্যে এই ধরনের শিক্ষক শূণ্য বা একজন সর্বস্ব প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা নেহাত কম নয়।
এই সংখ্যার নিরিখে সব থেকে এগিয়ে রয়েছে পুরুলিয়া। সেখানে ৩৭২টি এমন প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাঁকুড়া। সেখানে ৩৭১টি এই ধরনের শিক্ষকহীন স্কুল রয়েছে। তৃতীয় স্থানে রয়েছে পূর্ব বর্ধমান। সেখানে এই ধরনের স্কুল রয়েছে ১৭৮টি। চতুর্থ স্থানে রয়েছে বীরভূম। সেখানে এই ধরনের স্কুলের সংখ্যা ১৫৬। পূর্ব মেদিনীপুরে ১৩০, ঝাড়গ্রামে ১২০, নদিয়ায় ১০০টি, কলকাতায় ১৮টি এরকম স্কুল রয়েছে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী গোটা রাজ্যে ৪৯, ৩৬৮টি প্রাথমিক স্কুলের মধ্যে এই ধরনের শিক্ষক শূণ্য বা ১ জন শিক্ষক সর্বস্ব স্কুল রয়েছে মোট ২,২১৫টি। এতসংখ্যক স্কুলগুলো শিক্ষক শূণ্য থাকায় চিন্তায় পড়েছে শিক্ষা দপ্তর। তাই এবার এই ধরনের শিক্ষক শূণ্য স্কুলগুলোতে বদলির মাধ্যমে শিক্ষক পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে স্কুল শিক্ষা দপ্তর।
সম্প্রতি স্কুল শিক্ষা দপ্তরের তরফে এই পরিসংখ্যান ২২টি জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদগুলিকে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি সংসদগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, বর্তমান এই পরিস্থিতিতে অভ্যন্তরীণভাবে অফলাইনের মাধ্যমে জেলার শিক্ষকদেরই, শিক্ষকশূণ্য স্কুলগুলোতে বদলি করতে হবে।
শিক্ষা দপ্তরের তরফে পাঠানো এই চিঠিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে আরও জানানো হয়েছে যে, শিক্ষার অধিকার আইন মোতাবেক প্রতিটি প্রাথমিক স্কুলে ৬০ জন পড়ুয়া প্রতি ২ জন করে শিক্ষক থাকা বাঞ্ছনীয়। কিন্তু এতগুলো স্কুল, শিক্ষক ছাড়া চলছে কীভাবে! তা জেনে বিস্মিত স্কুল শিক্ষা দপ্তর। সম্প্রতি বাংলার শিক্ষা পোর্টালে পাওয়া তথ্য থেকে শিক্ষা দপ্তর বিপুল সংখ্যক এই ধরনের শিক্ষকহীন স্কুলের খোঁজ পেয়েছে। তাই সেই শূণ্য পদগুলো বদলির মাধ্যমে পূরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, ‘দু’জন শিক্ষক নয়, প্রাথমিকে শ্রেণি অনুযায়ী শিক্ষক এবং গ্রুপ সি–গ্রুপ ডি কর্মীও নিয়োগ করতে হবে। সরকারি স্কুলগুলোকে পুনরায় বাঁচিয়ে তোলা হোক। তবেই অভিভাবকরা স্কুলে তাঁদের সন্তানদের আবার ফিরিয়ে আনবেন।’