‘সঙ্গত কারণেই আটকানো হয় সেনার ট্রাক’! দাবির সমর্থনে এ বার সিসিটিভি ফুটেজও প্রকাশ করল কলকাতা পুলিশ
আনন্দবাজার | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
মহাকরণের সামনে ‘বেপরোয়া ভাবে’ মোড় নেওয়ায় কলকাতা পুলিশ সেনার ট্রাকটিকে আটকায়। আর তা নিয়ে শুরু হয়েছে টানাপড়েন। সেনার দাবি, আদৌ বিপজ্জনক ভাবে গাড়ি চালানো হয়নি। এই নিয়ে যখন টানাপড়েন অব্যাহত, কলকাতা পুলিশের তরফে ঘটনার সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করা হল।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, সেনার গাড়িটি আগে ছিল। তার ঠিক পিছনে আসছিল পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মার গাড়ি। তিনি লালবাজারের দিকে যাচ্ছিলেন। ভিডিয়ো প্রকাশ করে পুলিশের দাবি, ক্রসিংয়ের মুখে সেনার গাড়িটি হঠাৎ ‘বিপজ্জনক’ ভাবে মোড় নেয়। তার জেরে পুলিশ কমিশনারের গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়তে পারত। পুলিশের আরও দাবি, ওই ক্রসিংয়ে ‘নো রাইট টার্ন’ বোর্ড লাগানো ছিল। তা সত্ত্বেও ডান দিকে মোড় নেওয়ার চেষ্টা করে সেনার গাড়ি। তখনই গাড়িটিকে আটকান কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ। তার পর খবর দেওয়া হেয়ার স্ট্রিট থানায়।
‘বিপজ্জনক’ ভাবে গাড়ি চালানো নিয়ে যখন সেনা এবং কলকাতা পুলিশের মধ্যে টানাপড়েন শুরু হয়, সেই ঘটনার সত্যতা প্রমাণে ওই সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করে কলকাতা পুলিশ বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করল যে, সঙ্গত কারণেই সেনার গাড়িকে আটকানো হয়েছে। ঘটনা প্রসঙ্গে লালবাজারের তরফে জানানো হয়েছে, ফোর্ট উইলিয়াম থেকে পাসপোর্ট অফিসের দিকে যাওয়ার পথে সেনার ট্রাকটি বিপজ্জনক ভাবে বাঁক নেয়। ট্র্যাফিক আইন লঙ্ঘন করার অভিযোগে ট্রাকটিকে আটকানো হয়। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেন ওই ট্রাকে থাকা এক সেনাকর্মী। সিগন্যাল খোলা থাকায় বাঁক নেন বলে দাবি করেছেন তিনি। একই সঙ্গে দাবি করেন, তাঁদের গাড়ির পিছনে পুলিশ কমিশনারের গাড়ি আসছে, সেটি জানতেন না। এই নিয়ে যখন দাবি, পাল্টা দাবি তোলা হচ্ছিল, ঘটনাস্থলে আসেন পুলিশ আধিকারিকেরা। এ ছাড়াও খবর পেয়ে হাজির হন সেনার ইস্টার্ন কমান্ডের দফতর ফোর্ট উইলিয়াম (বিজয় দুর্গ)-এর কর্তারাও। আপাতত ট্রাকটিকে হেয়ার স্ট্রিট থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে দু’পক্ষের আধিকারিকেরা কথাবার্তা বলছেন।
প্রসঙ্গত, সোমবারই ধর্মতলায় গান্ধীমূর্তির পাদদেশে তৃণমূলের প্রতিবাদ কর্মসূচির মঞ্চ খুলে দিয়েছিল সেনা। মঞ্চ খোলার খবর পেয়েই সোজা গান্ধীমূর্তির সামনে পৌঁছে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভাঙা মঞ্চ থেকে তিনি এই ঘটনার প্রতিবাদ করেন। তবে সরাসরি সেনাকে আক্রমণ করেননি মমতা। বরং সেনার কথা বলার সময় তাঁর ভাষা এবং সুর ছিল অনেকটাই সংযত। তিনি বলেন, ‘‘আমার আর্মির বিরুদ্ধে কোনও ক্ষোভ নেই। কারণ, আমরা সেনাকে নিয়ে গর্বিত।’’ মমতার মতে, সেনার এই মঞ্চ খোলার নেপথ্যে রয়েছে বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ‘‘সেনাকে যখন বিজেপির কথায় চলতে হয়, তখন দেশটা কোথায় যায়, তা নিয়ে সন্দেহ জাগে!” ঘটনাচক্রে, সেই ঘটনার পরের দিনই সেনার ট্রাক আটকানো নিয়ে টানাপড়েন চলল লালবাজার এবং ফোর্ট উইলিয়ামের মধ্যে।